জামিনে থাকা ছাত্রকে গ্রেফতারের ঘটনায় পটুয়াখালীর ওসিসহ দুজনের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ

প্রকাশিত: ৮:৪৩ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৩, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক:
উচ্চ আদালত থেকে জামিনে থাকার পরও কলেজশিক্ষার্থী মো. আশরাফুল হাওলাদারকে গ্রেফতারের ঘটনায় পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান ও সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণ হলে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরও নির্দেশ দেওয়া হয়। আজ রোববার (১৩ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ স্ব-প্রণোদিত হয়ে এই আদেশ দেন। আদালতে আজ কলেজশিক্ষার্থীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আলী আহসান মোল্লা। আর দুই পুলিশ সদস্যের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আবু রেজা মো. কাইয়ুম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী। বিষয়টি নিউজ পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
এর আগে ৩০ জুলাই জামিনে থাকা কলেজশিক্ষার্থী মো. আশরাফুল হাওলাদারকে গ্রেফতারের ঘটনায় ওসি মনিরুজ্জামান ও এএসআই মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আদেশ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন হাইকোর্ট। তারই ধারাবাহিকতায় আজ এই আদেশ দেওয়া হয়।


এছাড়া জামিনে থাকার পরও কলেজশিক্ষার্থীকে গ্রেফতারের ঘটনায় পটুয়াখালী সদর থানার ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে তলব করেছিলেন হাইকোর্ট। স্ব-শরীরে তাদের উপস্থিত হয়ে আদালতে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। তারা উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন। এরপর তাদের পক্ষে-বিপক্ষে শুনানি নিয়ে আদেশ দেন আদালত।
এদিকে জামিনে থাকা সত্তে¡ও গ্রেফতার করে বাংলাদেশের ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করায় বিবাদীদের বিরুদ্ধে কেন আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা এক রুলে জানতে চেয়েছেন আদালত।
প্রসঙ্গত, গত ২০ মে একটি জাতীয় দৈনিকে ‘জামিন নেওয়া শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এতে বলা হয়, পটুয়াখালী সদর থানা পুলিশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেওয়া কলেজশিক্ষার্থী মো. আশরাফুল হাওলাদারকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে। ১৮ মে রাতে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করার পর আদালতে পাঠানো হয় ওই শিক্ষার্থীকে। এসময় পুলিশকে হাইকোর্টের জামিনের কপি দেখালেও তা আমলে নেয়নি বলে দাবি শিক্ষার্থীর পরিবারের।
পরিবারের অভিযোগ, আটকের পর পুলিশ মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে। তা দিতে না পারায় পুলিশি ক্ষমতার বলে তাকে আদালতে পাঠানো হয়। যদিও হাইকোর্টের জামিননামা দেখে ১৯ মে দুপুরে আসামিকে ছেড়ে দেন পটুয়াখালী চিফ জুডিসিয়াল আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মো. জামাল হোসেন।
আশরাফুল হাওলাদার পটুয়াখালী সদর উপজেলার মরিচবুনিয়া ইউনিয়নের বাজারঘোনা গ্রামের আব্দুল লতিফ হাওলাদারে ছেলে। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে জেলা আইনজীবী সমিতি।
আশরাফুলের চাচা রাজা মিয়া বলেন, সদর থানা পুলিশের এএসআই মিজানুর রহমান তার ভাতিজাকে আটক করেন। তার পরিবার ওই রাতেই সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আলী আহসান মোল্লার সই করা প্রত্যয়নপত্র ও জামিননামার অনলাইন কপি দেখায় পুলিশকে।
এ প্রসঙ্গে এএসআই মিজানুর রহমান বলেন, আমি ওয়ারেন্ট অনুযায়ী আসামিকে গ্রেফতার করেছি। এরপর আশরাফুলের পরিবার ওসির সঙ্গে কথা বলেছে। ওসি কাগজপত্র দেখে সিদ্ধান্ত নেন।