নিজস্ব প্রতিবেদক:
মেট্রোরেলের সার্বিক নিরাপত্তা বিধানে ‘ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট’ বা এমআরটি পুলিশ গঠন চ‚ড়ান্ত করে সরকার। এমআরটি পুলিশের প্রথম ডিআইজি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন শিল্পাঞ্চল পুলিশের উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক জিহাদুল কবির। এছাড়া এমআরটি পুলিশের প্রথম পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন পুলিশ সুপার মো. শফিকুল ইসলাম। আজ মঙ্গলবার (১৩ জুন) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে এক প্রজ্ঞাপনে এ দায়িত্ব প্রদান করা হয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে প্রজ্ঞাপনে সই করেন উপসচিব সিরাজাম মুনিরা।
পুলিশের এ ইউনিট গঠনে একজন উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শকের (ডিআইজি) নেতৃত্বে ২৩১ জনের জনবল চ‚ড়ান্ত করা হয়। গত মাসের শেষ দিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ পুলিশ-৩ শাখা থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। পুলিশের নতুন এ ইউনিটের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য রয়েছেন একজন উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি)।
গত মাসে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, এমআরটি মেট্রোরেল সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তিনটি ক্যাডার পদ ও ২২৮টি নন-ক্যাডার পদসহ মোট ২৩১টি পদ সৃজন এবং ১৫টি যানবাহন টিওঅ্যান্ডইভুক্তকরণ হয়েছে।
কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক কাজের জন্য পদ :
একজন ডিআইজি, একজন পুলিশ সুপার, দুজন পরিদর্শক, একজন ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র), একজন ইন্সপেক্টর (সশস্ত্র), দুজন এসআই (নিরস্ত্র), দুজন এসআই (সশস্ত্র), তিনজন এএসআই (নিরস্ত্র), চারজন এএসআই (সশস্ত্র), পাঁচজন নায়েক, ১০ জন কনস্টেবল, একজন কম্পিউটার অপারেটর, একজন হিসাবরক্ষক, একজন উচ্চমান সহকারী ও অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক দুজন।
এমআরটি লাইন-৬ এর জন্য পদ:
একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ছয়জন ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র), দুজন এসআই (নিরস্ত্র), ৩৪ জন এএসআই (নিরস্ত্র) ও ১৫৩ জন কনস্টেবল।
যানবাহনের বিবরণ: একটি জিপ, চারটি পিকআপ ও ১০টি মোটরসাইকেল।
জানা যায়, সার্বিক দিক বিবেচনায় মেট্রোরেল ও যাত্রীদের নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভ‚মিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মেট্রোরেলের জন্যও আলাদা ইউনিট গঠনের প্রস্তাব ছিল শুরু থেকেই। রেলওয়ে পুলিশ বাংলাদেশ পুলিশের একটি অন্যতম প্রাচীন বিশেষায়িত ইউনিট। এটি ১৮৮১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। রেলওয়ে পুলিশ তার অধিক্ষেত্রে জেলা পুলিশের মতোই আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ দমন, তদন্ত ও অন্য পুলিশিং কার্যক্রম পরিচালনা করে। এমআরটি পুলিশও অনুরূপভাবে মেট্রোরেলের সার্বিক নিরাপত্তা, যাত্রীদের নিরাপত্তার পাশাপাশি নিয়ম-শৃঙ্খলা ও অপরাধ দমনে কাজ করবে।
উদ্বোধনের আগে ও উদ্বোধনপরবর্তী সময়ে এমআরটি পুলিশ গঠনের আগ পর্যন্ত নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশের রিজার্ভ ফোর্স ও থানা পুলিশ নিরাপত্তা দিয়ে আসছিল।
গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেট্রোরেল উদ্বোধন করেন। প্রথম দিনই চালু হয় উত্তরা উত্তর ও আগারগাঁও স্টেশন দুটি। উদ্বোধনের দিন উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত পথে মেট্রোরেলে ভ্রমণ করেন প্রধানমন্ত্রী। পরদিন ২৯ ডিসেম্বর থেকে মেট্রোরেল সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।
এরপর একে একে আরও দুটি স্টেশন চালু হয়। এর মধ্যে গত ২৫ জানুয়ারি পল্লবী স্টেশন ও গত ১৮ ফেব্রæয়ারি চালু হয় উত্তরা স্টেশন। এরপর পঞ্চম স্টেশন হিসেবে চালু হয় মিরপুর-১০ নম্বর স্টেশন। গত ৩১ মার্চ আগারগাঁও থেকে উত্তরা স্টেশনের সবগুলো খুলে দেওয়া হয়।