জেনুইন স্ট্রাইকার ছাড়াই মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১০:৪১ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ৬, ২০২৫


ক্রীড়া ডেস্ক:

 

শিলংয়ে এশিয়ান কাপে ভারতের মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে খেলতে নেমে বাংলাদেশ দলে এক জন জেনুইন স্ট্রাইকার খুঁজে পাওয়া যায়নি। উইঙ্গার, মিডফিল্ডারদের নিয়ে ভারতের বিপক্ষে লড়াই করতে নেমে জয়ের খোঁজ পায়নি। উইঙ্গার এবং মিডফিল্ডরারা ভারতীয় জালে বল পাঠানোর সহজ সুযোগ পেয়েও ব্যর্থ হয়েছেন। এক জন জেনুইন স্ট্রাইকার থাকলে হয়তো গোলের দেখা পেত বাংলাদেশ। প্রিমিয়ার লিগে আল আমিন ১০ ম্যাচ খেলে ৭ গোল করেছেন। তিনি স্ট্রাইকার, তারপরও আল আমিনকে মাঠে নামাননি কোচ হ্যাভিয়ের কাবরেরা। শেখ মোরসালিনকে নামিয়ে কোনো ফায়দা আসেনি। তারপরও মোরসালিনকে মাঠে রেখে মূল্যবান সময় নষ্ট হয়েছে। নিষ্প্রভ মোরসালিন গত সাফে সেমিফাইনালে কুয়েতের বিপক্ষে ছোট বক্সে দাঁড়িয়ে গোল করতে পারেননি। খেলার প্রথম দিকেই সুযোগ পেয়ে মোরসালিনের ব্যর্থতায় বঞ্চিত হয়েছিল বাংলাদেশ। সাফের সেমিফাইনাল থেকে বাংলাদেশের বিদায় হয়। সাফ থেকে ফিরে কোচ হ্যাভিয়ের নিজের বেতন বাড়িয়ে নিয়েছিলেন।

২০২২ সালে কোচ হ্যাভিয়ের কাবরেরা বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। আজ পর্যন্ত জাতীয় দলে এক জন জেনুইন স্ট্রাইকার বের করতে পারলেন না কোচ হ্যাভিয়ের। ভারতের বিপক্ষে এক জন ফিক্সড স্ট্রাইকার থাকলে জনি, হৃদয়, রাকিবদের নিয়ে ফোকাস করতে হতো না। স্ট্রাইকার আল আমিনকে মাঠে নামালে সুযোগ নিতে পারতেন তিনি। যেহেতু স্ট্রাইকার নেই তাহলে ট্যাকটিক্যাল প্ল্যানিংয়ে পরিবর্তন করতে পারতেন কোচ। সেক্ষেত্রে রাকিবকে স্ট্রাইকার হিসেবেও কাজে লাগানো যেত।

পুরো ম্যাচে হামজা চৌধুরী যেভাবে খেলেছেন, তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে একই ধারায় সেই খেলাটা খেলতে পারেননি বাংলাদেশের অন্য ফুটবলাররা। হামজা কর্নার করেছেন, মাঝমাঠে খেলেছেন। নিশ্চিত বিপদ দেখে ভারতীয় ফুটবলারের পা থেকে বল কেড়ে নিতে দৌড়ে ছুটে গেছেন এবং বল কেড়ে নিয়ে বিপদ বাঁচিয়েছেন। আবার ছুটে এসে রক্ষণে সামাল দিয়েছেন। সেই ম্যাচে বাংলাদেশ যেমন সুযোগ পেয়েছিল, তেমনি ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে ভারতও কম সুযোগ পায়নি। হামজা যেভাবে ব্লক করেছেন তা ছিল দর্শনীয়।

বাংলাদেশের কোচরা শিংলয়ের ম্যাচ দেখে হতাশ হয়েছেন। কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে সৌদি আরবে গিয়েছিল বাংলাদেশ দল। হ্যাভিয়ের কাবরেরা সৌদি গিয়ে প্রায় ১০ দিন থাকলেন। সেখান থেকে ঢাকায় এসে ভারতের শিলং গেলেন। পাঁচ দিন আগে গিয়ে কোনো সুযোগ-সুবিধা পাননি বলে ম্যানেজার আমের খান জানিয়েছিলেন। ক্লোজড ডোর অনুশীলন করতে গিয়ে বাংলাদেশ দলের মাঠ সমস্যায় পড়েছিল। প্রশ্ন উঠেছে ‘ভারত কেন আপনাকে (বাংলাদেশ) আতিথেয়তা দেবে। এটা কেন আপনি আশা করবেন। তার চেয়ে ঢাকায় চার দিন নিবিড় অনুশীলন করে শিলং গেলে কী এমন ক্ষতি হতো। অনেকের মতে অপরিপক্ক জ্ঞানের কাজ করেছেন কোচ। ঢাকায় থেকে কেন ১০ ঘণ্টা ভ্রমণ করে শিলং যেতে হবে। যেখানে আপনি সিলেট তামাবিল থেকে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে শিলং পৌঁছে যাচ্ছেন সেখানে লম্বা পথের ভ্রমণ কী দরকার ছিল। ভালো খেলতে হলে এসব ভুল পরিকল্পনা এড়িয়ে যেতে হবে।’

শেষ কথা হচ্ছে, বাংলাদেশ জাতীয় দল এক জন জেনুইন স্ট্রাইকার সংকটে ভুগছে। নতুন নতুন বিদেশি কোচ আসছেন। কিন্তু তারা স্ট্রাইকার খুঁজে বের করার চেষ্টা করেননি। হ্যাভিয়ের কাবরেরাও সেই একই পথে। লিগের খেলা দেখে দেশীয় স্ট্রাইকার খুঁজে বের করার আগ্রহ নেই। তিনি লিগে বেছে বেছে বড় ক্লাবের খেলা দেখেন।

বড় ক্লাবের বাইরেও যে আরো ক্লাব আছে, আরো উঠতি স্ট্রাইকার রয়েছে। তাদের দেখার সময় পান না-এসব আক্ষেপের কথা শোনা গেছে দেশীয় স্ট্রাইকারদের কণ্ঠে। ভারতের বিপক্ষে এবার পুলিশ ফুটবল দলের স্ট্রাইকার আল আমিনকে দলে নিলেও খেলানোর জায়গা পাননি কোচ। মোরসালিনকে রাখতে হয়েছিল ম্যাচের প্রায় শেষ পর্যন্ত।