টাকা পাঠানোর অনুমতি না দিতে গভর্নরকে আইনি নোটিশ

প্রকাশিত: ১১:৪৮ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ৮, ২০২৫

সেলিনা আক্তার:

 

বাংলাদেশের একটি বহুজাতিক ঔষধ কোম্পানিক শেয়ার হস্তান্তরে অর্থ পাচারের অভিযোগ তোলা হয়েছে। এ কাজে সহায়তা করছে একটি দেশীয় কোম্পানি।

মূলত নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে শেয়ারের দাম বেশি দেখিয়ে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক কোম্পানি নোভার্টিস বাংলাদেশ লিমিটেড এ অর্থ পাচার করছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। নোটিশে কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রির অর্থ বিদেশে প্রেরণের অনুমতি না দেওয়ার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বাংলাদেশ ব্যাংককে বলা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এবং বাংলাদেশ বার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক নির্বাহী সদস্য ইকতান্দার হোসাইন হাওলাদার এ আইনি নোটিশ দেন।

আইনি নোটিশে বলা হয়, নোভার্টিস বাংলাদেশ লিমিটেডের ৬০ শতাংশ বা ৯ লাখ ৭৫ হাজার ৩৬টি শেয়ার রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেডের কাছে ২৩০ কোটি টাকায় বিক্রয়ের প্রস্তাব চূড়ান্তভাবে অনুমোদন করেছে। যদিও নোভার্টিসের শেয়ারগুলো গত ৫ আগস্টের আগে তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের মালিকানাধীন বেক্সিমকো ফার্মার কাছে বিক্রি করার কথা ছিল। কিন্তু ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর শেয়ারগুলো আওয়ামী লীগের আরেক নেতা নাসের শাহরিয়ার জাহেদী মহুলের প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করে।

আইনি নোটিশে আরো বলা হয়, মহুল ঝিনাইদহ আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এবং ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত বিতর্কিত একতরফা জাতীয় নির্বাচনের একজন প্রার্থী হিসেবে শেখ হাসিনার আশীর্বাদ পেয়ে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। উল্লেখ্য, উক্ত শেয়ারের মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে বাজার মূল্য বিবেচনায় না নিয়ে গোপন চুক্তির মাধ্যমে অতিরিক্ত বিক্রয় মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এর ফলে অতিরিক্ত মূল্য বৈদেশিক মুদ্রা হিসেবে বাংলাদেশ থেকে দেশের বাইরে চলে যাবে—যা মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালার অধীনে অপরাধ বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।

আইনি নোটিশে আরো বলা হয়, আলোচ্য চুক্তির আলোকে ইতিমধ্যে অনাবাসি পরিচালকদের দায়দেনা বিষয়ে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক এবং স্টান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক গুলশান শাখা গ্রহণ করেছে এবং অনাপত্তি দেওয়া হয়েছে। এসব শেয়ার হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় শেয়ারের প্রকৃত বাজার মূল্য অপেক্ষা অতিরিক্ত মূল্য নির্ধারণ করায় বাংলাদেশ ব্যাংক যদি তা অনুমোদন করে তাহলে প্রকৃত মূল্যেও বেশি অর্থ বিদেশে চলে যাবে—যা মানিলন্ডারিং হিসেবে বিবেচিত হবে। এজন্য শেয়ারগুলোর বিক্রয় ও হস্তান্তর প্রক্রিয়া যথাযথভাবে যাচাই করা প্রয়োজন। নোটিশে নোভার্টিসের শেয়ার হস্তান্তর এবং বিক্রয়ের অর্থ অনুমোদন না করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। আইনি নোটিশটি বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ছাড়াও ডেপুটি গভর্নর (বৈদেশিক মুদ্রা বিনিয়োগ বিভাগ, বিনিয়োগ ও শেয়ার হস্তান্তর শাখা) এবং বৈদেশিক মুদ্রা বিনিয়োগ বিভাগকে দেওয়া হয়েছে।