টিকা গ্রহণকারী ৯৮ শতাংশের এন্টিবডির উপস্থিতি রয়েছে : বিএসএমএমইউ উপাচার্য
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, কোভিড-১৯ এর টিকা গ্রহীতাদের ৯৮ শতাংশের শরীরে এন্টিবডির উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, যারা পূর্বেই কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাদের শরীরে তুলনামূলক বেশি এন্টিবডি রয়েছে।
আজ সোমবার শহীদ ডা. মিল্টন হলে ‘হেমোটোলজিক্যাল প্যারামিটারস এন্ড এন্টিবডি টাটরে আফটার ভ্যাকসিন্যাশন অ্যাগনেইষ্ট এসএআরএস-কোভ-২’ শীর্ষক গবেষণার প্রধান গবেষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘কোনো ধরনের আতঙ্ক নয়। অবশ্যই করোনাভাইরাসের টিকা নিতে হবে। টিকা নিলে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুঝুঁকি একেবারেই কম।’
উপাচার্য তার বক্তব্যে সকল মানুষের টিকাদান নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী দেশেই টিকা উৎপাদনের উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে অবশ্যই টিকা নিতে হবে ।
তিনি আরও জানান, আজকের এই গবেষণা থেকে বাংলাদেশে জনগণের উপর টিকা প্রয়োগের পর কার্যকর এন্টিবডি তৈরির প্রমাণ পাওয়া গেছে। তবে সময়ের সাথে এন্টিবডির উপস্থিতির পরিবর্তন এবং পাশাপাশি টিকাদান কর্মসূচিতে নতুন অন্তর্ভুক্ত অন্যান্য টিকার এন্টিবডি তৈরির কার্যক্ষমতা পর্যালোচনার জন্য আরও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
প্রথম ডোজ নেওয়ার তিন চার মাস পরে দ্বিতীয় ডোজ নিলে কি পরিমাণ এন্টিবডি তৈরি হয় সেই বিষয়েও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। কোভিড-১৯ মোকাবিলায় টিকাদান কর্মসূচিকে সার্থক করার বিকল্প নেই। পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সকল ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধির যথাযথ অনুসরণ নিশ্চিত করা অপরিহার্য। বিএসএমএমইউ সূত্র জানায়, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভাবিত ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউটের তৈরি অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা গ্রহণকারী ২০৯ জন টিকা গ্রহীতার মাঝে পরিচালিত গবেষণায় এই তথ্য পাওয়া যায়। চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত কোভিড-১৯ এর টিকা গ্রহণকারীদের উপর এই গবেষণা পরিচালিত হয়। গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে তিন-চতুর্থাংশ পুরুষ এবং অর্ধেকের বেশি স্বাস্থ্য সেবা দানের সাথে জড়িত। অংশ গ্রহণকারীদের মধ্যে ৩১ শতাংশের পূর্বে কোভিড-১৯ সংক্রমিত হবার ইতিহাস আছে। অর্ধেকেরও বেশি অংশগ্রহণকারী পূর্ব থেকেই ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হাঁপানীসহ অন্যান্য রোগে ভুগছিলেন। তবে এ ধরনের রোগের কারণে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই টিকা গ্রহণের পর এন্টিবডি তৈরিতে কোনো পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়নি। ৪২ শতাংশ অংশগ্রহণকারী টিকাগ্রহণের পরে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে সামান্য জ্বরসহ মৃদু উপসর্গের কথা জানিয়েছেন। রক্ত জমাট বাঁধা বা এরকম অন্য কোনো জটিল পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গবেষণার সময়ে পরিলক্ষিত হয়নি। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এর সাথে এন্টিবডির উপস্থিতির কোনো সম্পর্ক পাওয়া যায়নি। টিকা গ্রহণকারীদের মাঝে ৯৮ শতাংশের শরীরে এন্টিবডি এর উপস্থিতি পাওয়া গেছে। যে ২ শতাংশের এন্টিবডি পাওয়া যায়নি তারা জটিল রোগে আক্রান্ত, অনেক বয়স্ক এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক কম। এই গবেষণা কার্যক্রমটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. জাহিদ হোসেন, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, হেমাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. সালাহউদ্দীন শাহ সহ-গবেষক হিসেবে এই গবেষণা প্রকল্পের সাথে যুক্ত ছিলেন।
এদিকে ২ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ ডেঙ্গু প্রতিরোধে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন ও শিশু বিভাগে ডেঙ্গু কর্নার চালু করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসসহ সকল বিভাগ ও অফিসে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে দেশবাসীকে এগিয়ে আসতে হবে।