টিপু-প্রীতি হত্যায় আশরাফসহ ৮ জনকে আদালতে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির নির্দেশ

প্রকাশিত: ৭:১৩ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৭, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীর শাহজাহানপুরে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফরান প্রীতি হত্যা মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফ তালুকদারসহ পলাতক আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী এ নির্দেশ দেন। এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ৮ অক্টোবর দিন ধার্য করেন। এদিন পলাতক আসামিদের গ্রেফতার সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। তাদের গ্রেফতার করতে পারেনি বলে পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল করে। মামলার পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে আসামিদের আদালতে হাজির হতে আজ পত্রিকায় বিজ্ঞাপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন আদালত।
এর আগে গতকাল বুধবার (১৬ আগস্ট) পলাতক আসামি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মারুফ আহমেদ মনসুর আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। এরপর আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
পলাতক আসামিরা হলেন- আন্ডারওয়ার্ল্ডের শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান আহম্মেদ মন্টু, ফ্রিডম মানিক ওরফে জাফর, রিফাত হোসেন, সোহেল রানা, ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক নেতা আমিনুল, সামসুল হায়দার উচ্ছল ও ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান বাবুল।
গত ৫ জুন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ইয়াসিন শিকদার আদালতে ৩৩ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। এরপর গত ১৮ জুলাই একই আদালত এ মামলায় চার্জশিট গ্রহণ করেন। পলাতক থাকায় নয়জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। একইসঙ্গে জামিন বাতিল করে তিনজনকে কারাগারে পাঠানো হয়। এছাড়া আসামি রাকিবুর রহমান রাকিব ও মোরশেদুল আলম পলাশের জামিন বহাল রাখেন।

চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন- ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা মারুফ আহমেদ মনসুর, বিদেশে পলাতক আন্ডারওয়ার্ল্ডের দুই সন্ত্রাসী জিসান ও ফ্রিডম মানিক, মতিঝিল থানা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম, মতিঝিল থানা জাতীয় পার্টির নেতা জুবের আলম খান রবিন, হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক আহŸায়ক সোহেল শাহরিয়ার, ১০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি মারুফ রেজা সাগর, ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান বাবুল, ১০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক সদস্য কাইল্যা পলাশ, একই ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক নেতা আমিনুল, ছাত্রলীগের সাবেক আহŸায়ক ‘ঘাতক’ সোহেল, সুমন শিকদার মুসা, মুসার ভাগনে সৈকত, মুসার ভাতিজা শিকদার আকাশ, ইমরান হোসেন জিতু, মোল্লা শামীম, রাকিব, বিডি বাবু, ওমর ফারুক, ‘কিলার’ নাসির, রিফাত, ইশতিয়াক হোসেন জিতু, মাহবুবুর রহমান টিটু, হাফিজ, মাসুম ও রানা মোল্লা। এদের মধ্যে ২৪ জনই গ্রেফতার হয়েছেন। এ হত্যা মামলায় মুসা, শুটার আকাশ ও নাসির উদ্দিন মানিক স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।


প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ২৪ মার্চ রাত সোয়া ১০টার দিকে শাহজাহানপুরে ইসলামী ব্যাংকের পাশে বাটার শো-রুমের সামনে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপুকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এসময় গাড়ির পাশে রিকশায় থাকা সামিয়া আফরান প্রীতি (১৯) নামে এক কলেজছাত্রীও নিহত হন। এছাড়া টিপুর গাড়িচালক মুন্না গুলিবিদ্ধ হন। ওইদিন রাতেই শাহজাহানপুর থানায় নিহত টিপুর স্ত্রী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সংরক্ষিত কাউন্সিলর ফারহানা ইসলাম ডলি বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। এতে অজ্ঞাতদের আসামি করা হয়।
চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের পর ওইদিন রাতেই শাহজাহানপুর থানায় নিহত টিপুর স্ত্রী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সংরক্ষিত কাউন্সিলর ফারহানা ইসলাম ডলি বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। এতে অজ্ঞাতদের আসামি করা হয়।
মামলার এজাহারে টিপুর স্ত্রী অভিযোগ করেন, ২০২২ সালের ২৪ মার্চ রাত সোয়া ১০টার দিকে শাহজাহানপুর থানার ২০২ উত্তর শাহজাহানপুর মানামা ভবনের বাটার দোকানের সামনে পৌঁছামাত্রই অজ্ঞাতপরিচয়ের দুর্বৃত্তরা হামলা করেন। তারা জাহিদুল ইসলাম টিপুকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়ি গুলি করেন।