টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের টেকনাফে তিন দিনের ব্যবধানে দুই রোহিঙ্গাসহ ছয়জনকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার থেকে শুক্রবার (১৯-২১ জুলাই) পর্যন্ত পৃথক সময়ে তাদের অপহরণ করা হয়। তাদের উদ্ধারে দূর্গম পাহাড়ি এলাকায় পুলিশের অভিযান চলছে। অপহৃতরা হলেন- টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ৬ নম্বর ওয়ার্ড মিনাবাজারের জামাল হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ ইয়াসিন আরাফাত (২১), একই এলাকার নুর কামালের ছেলে মোহাম্মদ নুর (২২), খারাংখালির সোনা আলীর ছেলে মোহাম্মদ ইব্রাহিম (৩০) ও লেদা ২৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ব্লক-সি/৩ এর আমির হোসেনের ছেলে সৈয়দ হোসেন (৫০), শালবাগান ক্যাম্প-২৬ ব্লকঃ এ/৪ হাকিম আলীর ছেলে সাইদুল ইসলাম (১৮) ও টেকনাফ নয়াপাড়ার তাজুল ইসলামের ছেলে হাসান মিস্ত্রি (৫০)।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার (১৮ জুলাই) বিকেলে একটি মোবাইল নম্বর থেকে দিনমজুর মোহাম্মদ ইয়াসিন আরফাত ও মোহাম্মদ নুরকে কল করে কাজের কথা বলে টেকনাফ ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। অপহরণের একদিন পর তাদের বাড়িতে কল করে মুক্তিপণে মোটা অংকের চাঁদা চাওয়া হয়। একই দিন খারাংখালি এলাকার মোহাম্মদ ইব্রাহিম প্রধানমন্ত্রীর উপহারের মুজিববর্ষের ঘরের বিষয়ে নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সঙ্গে কথা বলতে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। ২৪ ঘণ্টা পার হলে ইব্রাহিমের ফোন থেকে বাড়িতে কল করে বলা হয়, তাকে মারধর ও নির্যাতন চালাচ্ছে অপহরণকারীরা। তার জন্য টাকা পাঠাতে বলেন ইব্রাহিম। আরেক অপহৃত রোহিঙ্গা সৈয়দ হোসাইন কাজের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হলে তিনিও আর ফেরেননি। কল করে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হচ্ছে বলে জানায় তার পরিবার। এর একদিন পার না হতেই শুক্রবার (২১ জুলাই) বিকেল ৪টার দিকে সাইদুল ইসলাম ও হাসান মিস্ত্রি শালবাগান ক্যাম্প-২৬ এর পাহাড় থেকে অপহরণ হন। শালবাগান ক্যাম্প সংলগ্ন এ/০৯ ব্লক ফকিরাবাদ নামক এলাকায় পাহাড়ের মাঝে অবস্থিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পানি সাপ্লাই মেশিন মেরামত করতে গিয়ে তারা অপহৃত হন। হঠাৎ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা মারধর করে তাদের পাহাড়ের ভেতর নিয়ে যায়।
শুক্রবার (২১ জুলাই) দিবাগত রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এ বিষয়ে টেকনাফ মডেল থানায় যোগাযোগ করা হলে ডিউটি অফিসার কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ নিউজ পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আমরা অপহৃতদের উদ্ধারে কাজ করছি। সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত আমিসহ পুলিশের কয়েকটি টিম পাহাড়ের ভেতর অবস্থান করে অপহৃতদের উদ্ধারে এবং অপহরণকারীদের ধরতে সম্ভাব্যস্থানে অভিযান চালিয়েছি। কিন্তু কাউকে উদ্ধার এবং অপহরণকারীদের কাউকেই এখন পর্যন্ত ধরা সম্ভব হয়নি। তবে এ অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান টেকনাফ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ।