টোল প্লাজায় যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কা বেপারী পরিবহনের রুট পারমিট বাতিল ও ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার দাবি
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের ধলেশ্বরী টোল প্লাজায় গত ২৭ ডিসেম্বর তিন গাড়িতে বাসের ধাক্কার ঘটনায় বিএমডব্লিউ বেপারী পরিবহনের রুট পারমিট অনির্দিষ্টকালের জন্য বাতিল ও স্বজনহারা পরিবারকে ক্ষতিপূরণ স্বরূপ আর্থিক প্রণোদনার ব্যবস্থা করাসহ ১০ দফা দাবি জানিয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত স্বজনরা।
রোববার (৫ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে স্বজন ও দেশবাসী ব্যানারে আয়োজিত প্রতিবাদ ও মানববন্ধন থেকে এসব দাবি জানানো হয়।
দুর্ঘটনায় স্বজন হারানো মো.নুর আলম সোহান বলেন, আমি গোপালগঞ্জ যাচ্ছিলাম, যাওয়ার পথে টোল দিচ্ছিলাম টোল প্লাজায়। তখন আমার কোলে আমার ছোট ছেলে ছিলো। ওই সময় টোল প্লাজায় বাস এসে ধাক্কা দিলে আমার ছেলে মারা যায়। আমি আহত হলাম, মাথায় আঘাত পেলাম, এখন আমি অনেক কিছুই মনে করতে পারি না। আমার শাশুড়ি মারা গেলো, শালি মারা গেলো, স্ত্রীর বড়বোন মারা গেছেন। এখন আমার ছোট বোন ও স্ত্রী হাসপাতালে ভর্তি। আমি চারজন মানুষ হারিয়েছি এ দুর্ঘটনায় । আমি চাই আমার মতো আর কারো এমন না হোক। আমি তাদের কঠিন শাস্তি চাই।
দুর্ঘটনায় আহত সুমন গাজী বলেন, আমরা নিরাপদ স্থানে থেকে টোল দিচ্ছিলাম। এ সময় লাইসেন্স, ফিটিনেসহীন গাড়ি এসে চোখের সামনে আমার ছেলের মাথার ওপর দিয়ে যায়। চোখ বের হয়ে যায় ওর আর আমার স্ত্রীকে চাপা দিয়ে চাকার সঙ্গে টেনে নিয়ে যায়। আমার স্ত্রী সন্তান যেভাবে চলে গেছে আমি এর বিচার চাই।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, সড়কে প্রতিদিন যে হাজার হাজার জীবন চলে যাচ্ছে এর দায় রাষ্ট্রকে নিতে হবে। দেশে প্রত্যেকটি মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার আছে, কিন্তু সড়কে যে বিশৃঙ্খলা হচ্ছে সরকারকে অবশ্যই এর দায় নিতে হবে। যারা আহত হয়েছেন নিহত হয়েছেন আমি তাদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দাবি করছি। আর যে অফিসার মামলা নিতে অস্বীকার করেছে অবিলম্বে তাকে সেখান থেকে প্রত্যাহার করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমি সরকারকে বলতে চাই বিগত ১৬ বছরে সড়কে যে অরাজকতা বিশৃঙ্খলা রাখা হয়েছে অনতিবিলম্বে সেটা অপসারণ করা হোক। সড়কে শান্তি শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করার জন্য জরুরি ভিত্তিতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হোক। একইসঙ্গে টোল প্লাজায় যে দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে তার জন্য মামলা হতে হবে। প্রত্যেকটা পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সড়কে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
স্বজনহারা পরিবারের অন্যান্য দাবিগুলো হচ্ছে— বিএমডব্লিউ বেপারী পরিবহনের মালিককে আইনের আওতায় আনতে হবে; সড়ক দুর্ঘটনার দায় রাষ্ট্র ও পরিবহন মালিক পক্ষকে নিতে হবে; সড়ক দুর্ঘটনাকে দুর্ঘটনা হিসেবে বিবেচিত না করে হত্যা হিসেবে গণ্য করা; মহাসড়কে গাড়ির গতিসীমা নির্দিষ্টকরণ ও সি.সি. ক্যামেরার মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা; হাইওয়ে পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করা; মাদকাসক্ত কোনো ড্রাইভার ও হেল্পারকে গাড়ি চালানোর দায়িত্ব না দেওয়া; ৯০ কর্মদিবসের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করা এবং ড্রাইভার ও মালিকের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করা