ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতি চাপে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া দুশ্চিন্তায় চীনের প্রতিবেশীরা

চীনা জাহাজে পোর্ট ফি আরোপের পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রের

প্রকাশিত: ১১:০৮ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ১৯, ২০২৫

ডেস্ক রিপোর্ট:

 

চীনের ওপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ধারাবাহিক শুল্ক আরোপ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোকে একটি কঠিন পরিস্থিতিতে ফেলে দিয়েছে। একদিকে তাদের প্রধান ব্যবসায়িক অংশীদার চীন, অন্যদিকে সবচেয়ে বড় রপ্তানি বাজার যুক্তরাষ্ট্র। এই জটিলতার ভেতরে সিদ্ধান্ত নিতে হিমশিম খাচ্ছে এসব দেশের স্থানীয় উৎপাদক থেকে শুরু করে বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনের সঙ্গে যুক্ত ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারাও। বৈশ্বিক বাণিজ্যের এমন টালমাটাল অবস্থায় ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া ও কম্বোডিয়া সফর করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং; যা পরিস্থিতির গুরুত্বকেই তুলে ধরছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চীনা পণ্যের ওপর উচ্চহারে শুল্ক আরোপ হওয়ায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় প্রতিবেশী দেশগুলোর বাজারের দিকে ঝুঁকছে চাইনিজ কোম্পানিগুলো। তারা তুলনামূলক কম দামে পণ্য বিক্রি করায় ভীষণভাবে চাপে পড়েছে এসব দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসাগুলো। এরই মধ্যে থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে শত শত কারখানা। চীনা পণ্যের এই বন্যা ঠেকাতে এরই মধ্যে সুরক্ষামূলক পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে দেশগুলো।

এদিকে ট্রাম্প প্রশাসন চীনা জাহাজে নতুন করে পোর্ট ফি আরোপের ঘোষণা দিয়েছে, যা ধীরে ধীরে বাড়বে। চীনের তৈরি জাহাজে পরিবহন করা পণ্যের ওপর ভিত্তি করে এই ফি নির্ধারণ করা হবে এবং তা আগামী তিন বছরে বাড়তে থাকবে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত শুধু চীন নয় বরং গোটা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রে জাহাজ নির্মাণ শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করা ও এই শিল্পে চীনের আধিপত্য চ্যালেঞ্জ জানাতে চীনা জাহাজগুলোর ওপর পোর্ট ফি আরোপের পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। যেখানে চীনা জাহাজগুলোর জন্য প্রতি আমেরিকান পোর্টে দেড় মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত চার্জ আরোপের প্রস্তাব আছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি (ইউএসটিআর) জানিয়েছে, এই ফি আগামী ১৮০ দিনের মধ্যে আরোপ করা হবে।

অন্যদিকে বৃহস্পতিবার চীনের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি শুল্ক বাড়ানোর দৌড় শেষ করার সংকেত দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ ছাড়া টিকটকের ভবিষ্যৎ নিয়ে চুক্তি প্রক্রিয়া সাময়িক স্থগিত থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি। হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ট্রাম্প বলেন, ‘আমি চাই না শুল্ক আরও বাড়ুক। একসময় এমন পরিস্থিতি তৈরি হবে, যখন মানুষ আর কিনবে না।’

হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সম্ভাব্য শুল্ক চুক্তি নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি। ইইউর সব পণ্যে ২০% শুল্ক আরোপের পর প্রথম ইউরোপীয় নেতা হিসেবে ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করলেন তিনি।