ট্রাম্প প্রশাসনে দেখা যাবে না নিকি হ্যালি ও মাইক পম্পেওকে

প্রকাশিত: ১১:৫৯ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ১০, ২০২৪

ডেস্ক রিপোর্ট:

২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হেরে নিঃশঙ্কচিত্তে হোয়াইট হাউস থেকে বিদায় নিয়েছিলেন রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। তখন খুব কমসংখ্যক মানুষই ভাবতে পেরেছিলেন, তিনি আবারও সদম্ভে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশটির হাল ধরতে পারবেন। তবে তা বাস্তবে রূপ দিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবারের নির্বাচনে তাঁর ঐতিহাসিক ও অবিস্মরণীয় প্রত্যাবর্তন ঘটেছে। তিনি বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছেন। পাশাপাশি কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের নিয়ন্ত্রণ পেয়েছে তাঁর দল। নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদেও রিপাবলিকান পার্টি এগিয়ে আছে।

চার বছর পর আগামী ২০ জানুয়ারি হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্টের চেয়ারে বসছেন তিনি। এর আগেই নতুন প্রশাসন গঠনের কাজও করছেন। তার প্রশাসনে কারা থাকছেন তা নিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে নানা তথ্য আসছে। তবে নতুন প্রশাসনে থাকছেন না রিপাবলিকান দলের নেতা ও প্রেসিডেন্ট পদে তার সাবেক প্রতিদ্বন্দ্বী নিকি হ্যালি ও যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেই এ কথা জানিয়েছেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শনিবার এক পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, বর্তমান প্রশাসনে যোগদানের জন্য সাবেক রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি এবং সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওকে আহ্বান জানানো হবে না। আগে তাদের সঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে ব্যাপক উপভোগ করেছি।
নিকি হ্যালি ছিলেন ট্রাম্পের সর্বশেষ প্রতিদ্বন্দ্বী: এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রাথমিক পর্যায়ে ট্রাম্পের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামেন সাউথ ক্যারোলিনার সাবেক গর্ভনর নিকি হ্যালি। ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় থাকাকালীন তিনি জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তবে প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়ায় ট্রাম্প তার ব্যাপক সমালোচনা করেন। যদিও শেষ পর্যন্ত রিপাবলিকান দলের হয়ে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী পদে টিকে থাকতে পারেননি হ্যালি। এ বছরের মার্চে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন নিশ্চিত হয় ডোনাল্ড ট্রাম্পের। রিপাবলিকান পার্টির মনোনয়ন দৌড়ে থাকা এক ডজন প্রার্থীর মধ্যে হ্যালি ট্রাম্পের সবশেষ প্রতিদ্বন্দ্বী, যিনি সরে দাঁড়ান। সরে দাঁড়ানোর আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পর ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেছিলেন, যারা ট্রাম্পকে সমর্থন করেননি, তাদের ভোট তাকে অর্জন করে নিতে হবে।। ২৪ মার্চ সাউথ ক্যারোলাইনার চার্লসটনে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন হ্যালি।

‘সুপার টুয়েসডেতে’ অনুষ্ঠিত ১৫টি অঙ্গরাজ্যে রিপাবলিকান পার্টির প্রাইমারিতে (দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ের) ১৪টিতে জয় পান সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একমাত্র ভারমন্ট অঙ্গরাজ্যে জয় পেয়েছিলেন তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী হ্যালি। হ্যালির একজন উপদেষ্টা বলেন, যদিও সুপার টুয়েসডেতে হ্যালির টিম ভারমন্টে জয় পেয়েছে এবং ভার্জিনিয়ার শহরতলিতে শক্ত সমর্থন দেখাতে পেরেছে। কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বিতায় টিকে থাকতে যে পরিমাণ ভোট পাওয়া দরকার, তা পাওয়া যায়নি।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী পদে আলোচনায় ছিলেন মাইক পম্পেও: অন্যদিকে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে প্রশাসনে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) পরিচালক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা মাইক পম্পেও এবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী পদে অন্যতম শীর্ষ প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করছিল আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো। ধারণা করা হচ্ছিল- জাতীয় নিরাপত্তা, গোয়েন্দা বা কূটনৈতিক ক্ষেত্রে অন্যান্য পদেও তাকে রাখা হতে পারে। তবে তেমনটি হচ্ছে না নিজেই জানিয়ে দিলেন ট্রাম্প।

গত বছর মাইক পম্পেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকানের হয়ে লড়াই না করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে এর আগে তাকে রিপাবলিকান দলের গুরুত্বপূর্ণ একজন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করা হতো।