
ক্রীড়া ডেস্ক:
ডিপিএলে মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে বুধবার শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবকে ১৭৯ রানের লক্ষ্য দিয়ে ৫ রানে হারিয়েছে নবাগত গুলশান ক্রিকেট ক্লাব। এই জয়ে গুলশান লিগে তিনে থেকে সুপার লিগে খেলা নিশ্চিত করেছে।
প্রশ্ন উঠেছে, গুলশানের এই জয় নিয়ে। শাইনপুকুরের ব্যাটাররা ইচ্ছাকৃত আউট হয়ে একটা ক্লাববে সুপার ফোরে উঠতে দেয়নি এমন অভিযোগ উঠেছে। ডিপিএলের মান, ম্যাচ ফিক্সিংসহ নানা অভিযোগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও সবর। বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন ডিপিএলে খেলা ইমরুল কায়েস। এ ছাড়া সমালোচনা করেছে সাবেক ক্রিকেটাররাও।
ইমরুল নিজেও ডিপিএল খেলছেন অগ্রণী ব্যাংকের হয়ে। আজকের গুলশানের বিপক্ষে শাইনপুকুরের দুই ব্যাটারের ভুতুড়ে আউট কাণ্ডে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি লিখেছেন, ‘আসসালামু আলাইকুম, আজকে আমি হৃদয় থেকে ক্ষোভ নিয়ে কিছু কথা বলতে বাধ্য হচ্ছি। মিডিয়া, ক্রিকেটার, সাংবাদিক, ধারাভাষ্যকার- সবাই আজ একটা ঘটনায় স্তম্ভিত, ক্ষুব্ধ। কারণটা খুব পরিষ্কার- ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আজ যে কাজটা হয়েছে, সেটা শুধু লজ্জাজনক না, এটা বাংলাদেশের ক্রিকেটকে কলঙ্কিত করেছে।’
তিনি তাদের প্রতি প্রশ্ন রেখেই বললেন, এই ক্রিকেটারদের দিয়ে কি দেশের প্রতিনিধিত্ব হয়? বিষয়টি ‘লজ্জার’ তার কাছে।
ডিপিএলের কয়েকটি দল একই পর্ষদ থেকে পরিচালিত হয়। তাতে অবনমন এড়ানো কিংবা সুপার লিগে জায়গা করতে ম্যাচ ছেড়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটে। ইমরুলও সে প্রসঙ্গ টেনে লিখেছেন, ‘একটা দলকে সুপার লিগে উঠতে না দেওয়ার জন্য পরিকল্পিতভাবে আরেক মাঠে দুই দল নিজেদের মধ্যে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে নিয়েছে! এটা কী ধরনের নাটক? আজকের সেই ম্যাচের ভিডিও প্রমাণসহ নিচে রয়েছে- আপনারা নিজেরাই দেখুন, বিচার করুন।’
দেশের ঘরোয়া লিগের দুরবস্থা ও ক্রিকেটাররা এই ভঙ্গুর অঙ্গীকার নিয়ে কীভাবে পরবর্তীতে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করবেন? এ প্রশ্ন রেখে ইমরুল আরও লেখেন, ‘এই যদি হয় আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটের অবস্থা, তাহলে ভবিষ্যতে জাতীয় দলে কারা খেলবে? কাদের হাতে আমরা তুলে দিচ্ছি দেশের পতাকা? যারা মাঠে নামার আগেই ম্যাচের ফয়সালা করে নেয়, তাদের দিয়ে কী দেশের প্রতিনিধিত্ব হয়? লজ্জা! যাদের ব্যবহার করে এসব নোংরা খেলা খেলানো হচ্ছে, তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার, কারণ ওরা আজ নিজেরাই নিজেদের বিক্রি করে দিয়েছে।’
যারা এ ঘটনায় জড়িত, তাঁদের বিরুদ্ধ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি ইমরুলের, ‘আমরা যারা বাংলাদেশের হয়ে খেলার স্বপ্ন দেখি, সেই স্বপ্নকে বাস্তব করতে দিনরাত খেটে যাচ্ছি- আর কিছু বিকৃত মানসিকতার মানুষ নিজেদের স্বার্থে গোটা দেশের ক্রিকেটকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড চেষ্টা করছে উন্নতির, কিন্তু এইসব ঘটনাগুলো সেই চেষ্টাকেও মাটিতে মিশিয়ে দিচ্ছে।
আমি জোরালোভাবে দাবি জানাই- এদের বিরুদ্ধে এখনই কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। যারা এই কাজে জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে শাস্তি দিতে হবে। আর যদি সেটা সম্ভব না হয়, তাহলে অন্তত আজকের ম্যাচ বাতিল করে পুনরায় রিশিডিউল করা উচিত। বাংলাদেশের ক্রিকেটকে এভাবে শেষ হতে দেওয়া যায় না। আজকে চুপ থাকলে, কাল হয়তো আর কিছু বলার সুযোগ থাকবে না।’