ডিবি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ দাবি মামলা দেওয়ার অভিযোগ

প্রকাশিত: ১০:১৩ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৪, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ফরিদপুরের গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ কর্মকর্তা মো. রাকিব হাসানের বিরুদ্ধে ঘুষ দাবি ও মামলা দেওয়ার অভিযোগ করেছেন ছামাদ খান নামের এক ব্যবসায়ী। জীবনের নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এই ব্যবসায়ী। আজ শুক্রবার (৪ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ অভিযোগ করেন। ছামাদ খান ফরিদপুরের মধুখালী এলাকার বাসিন্দা।

সংবাদ সম্মেলনে ছামাদ খান বলেন, আমি পেশায় একজন ওষুধ ব্যবসায়ী। তাছাড়া একটি রেন্ট-এ-কারের ব্যবসা আছে। ডিবি পুলিশ কর্মকর্তা রাকিব ২০১৭ সালে আমার নিজ থানা মধুখালীতে পরিদর্শক (ছামাদের ভাষ্যে ওসি তদন্ত) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তখন আমার পারিবারিক একটি মামলা হয়। সেই মামলায় ওসি রাকিব নিজে তদন্ত করেন এবং আমার কাছ থেকে মোটা অঙ্কের ঘুষ দাবি করেন। আমি তাকে ৩০ হাজার টাকা দিই। কিন্তু তার চাহিদা মোতাবেক টাকা না দেওয়ায় তিনি আমাকে ‘পরিণাম অনেক খারাপ হবে’ বলে হুমকি দেন।

তিনি বলেন, ওই সময়ে আমার একটা মাইক্রোবাস রেন্ট-এ-কারে ভাড়ায় চলতো। মিথ্যা মামলায় আমার সে গাড়িটি জব্দ করা হয়। পরে গাড়িটি ছাড়িয়ে আনি। গত ১৯ জুলাই আমার চালক প্রশান্ত কুমার সাহা আমাকে না জানিয়ে চারজন যাত্রী নিয়ে মধুখালী থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়। পথে ডিবির উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাকির, আলী আকবর নামের এক ব্যক্তিকে গাড়িতে তোলেন। এরপর ফরিদপুর রাজবাড়ী রাস্তার মোড় পৌঁছালে গাড়িটি দাঁড় করানো হয়। তখন আমার চালককে একটি মোটরসাইকেলে ডিবি অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। গাড়িটিও সেখান থেকে ডিবি লোক চালিয়ে নিয়ে যায়।

ব্যবসায়ী ছামাদ অভিযোগ করে বলেন, এরপর ওসি রাকিব ২০ জুলাই আমার কাছে ৭ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকার করলে গাড়ির বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়। সেদিন রাতে ওসি রাকিব আমাকে ফোন দিয়ে গালিগালাজ ও হুমকি দেন। আমি টাকা দিতে চাইনি বলে গাড়িটি ক্ষমতার বলে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেয় তারা। মামলায় চালক প্রশান্তকে পলাতক হিসেবে দেখানো হয়েছে। অথচ চালককে ধরে নিয়ে গেছে তারা। দুই লাখ টাকা ঘুষের বিনিময়ে পরদিন তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। যার প্রমাণ ফরিদপুর এসপি অফিসের সিসিটিভি ফুটেজ দেখলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যাবে।

তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, ঘুষের টাকা দিতে অস্বীকার করলে গাড়ির বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়। ২১ জুলাই রাতে ওসি রাকিব আমাকে ফোন দিয়ে গালাগালি ও হুমকি দেন। এমনকি আমাকে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়। এরপর থেকেই আমি জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছি। আমি প্রধানমন্ত্রীসহ প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার চাই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিবির ওসি মো. রাকিবুল হাসান নিউজ পোস্টকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। ছামাদ খান ওষুধের ব্যবসার আড়ালে মাদক ব্যবসায়ী। যদিও তা প্রকাশ্যে নয়। ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে তিনি মাদক ব্যবসা করেন। আলী আকবর নামে একজন মাদক ব্যবসায়ী তাকে দিয়ে মাদক ব্যবসা চালাতেন। আলী আকবরকে গ্রেফতারের পর থেকে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলছেন। এককথায় ছামাদ খানের অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।