ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনের ভোট পেছানোর প্রতিক্রিয়ায় যা বললেন প্রার্থীরা
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
সরস্বতী পূজার কারণে ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনের তারিখ একদিন পেছানোর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন মেয়র প্রার্থীরা। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কথা বিবেচনা করে নির্বাচন পেছানোর সিদ্ধান্তে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ঢাকা উত্তর সিটিতে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থী তাবিথ আউয়াল। নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণে বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেনও। তবে কিছুটা ভিন্ন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। তার মতে, ‘এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনের তারিখ না পিছিয়ে এগিয়ে আনলে ভালো হতো।’
প্রসঙ্গত, শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ভোট পেছানোর ঘোষণা দেয় ইসি। নতুন সময়সূচি অনুযায়ী ৩০ জানুয়ারির পরিবর্তে ভোট অনুষ্ঠিত হবে ১ ফেব্রুয়ারি।
ইসির এমন সিদ্ধান্তের পর এক প্রতিক্রিয়ায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘ইসির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। আমরা যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ তা আবারও প্রমাণ হলো।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার বন্ধুর উৎসবে আমি যেতে পারবো না বা সে সুন্দরভাবে সবাইকে নিয়ে তার ধর্মীয় উৎসবটি পালন করতে পারবে না, এটা আসলে হয় না। আমরা সবাই মিলে সবার ধর্মীয় উৎসব উদযাপন করবো। আমি এই সিদ্ধান্ত নেওয়ায় নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানাই।’
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল বলেন, ‘আমি এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই। জনগণের দাবিতে ইসি ভোট পেছানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি আরও আগেই নেওয়া উচিত ছিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন যখন তফসিল দেয়, তখনই আমরা বলেছিলাম তারিখটি বিতর্ক সৃষ্টি করবে। এই তারিখে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সরস্বতী পূজা। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ উপলক্ষে অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়ে থাকে। এটা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াসহ নানা মাধ্যমে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন সাধারণ মানুষ। ইসি কোনও কিছু আমলে নেয়নি। এখন তারা বিভিন্ন চাপের মুখে বাধ্য হয়েছেন নির্বাচনের তারিখ পেছাতে।’
তাবিথ আরও বলেন, ‘আগে সিদ্ধান্ত না নিয়ে ইসি তার ব্যর্থতা, অযোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছে। নির্বাচন দুদিন পরে হলেও আমাদের সমস্যা নেই। আমরা অপেক্ষায় ছিলাম সবাইকে সঙ্গে নিয়ে ভোটের অধিকার রক্ষা করার। ১ ফেব্রুয়ারির জন্য আমরা প্রস্তুত থাকবো।’
অপরদিকে ঢাকা দক্ষিণে বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেন এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘আমি খুশি যে নির্বাচন কমিশন একটি ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যখন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছিল তখনই পূজার বিষয়টি বিবেচনায় রাখার দরকার ছিল। দেরিতে হলেও সবার দাবির মুখে তারা নির্বাচন একদিন পিছিয়েছে। এতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরাও আনন্দিত হবেন। ভবিষ্যতে এই বিষয়টি নির্বাচন কমিশন খেয়াল রাখবে বলেও আশা করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন পেছানোর জন্য আমি নিজেও দাবি জানিয়েছিলাম। কারণ, পূজার মতো এমন গুরুত্বপূর্ণ দিনে কেন নির্বাচন হবে? আমাদের পুরান ঢাকায় বিশাল পূজা হয়। এখানে আমার বিশাল ভোটব্যাংক রয়েছে। তারা প্রতিনিয়ত আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।’ নির্বাচন পেছানোয় প্রচার-প্রচারণায় কোনও সমস্যা হবে না বলেও উল্লেখ করেন ইশরাক।
তবে কিছুটা ভিন্ন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সরস্বতী পূজা ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। একই দিনে ভোটের তারিখ নির্ধারিত হওয়ায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাইয়েরা মনক্ষুণ্ন ছিলেন। তাদের অসুবিধা ও আবেগের জায়গা বিবেচনা করে নির্বাচন কমিশন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগামী ১ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের দিন ধার্য করা হয়েছে। কিন্তু পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল। এটি শিক্ষার্থীদের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা। এখানে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের প্রস্তুতির একটা বিষয় থাকে। তাই নির্বাচন না পিছিয়ে এগিয়ে আনা হলে আরও ভালো হতো। এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত। কারণ, এখানে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হবে। তাদের প্রস্তুতির যে ব্যাপার আছে, সেখানে ব্যাঘাত ঘটবে। এমনিতেই নির্বাচনি কার্যক্রমের কারণে তাদের পড়াশোনায় কিছুটা ব্যাঘাত হচ্ছে।’