ঢাকায় করোনা রোগীদের জন্য আইসিইউ বেড ফাঁকা মাত্র ৬০টি
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
রাজধানী ঢাকায় করোনা রোগীদের জন্য সরকারি হাসপাতালগুলোতে আর মাত্র ৬০টি আইসিইউ বেড (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) ফাঁকা রয়েছে।
বুধবার (১৪ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদফতর এ তথ্য জানিয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২১০ জন, যা এর আগের ২৪ ঘণ্টায় ছিল ২০৩ জন। এর আগে ১২ জুলাই ২২০ জন এবং ১১ জুলাই ২৩০ জনের মৃত্যুর কথা জানায় স্বাস্থ্য অধিদফতর। আজকের ২১০ জন নিয়ে দেশে টানা চতুর্থ দিন করোনায় আক্রান্ত হয়ে দৈনিক ২০০-এর ওপরে মানুষের মৃত্যু হলো। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ২১০ জনকে নিয়ে দেশে এখন পর্যন্ত সরকারি হিসাবে মারা গেলেন ১৭ হাজার ৫২ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছেন ১২ হাজার ৩৮৩ জন, যা ১৩ জুলাই ছিল ১২ হাজার ১৯৮ জন। নতুন করে শনাক্ত হওয়া ১২ হাজার ৩৮৩ জনকে নিয়ে দেশে মোট শনাক্তের সংখ্যা সাড়ে ১০ লাখ ছাড়িয়ে গেলো। সরকারি হিসাবে দেশে এ পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয়েছেন ১০ লাখ ৫৯ হাজার ৪৩৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২০৩ জন।
সংক্রমণের এই ঊর্ধ্বগতি আর মৃত্যুর মিছিলে রাজধানী ঢাকায় আইসিইউ বেডের সংখ্যা ক্রমেই কমে আসছে।
বুধবার স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, রাজধানীতে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া ১৬টি হাসপাতালে আইসিইউ বেড ফাঁকা আছে মাত্র ৬০টি। এর আগে গতকাল ১৩ জুলাই এ সংখ্যা ছিল ৬১টি, ১২ জুলাই খালি ছিল ৭৮টি, ১১ জুলাই ছিল ৮৬টি এবং ১০ জুলাই ছিল ৯৬টি।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যমতে, রাজধানী ঢাকায় করোনা ডেডিকেটেড ১৬টি হাসপাতালের মধ্যে সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস ও হাসপাতাল এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা হলেও সেখানে তাদের জন্য আইসিইউ নেই।
বাকিগুলোর মধ্যে করোনা ডেডিকেটেড কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের ১০ বেড, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ২০ বেড, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ১০ বেডের সবগুলোতে রোগী ভর্তি রয়েছে।
এছাড়া কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালের ২৬ বেডের মধ্যে দুইটি, শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালের ১৬ বেডের মধ্যে একটি, সরকারি কর্মচারী হাসপাতালের ছয় বেডের মধ্যে একটি, মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ২৪ বেডের মধ্যে একটি, রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালের ১৫ বেডের মধ্যে একটি, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের ১০ বেডের মধ্যে দুটি, টিবি হাসপাতালের ১৬ বেডের মধ্যে ১১টি, জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের ১০ বেডের মধ্যে তিনটি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ বেডের মধ্যে একটি এবং ডিএনসিসি করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের ২১২ বেডের মধ্যে ৩৬টি বেড ফাঁকা রয়েছে।
অর্থাৎ, রাজধানীর ১৬টি হাসপাতালের ৩৯৫টি আইসিইউ বেডের মধ্যে মাত্র ৬০টি ফাঁকা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, করোনা সংক্রমণের এই ঊর্ধ্বগতিতে স্বাস্থ্য অধিদফতর আগেই শঙ্কা প্রকাশ করে জানিয়েছে, দেশের প্রান্তিক পর্যায়সহ জেলা-উপজেলা ও বিভাগীয় হাসপাতালগুলোতে সাধারণ শয্যা ও আইসিইউ শয্যার সংখ্যা কমে আসছে।
অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক রোবেদ আমিন সংক্রমণের সংখ্যা কিছুতেই কমছে না জানিয়ে বলেছেন, গত দুই মাস আগেও সারাদেশে যে সংখ্যক সাধারণ শয্যা এবং আইসিইউ বেড খালি ছিল, সে সংখ্যা ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। অধ্যাপক রোবেদ আমিন বলেন, ‘কিন্তু যে হারে দেশে সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে যদি হাসপাতালের বিদ্যমান চাপ চলতেই থাকে, তাহলে আগামী সাত থেকে ১০ দিন পর হাসপাতালের বেড আর খালি দেখা যাবে না।’