আমিনুল ইসলাম বাবু:
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল থেকে মুনিয়া খান রোজা (২৫) নামে এক ভুয়া নারী চিকিৎসককে আটক করা হয়েছে। এ সময় তার হেফাজত থেকে চিকিৎসকদের ব্যবহৃত অ্যাপ্রোন, ভুয়া আইডি কার্ড জব্দ করা হয়েছে। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তাকে শাহবাগ থানা পুলিশের নিকট সোপর্দ করা হয়েছে। আজ রোববার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে নিউজ পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢামেক হাসপাতালের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আনসার প্লাটুন কমান্ডার (পিসি) উজ্জ্বল বেপারী।
তিনি বলেন, গতকাল শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঢামেক হাসপাতালের নতুন ভবনের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) দায়িত্বে ছিলেন আনসারের এপিসি জামান উদ্দিন। তিনি আমাকে বেতার যন্ত্রের মাধ্যমে জানান গতিবিধি সন্দেহজনক হওয়ায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আমরা এক নারীকে আটক করেছি। তখন ডাক্তারদের ব্যবহারের এ্যাপ্রোন পরা অবস্থায় ছিলেন তিনি। তাকে দেখে বোঝার উপায় নেই তিনি ডাক্তার নন। সে সময় আমাদের এক চিকিৎসকের মোবাইলও হারানো যায়। সন্দেহ হওয়ায় আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই নারীকে আমাদের জরুরি বিভাগে নিরাপদে নিয়ে আসি। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তিনি চিকিৎসক নন বলে আমাদের কাছে স্বীকার করেন। চিকিৎসকের মিথ্যা পরিচয় দেওয়া মুনিয়া খান চাঁদপুর সদরের হামান কর্দ্দি গ্রামের প্রয়াত মো. করিম খানের মেয়ে। বর্তমানে তিনি পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডে ভাড়া বাসায় থাকেন। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নির্দেশে শনিবার দিবাগত মধ্যরাতেই শাহবাগ থানা পুলিশের কাছে ওই নারীকে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মুনিয়া খান বলেন, আমি ভয়ে প্রথমে বলেছিলাম ঢাকা মেডিকেলের গাইনি বিভাগের চিকিৎসক। কিন্তু আমি ভুল বুঝতে পেরেছি। সত্যিকার অর্থে আমি কোনো চিকিৎসক নই, চিকিৎসা পেশার সঙ্গে আমি জড়িতও নই। আমি নীলক্ষেত থেকে ৫৫০ টাকা দিয়ে অ্যাপ্রোন কিনি এবং মিটফোর্ড এলাকা থেকে স্টেথোস্কোপ ক্রয় করি। এরপর নীলক্ষেত থেকে নিজের ছবি দিয়ে চিকিৎসক পদবীর একটি আইডি কার্ড বানাই। মুনিয়া স্বীকার করেন তিনি ঢাকা মেডিকেল থেকে বেসরকারি হাসপাতালে রোগী ভাগিয়ে নিয়ে যান এবং ডাক্তারদের অ্যাপ্রোন পরে তাদের রুমে ঢুকে মোবাইলসহ অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী চুরি করতেন। এদিকে গতকাল সকালে হাসপাতালে গিয়ে সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়- ওই নারী আইসিইউর ভেতর থেকে চিকিৎসকের পোশাক পরা অবস্থায় প্রবেশ করছেন ও বেরিয়ে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া সবুজ বাংলাকে বলেন, ওই নারীকে আনসার সদস্যরা আমাদের পুলিশ ক্যাম্পে দিয়ে আসেন। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আমরা তাকে ভুয়া নারী চিকিৎসক হিসেবে শনাক্ত করে শাহবাগ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছি।
