সাজ্জাদ হোসেন
এলোমেলোভাবে পড়ে আছে ক্ষতবিক্ষত অনেক মরদেহ। কারো মাথা গুলির আঘাতে ছিন্নভিন্ন, আবার কারো পুরো শরীর বুলেটের আঘাতে ঝাঁঝরা। অনেক জায়গায় একটি মরদেহের ওপর আরেকটি মরদেহ উপুড় হয়ে আছে।
সোডিয়াম লাইটের আলোয় আপাত দৃষ্টিতে মরদেহগুলোকে বাস্তব মনে হলেও এগুলো মূলত বাঁশ, কাঠ, খড়, কাগজ দিয়ে তৈরি করা।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জগন্নাথ হলে সংঘঠিত নির্মম গণহত্যা চালিয়ে নিরীহ মানুষদের যেভাবে মেরে ফেলে রাখা হয় এটি তারই একটি কল্প চিত্র। বাঁশ কাঠ দিয়ে তৈরির পর চারুকলার শিক্ষার্থীরা এগুলোকে রং তুলির আঁচ দিয়ে বাস্তব করে তুলেছে।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালো রাতে শহীদদের স্বরণে ও ‘গণহত্যা দিবস’ উপলক্ষে ঢাবির জগন্নাথ হলে প্রতীকী এ গণহত্যার চিত্র চিত্রায়িত করা হয়
সোমবার (২৫ মার্চ) রাতে সরেজমিন যায়, ঢাবির জগন্নাথ হলের দুই প্রবেশ গেট, জ্যেতির্ময় গুহঠাকুরতা ভবন, প্রভোস্ট বাংলোর প্রবেশ পথ, পুকুর পাড়, রেকর্ড স্মারক ফলক, স্বামী বিবেকানন্দ ভাস্কর্য, গৌতম বুদ্ধের মূর্তি, গোবিন্দ চন্দ্র দেব ভবন, নবনির্মিত ফলকের চারপাশে এভাবে এলোমেলোভাবে ক্ষতবিক্ষত অনেক মরদেহ পড়ে আছে।
রাতে জগন্নাথ হলে গণহত্যা দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামালের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা জগন্নাথ হল গণসমাধিতে মোমবাতি প্রজ্বলন ও শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। এসময় অন্যান্যের মধ্যে জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মিহির লাল সাহা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে দিবসটি উপলক্ষে বাদ জোহর মসজিদুল জামিয়াসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকার মসজিদসমূহে এবং জগন্নাথ হল মন্দিরসহ অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে শহীদদের রুহের মাগফেরাত (আত্মার শান্তি) কামনায় বিশেষ মোনাজাত (প্রার্থনা) অনুষ্ঠিত হয়। পাশাপাশি সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতি চিরন্তন চত্বরে উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামালের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের পক্ষ থেকে মোমবাতি প্রজ্বলন ও শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়।