তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে শুনানি বুধবার পর্যন্ত মুলতবি

প্রকাশিত: ১২:৩১ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১১, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলে রিভিউ-সংক্রান্ত মামলা বিচারাধীন থাকায় সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর বিষয়ে জারি করা রুলের শুনানি নিয়ে আইনি প্রশ্ন উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা-সংক্রান্ত বিচারাধীন বিষয় আপিল বিভাগে নিষ্পত্তির আগে হাইকোর্টে শুনানি বা নিষ্পত্তি হতে পারে কিনা, সেই প্রশ্ন উঠেছে। ফলে আগে আইনি প্রশ্ন নিষ্পত্তি করার বিষয়ে তাগিদ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি আগামী বুধবার এ বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য হয়েছে।
বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল রোববার এই আদেশ দেন। এ সময়ের মধ্যে রুলের সব পক্ষকে আলোচনা করে শুনানির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে আদালতকে জানাতে বলা হয়েছে।

আদালতে জামায়াতের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। শুনানিতে তিনি বলেন, আপিল বিভাগে ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলে রিভিউ-সংক্রান্ত মামলা বিচারাধীন অবস্থায় পঞ্চদশ সংশোধনীর বিষয়ে জারি করা রুল শুনানির গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে আইনি প্রশ্ন রয়েছে।
২০১১ সালের ১০ মে আপিল বিভাগের দেওয়া রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অবৈধ ঘোষণা করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করা হয়। পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাদ দিয়ে বেশ কিছু বিষয়ে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আনে আওয়ামী লীগ সরকার।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা-সংক্রান্ত ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) তিনটি আবেদন আপিল বিভাগে বিচারাধীন। আগামী ১৭ নভেম্বর শুনানির তারিখ রয়েছে। অন্যদিকে পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল প্রশ্নে জারি করা রুলের শুনানি চলছে হাইকোর্টে।

পরে শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের যেসব বিধান বাতিল করা হয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থা বাতিল করা হয়েছিল আপিল বিভাগের একটি রায়ের মাধ্যমে। ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে রায় দিয়েছিলেন সর্বোচ্চ আদালত। এই রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) তিনটি আবেদন আপিল বিভাগে বিচারাধীন।

তিনি বলেন, আগামী ১৭ নভেম্বর শুনানির তারিখ রয়েছে। পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল প্রশ্নের রুল শুনানিতে বারবারই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের প্রসঙ্গ আসছিল। যে কারণে প্রশ্ন উঠেছে, আপিল বিভাগে বিষয়টি নিষ্পত্তির আগে হাইকোর্ট সে বিষয়ে শুনানি বা নিষ্পত্তি করতে পারে কিনা? সুপ্রিম কোর্টের রীতিনীতি অনুযায়ী তা করাটা সমীচীন হবে না, যথাযথ হবে না।

শিশির মনির আরও বলেন, এমন পরিস্থিতিতে কী করণীয়, তা অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়সহ বিবদমান পক্ষগুলোকে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানাতে বলেছেন আদালত।

আদালতে রিটকারী সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ড. শরিফ ভূঁইয়া। বিএনপির পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, বদরুদ্দোজা বাদল এবং রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদ উদ্দিন শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন।