তাপমাত্রা কমে স্বস্তি সারাদেশে- দেশ জুড়ে তিন দিন কালবৈশাখীর সতর্কতা জারি

প্রকাশিত: ১১:১২ পূর্বাহ্ণ, মে ৬, ২০২৪

মোঃসাইফুল ইসলামঃ 

এক মাসের বেশি সময় ধরে টানা অসহ্য তাপদাহের পর সারাদেশে স্বস্তির বৃষ্টি নেমেছে। কোথাও কোথাও বজ্রমেঘসহ কালবৈশাখীর তাণ্ডব চলছে। গত দুই-তিন দিনে তাপমাত্রা কমে গেছে। প্রশমিত হচ্ছে উত্তাপের দাপট। চুয়াডাঙ্গা ছাড়া দেশের সর্বত্রই তাপমাত্রা ছিল ৩৯ ডিগ্রির নীচে। ঢাকায় প্রতিদিনই তাপমাত্রা কমছে। গতকাল ৩৬ ডিগ্রিতে নেমে এসেছে রাজধানীর তাপমাত্রা। এক শ্বাসরুদ্ধকর গরম থেকে মানুষ কিছুটা প্রশান্তি বোধ করছে। খুলে দেওয়া হয়েছে স্কুল, কলেজসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। মানুষ স্বাভাবিক কাজকর্মে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন। তবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বজ্রপাত,শিলাবৃষ্টিসহ কালবৈশাখী ঝড় বেড়েছে। এতে প্রাণহানিসহ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পাকা ধান।

গতকাল খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, টাঙ্গাইলের ঘাটাইল, জামালপুরের ইসলামপুর, সিলেটের গোয়াইনঘাট ও মৌলভীবাজার সদর উপজেলায় বজ্রপাতে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে আগামী ৭২ ঘণ্টা দেশের ৮ বিভাগের ওপর দিয়ে বিচ্ছিন্নভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যাওয়ার সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম বলেন, আজ সোমবার থেকে সারাদেশে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। বাড়বে বজ্রপাত, শিলাবৃষ্টিসহ কালবৈশাখী ঝড়। এতে করে যেসব জায়গায় তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছিল সেগুলো প্রশমিত হবে। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে।

আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক জানান,আগামী বুধবার বিকেল ৪টার মধ্যে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের ওপর দিয়ে বিচ্ছিন্নভাবে পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে দমকা বা ঝোড়ো বাতাসসহ কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যাওয়ার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। আবহাওয়াবিদরা জানান, আজ সোমবার থেকে পরবর্তী সাতদিন সব বিভাগেই ঝড়-বৃষ্টি থাকতে পারে। তবে পশ্চিমাংশে বৃষ্টি কিছুটা কম থাকতে পারে।

কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ বিভিন্ন মডেল বিশ্লেষণ করে জানিয়েছেন, শক্তিশালী কালবৈশাখী ঝড় ও তীব্র বজ্রপাত ময়মনসিংহ, সিলেট, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোর ওপর দিয়ে অতিক্রম করছে। আগামী তিনদিন এই অবস্থা চলবে। তিনি জানান, আগামী ১৪ মে পর্যন্ত বৃষ্টিপাত বাড়বে। এদিকে গতকাল রবিবার থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে সিলেট বিভাগের জেলাগুলোর ওপরে। ৭ মে পর্যন্ত সিলেট বিভাগের ৪ জেলা, মেঘালয় রাজ্য ও পূর্ব আসামের ৩ জেলায় তীব্র বজ্রপাতসহ ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টির প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। আজ সোমবার থেকে সিলেট বিভাগের নদ-নদীগুলোর উপকূলবর্তী এলাকাগুলো বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করা যাচ্ছে।গতকাল সিলেটের গোয়াইনঘাটে বজ্রপাতে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। নিহত করম আলী (৬০) ছৈলাখেল ৮ম খন্ড গ্রামের মৃত আফসর উদ্দিনের ছেলে। মৌলভীবাজারে সদর উপজেলার আপার কাগাবাল ইউনিয়নের পুদিনাপুর গ্রামে বজ্রপাতে আবদুল হাই নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।