তামিম চাইলেন সময়, ঝুলে রইলেন সাকিব
চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দল নির্বাচন
ক্রীড়া ডেস্ক:
লম্বা সময় ধরে চলা নানান জটিলতার পর অবশেষে চূড়ান্ত হয়েছে আসন্ন চ্যাম্পিয়নস ট্রফির চূড়ান্ত সূচি। আসরটি মাঠে গড়াতেও খুব একটা সময় বাকী নেই। হাইব্রিড মডেলের ৮ দেশের এই টুর্নামেন্টের ২০২৫ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শেষ হবে ১০ মার্চ। এই মেগা ইভেন্টের আসরকে সামনে রেখে দল পাঠানোর শেষ সময় ১২ জানুয়ারি। ইতিমধ্যে ইংল্যান্ড সবার আগে তাদের এই টুর্নামেন্টের জন্য দল ঘোষণা করেছে বাকী দলগুলোও প্রায় প্রস্তুতি সাড়ছে দল গঠনের।
আর আসন্ন এই মিনি বিশ্বকাপের জন্য দল গঠন করতে বিসিবি করছে দুই খেলোয়াড়ের জন্য অপেক্ষা। তারা হলেন দেশ সেরা ওপেনার তামিম ইকবাল ও সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। দুই জনেই বর্তমানে বিভিন্ন বিভিন্ন কারণে রয়েছেন দলের বাহিরে। তবে তাদের নিয়েই চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দল গঠন করতে চায় নির্বাচকরা। কিন্তু তার জন্য করতে হবে অপেক্ষা। তামিম চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানোর জন্য চেয়েছেন সময় আর দলে জায়গা পাওয়ার জন্য সাকিবের ভাগ্য রয়েছে ঝুলে।
অউঠঊজঞওঝঊগঊঘঞ
অসধুরহম ঈড়ড়ষ এধফমবঃংঅসধুরহম ঈড়ড়ষ এধফমবঃং
চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দলে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত চেয়েছেন চার বড় ভাইকে। তাদের মধ্যে মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ অ্যাভেলেইবল থাকলেও জটিলতা তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসানকে দলে নেওয়া নিয়েই। এর মধ্যে কয়েকদিন আগে তামিম ইকবাল বিপিএলের দল চিটাগং কিংসের শুভেচ্ছা দূত শহীদ আফ্রিদির ইউটিউব চ্যানেলে আসা এক ভিডিওতেও বলেছেন তিনি আর জাতীয় দলের হয়ে খেলবেন না। অন্যদিকে সাকিব আল হাসান তো বিভিন্ন ইস্যুতেই আটকা। একেতো অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের অভিযোগে আটকা পড়েছেন তিনি তার ওপর দেশে পারছেন না ফিরতে। সব মিলিয়ে তিনিও দলের বাহিরে। এ নিয়েই গতকাল সিলেটের কথা বলেছেন জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু।
বুধবার (৮ জানুয়ারি) সিলেটের গ্র্যান্ড সিলেট হোটেলে তামিম ইকবালের সঙ্গে বৈঠক করেন নির্বাচক কমিটি। এই আলোচনায় তামিম চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলার প্রসঙ্গে খানিকটা ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য কিছুটা সময় চেয়ে নেন। এ নিয়ে লিপু বলেন, ‘এই ব্যাপারটা (জাতীয় দলে ফেরার প্রসঙ্গে) নিয়ে তামিমের সঙ্গে আমাদের আরও আগেই আলোচনাটা হতে পারতো। যাই হোক সামনে একটা বড় ইভেন্ট রয়েছে, আলোচনা হয়েছে। তবে আলোচনার সঙ্গে সঙ্গে ফল আসে না। কারণ এটা একটা বড় সিদ্ধান্ত। যেমন আমাদের উপর আমাদের বোর্ড আছে একই ভাবে খেলোয়াড়দের ফেরত আসার ক্ষেত্রে বন্ধুবান্ধব, পরিবার, প্রিয় কোচ কিংবা শুভাকাঙ্ক্ষীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার বিষয় থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে একটু সময়ের বিষয় থেকেই যায়। যেহেতু আমাদের ১২ তারিখে দল ঘোষণা করতে হবে, তার আগেই দল দিতে হবে বোর্ডের কাছে তো মনে হয়েছে এখনও সময় আছে সে তা নিতে পারে এত তারাহুড়ো করার কিছু নেই। বর্তমানে একটা টুর্নামেন্ট (বিপিএল) খেলছেন। সব মিলিয়ে বলা যায় আমরা আমাদের প্রাথমিক আলোচনাটা সেড়ে নিয়েছি।’
তামিম কি করতে চান তা আগেই তিনি ঠিক করে রেখেছে বলে বিশ্বাস প্রধান নির্বাচকের। তিনি বলেন, ‘তামিম ইকবাল, ‘তিনি কি করতে চান সে ব্যাপারে তিনি আগে থেকে থেকেই ভেবে রেখেছেন আমার বিশ্বাস। এত বড় খেলোয়াড়..তারপরও কোনো একটা কিছুর ব্যাপারে কিছু কিছু সময় সংশয়ের সৃষ্টি হয় তখন পরিবারের থেকে একটা মতামত নেওয়া দরকারি হয়ে পরে। আমি যদি এখন একটা বক্তব্য দেই এটা একটা ঘোষণার মত হয়ে যাবে তার পক্ষে। তবে আমি আশা করবো তার ফিরে আশা কিংবা না আশা যেটাই হোক ঘোষণাটা তামিমের কাছ থেকেই আসুক।’
অন্যদিকে তামিম ইকবালের পর সাকিব আল হাসানের প্রসঙ্গে লিপু বলেন, ‘সাকিবের ব্যাপারে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। সে যে প্রথম পরীক্ষাটা দিলো (বোলিং অ্যাকশন) সেখানে তিনি উত্তীর্ণ হতে পারেননি। যেটা খুবই অবাক করার মত। আবার এখানে আরেকটু পরিষ্কার জানতে হবে যে তিনি আরেকটা পরীক্ষা দিয়েছেন সেখানে তিনি উত্তীর্ণ হয়েছেন কিনা এবং বর্তমানে তার মানসিক পরিস্থিতির অবস্থা।’
সাকিবের যে ফলাফলের কথা বলেছেন নির্বাচক, তা হল সাকিবের বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষার ফল। কারণ, গত বছরের সেপ্টেম্বরে সারের সঙ্গে ইংল্যান্ডে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপ খেলতে গিয়েছিলেন তিনি। এখানে খেলার পর প্রথমে ইংল্যান্ডে, পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেই নিষিদ্ধ হয়ে যায় তার বোলিং। এ ব্যাপারে লিপু বলেন, ‘বার্মিংহামে বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষায় ব্যর্থ হওয়ার পর গত ২১ ডিসেম্বর চেন্নাইয়ে দেওয়া পরীক্ষায়ও সাকিব ছাড়পত্র পাননি। তবে তিনি এরই মধ্যে চেন্নাইয়ে আরেক দফা বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষা দিয়েছেন। তার ফলাফল এখনও আসেনি।’
৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সাকিবের বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষার ফল পাওয়া যাবে বলে আশা বিসিবির। তবে ফলের পর কোনো প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে তাকে যেতে হবে কি না, সে ব্যাপারে স্পষ্ট কিছু বলতে পারেননি লিপু। বিসিবি নির্বাচক বলেন,‘আশা করি, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই ফলাফল পাব। এরপর বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কিন্তু সাকিবকে নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্যে রাখা হবে কি না বা কীভাবে রাখা হবে, সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো নির্দেশনা পাইনি।’