তিন তালাকের পর যে তিন বিধান প্রযোজ্য হয়

প্রকাশিত: ৪:৪৪ অপরাহ্ণ, মে ৫, ২০২৪

ইসলামিক ডেস্ক:

ইসলামে সবচেয়ে অপছন্দের বৈধ বিষয় তালাক। সংসার ভাঙাকে পছন্দ করে না ইসলাম। তাই স্বাভাবিকভাবে তালাক ইসলামে পছন্দনীয় নয়। তবে নিরুপায় অবস্থায় তালাক দেয়ার অনুমতি দিয়েছে ইসলাম।

১. স্বামী-স্ত্রী একে অপরের জন্য হারাম হয়ে যায়। তথা তালাকের পর থেকে তাদের পরস্পরের জন্য দেখা-সাক্ষাৎ, মেলা-মেশা তথা স্বামী-স্ত্রী সুলভ সকল যাবতীয় আচরণ নাজায়েয ও হারাম হয়ে যায়।

২. তখন স্ত্রীর ইদ্দত তথা তালাক পরবর্তী তিন মাসিক শেষ হওয়া পর্যন্ত, আর গর্ভবতী হলে সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়া পর্যন্ত তাকে খোর-পোষ দেয়া এবং মোহর আদায় না করে থাকলে মোহর আদায় করা স্বামীর ওপর ওয়াজিব।

৩. যেহেতু তিন তালাক প্রদানকারী এখন আর এই স্ত্রীর স্বামী নন সেহেতু স্ত্রীর জন্য করণীয় হল, দ্রুত এই স্বামীর সংসার থেকে চলে যাওয়া৷ এরপর যদি অন্য কোথাও স্ত্রীর বিয়ে হয়, ঘর-সংসার হয়৷ সেই স্বামী কোনো কারণে স্ত্রীকে তালাক দিয়ে দেয় কিংবা মারা যায় তখন দ্বিতীয় স্বামীর তালাক বা মৃত্যুজনিত ইদ্দত পালনের পর নতুনভাবে মোহর নির্ধারণ করে শরীয়ত সম্মত পন্থায় প্রথম স্বামীর কাছে পুনরায় বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে৷ এ ছাড়া আর কোনো পথ নেই৷

আরও পড়ুন:

আল্লাহ তাআলা বলেন, فَإِن طَلَّقَهَا فَلَا تَحِلُّ لَهُ مِن بَعْدُ حَتَّىٰ تَنكِحَ زَوْجًا غَيْرَهُ ۗ فَإِن طَلَّقَهَا فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِمَا أَن يَتَرَاجَعَا إِن ظَنَّا أَن يُقِيمَا حُدُودَ اللَّهِ ۗ وَتِلْكَ حُدُودُ اللَّهِ يُبَيِّنُهَا لِقَوْمٍ يَعْلَمُونَ

তারপর যদি সে স্ত্রীকে (তৃতীয়বার) তালাক দেয়া হয়, তবে সে স্ত্রী যে পর্যন্ত তাকে ছাড়া অপর কোন স্বামীর সাথে বিয়ে করে না নেবে, তার জন্য হালাল নয়। অতঃপর যদি দ্বিতীয় স্বামী তালাক দিয়ে দেয়, তাহলে তাদের উভয়ের জন্যই পরস্পরকে পুনরায় বিয়ে করাতে কোন পাপ নেই। যদি আল্লাহর হুকুম বজায় রাখার ইচ্ছা থাকে। আর এই হলো আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত সীমা; যারা উপলব্ধি করে তাদের জন্য এসব বর্ণনা করা হয়। (সুরা বাকারা-২৩০)

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কোরআনে বলেন,

 

হে নবী! তোমরা যখন তোমাদের স্ত্রীদের তালাক দিতে ইচ্ছা কর তখন ইদ্দতের প্রতি লক্ষ্য রেখে তালাক দিও, ইদ্দতের হিসাব রেখ এবং তোমাদের প্রতিপালককে ভয় কর। তোমরা ওদেরকে সবগৃহ হতে বের কর না এবং ওরাও যেন সে ঘর হতে বের না হয়; যদি না ওরা লিপ্ত হয় স্পষ্ট অশ্লীলতায়। এ হলো আল্লাহর বিধান, যে আল্লাহর বিধান লঙ্ঘন করে, সে নিজেরই উপর অত্যাচার করে। তুমি জান না, হয়তো আল্লাহ এরপর কোনো উপায় বের করে দেবেন। (সুরা তালাক ১)

অতঃপর ভুল বুঝে স্বামীর মন ও মতের পরিবর্তন ঘটলে যদি স্ত্রী ত্যাগ করতে না চায়, তাহলে ইদ্দতের ভেতরেই (তিন মাসিকের পূর্বে পূর্বেই) তাকে ফিরিয়ে নিতে পারে। তবে ফিরিয়ে নেবার সময়ও দুই ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তিকে সাক্ষী রাখবে।