তেলবাহী জাহাজে বিস্ফোরণে দগ্ধ বেড়ে ১৪, ঢাকায় পুলিশসহ দুজন

প্রকাশিত: ৪:০৪ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ৪, ২০২৩

ঝালকাঠি প্রতিনিধি:

ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে জ্বালানি তেলবাহী সাগর নন্দিনী-২ থেকে তেল অপসারণের সময় বিস্ফোরণে দগ্ধ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ জনে। এরমধ্যে ১০ জন পুলিশ সদস্য। গুরুতর আহত দুই পুলিশ সদস্যসহ তিনজন।

তাদের মধ্যে পুলিশ সদস্যসহ দুজনকে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে।

 

আশঙ্কাজনক অবস্থায় আরেক পুলিশ সদস্যকে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

দগ্ধ বাকি ১১ জন ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গুরুতর আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন- শওকত জামিন (২৪) ও দীপ সমাদ্দার (২৫)। তাদের শরীরের ৬০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তারা ঝালকাঠি পুলিশ লাইন্সে কর্মরত। গুরুতর আহত আরেকজন হলেন- জাহাজের স্টাফ শরীফ আহমেদ (৩৫)। তাদের মধ্যে পুলিশ সদস্য শওকত ও জাহাজের স্টাফ শরীফকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আর দীপকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

জানা গেছে, শনিবার (১ জুলাই) দুপুর ২টায় সাগর নন্দিনী-২ জাহাজে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে চারজন নিখোঁজ হন। তাদের মরদেহ ও ধ্বংসাবশেষ উদ্ধারকাজ সোমবার (৩ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে শেষ হয়। বিস্ফোরিত জাহাজে ডিজেল ও পেট্রোলবোঝাই ছিল ১১ লাখ লিটার। রোববার (২ জুলাই) প্রায় সাত লাখ লিটার তেল অপসারণ করা হয়। ওই জায়গায় সাগর নন্দিনী-২ ও সাগর নন্দিনী-৪ নোঙর করা ছিল।

সোমবার (৩ জুলাই) বাকি তেল অপসারণের কাজ চলছিল। এদিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে ফের ওই জাহাজে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে পুলিশ, নৌবাহিনীর সদস্য, জাহাজের স্টাফরা ছোটাছুটি শুরু করেন। এসময় অন্তত ১৪ জন দগ্ধ হন। কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছেন বলেও জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

দুর্ঘটনার শিকার জাহাজের বাবুর্চি বেলাল হোসেন বলেন, একটি পাম্প চালু করে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা কাজ করা যায়। কিন্তু তার চেয়েও বেশি সময় সচল রেখে কাজ করায় পাম্প গরম হয়ে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। আমি ওই সময় রান্নার কাজে ছিলাম। আগুন দেখেই নদীতে লাফিয়ে পড়ি। ওইসময় নৌবাহিনীর দুজন গোসল করছিলেন। তাদের কোনো সন্ধান এখনো পাওয়া যাচ্ছে না।

আহত একজন পুলিশ সদস্য জানান, জাহাজের পাশেই ট্রলারে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন তারা। হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। এতে আতঙ্কিত হয়ে ট্রলারের চালকও নদীতে লাফিয়ে পড়েন। এতে ট্রলারটিকেও সরাতে পারছিলেন না তারা। আগুনের তাপ তাদের শরীরে লাগছিল। জীবন বাঁচাতে তারাও যে যার মতো করে নদীতে লাফিয়ে পড়েন।।

ঝালকাঠির সিভিল সার্জন ডা. এইচ এম জহিরুল ইসলাম জানান, বিস্ফোরণের ঘটনায় এ পর্যন্ত দগ্ধ ১০ পুলিশ সদস্যসহ ১৪ জন হাসপাতালে এসেছেন। তাদের চিকিৎসার জন্য সদর হাসপাতালে আলাদা ইউনিট চালু করা হয়েছে। গুরুতর আহত দুই পুলিশ সদস্যসহ তিনজনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। তার মধ্যে দুজনকে ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে। বাকি ১১ জন ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।