থার্ড টার্মিনাল উদ্বোধন: উচ্ছ্বসিত মালয়েশিয়া প্রবাসীরা
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
ডেস্ক রিপোর্ট :
বহুল প্রতীক্ষিত হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর এ উদ্বোধনে উচ্ছ্বসিত মালয়েশিয়া প্রবাসী বাংলাদেশিরা। বিমানবন্দরে প্রবাসীদের ভোগান্তি, ইমিগ্রেশন জটিলতাসহ উন্নত সেবায় এবার সব সমস্যা দূর হওয়ার পাশাপশি দেশের এভিয়েশন খাত আমূল বদলে যাবে বলেও মনে করছেন প্রবাসীরা।
উন্নত জীবন ও জীবিকার তাগিদে সারা বিশ্বকে কর্মক্ষেত্র বানিয়ে ছুঁটছে স্বপ্নচারী প্রবাসী বাংলাদেশিরা। বিশ্বজুড়ে প্রবাসী বাংলাদেশির সংখ্যা কোটি ছাড়িয়েছে। দেশে আসা যাওয়ার পথে এই প্রবাসীরা বিদেশে চোখ ঝলসানো বিমানবন্দর দেখে এতদিন আফসোস করতেন। এবার হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল পূরণ করবে সেই স্বপ্ন। প্রবাসীদের আশা, ইমিগ্রেশন ভোগান্তি, জটিলতাসহ ঘুচবে দীর্ঘ লাইনের অপেক্ষা।
ইউনিভার্সিটি পুত্রা মালয়েশিয়ার পিএইচডি গবেষক ও বাংলাদেশি স্টুডেন্ট ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘দেশে আধুনিক দৃষ্টিনন্দন টার্মিনাল হয়েছে। এতে বিমানবন্দরে কোটি প্রবাসীর ভোগান্তির নিরসন হবে। পাশাপাশি আধুনিক বিমানবন্দরটি আন্তর্জাতিক হাবে পরিণত হবে বলেও আশা ব্যক্ত করেন জহুরুল ইসলাম।
প্রবাসী কমিউনিটি নেতা রাশেদ বাদল বলেন, ‘নতুন এই টার্মিনালের কারণে আমরা প্রবাসীরা অনেক সুযোগ-সুবিধা পাব। আমাদের ভোগান্তি ও ইমিগ্রেশন জটিলতাও কমবে। বিশেষ করে এখন থেকে সময় কম লাগবে বলে আশা করছি।
বিমানবন্দরের সক্ষমতা ও অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধার উন্নয়নে এশিয়ার আঞ্চলিক এভিয়েশন হাব হতে পারে ঢাকা। বঙ্গকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, জাতির জনকের কন্যার হাত ধরেই এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার আয়তনের এই বিশাল তৃতীয় টার্মিনাল দেশের উন্নয়নের মাইলফলকে নতুন সংযোজন বলে মনে করছেন মালয়েশিয়া প্রবাসীরা।
প্রবাসী তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ও ইয়ুথ হাব সভাপতি পাভেল সারওয়ার বলেন, প্রবাসীদের অনেক দিনের আকাঙ্ক্ষা ছিল বাংলাদেশে উন্নতমানের টার্মিনাল হবে। ঢাকায় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তা চালু হচ্ছে। এটা আমাদের জন্য অনেক আনন্দের বিষয়। থার্ড টার্মিনাল বাংলাদেশের উন্নয়নে নতুন মাইলফলক হিসেবে গণ্য হবে।
শাহজালালের তৃতীয় এই টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন পায় ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর। সে সময় ব্যয় ধরা হয় ১৩ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। পরে আরও ৭ হাজার ৭৮৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা বাড়িয়ে প্রকল্পের আকার দাঁড়ায় প্রায় ২১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা। নতুন করে তিন হাজার কোটি টাকা বাড়লে প্রকল্পের ব্যয় হবে ২৪ হাজার কোটি টাকার বেশি।
খরচের বেশিরভাগ আসছে জাপানি সহযোগিতা সংস্থা জাইকার কাছ থেকে। সংস্থাটি ঋণ হিসেবে দিচ্ছে ১৬ হাজার ১৪১ কোটি ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। বাকি ৫ হাজার ২৫৮ কোটি ৩ লাখ ৮৮ হাজার টাকা দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।
বর্তমানে শাহজালালে যে দুটি টার্মিনাল রয়েছে তা এক লাখ বর্গমিটার জায়গার ওপর। তৃতীয় টার্মিনালটি বর্তমান দুটি টার্মিনালের দ্বিগুণের বেশি। ভবনটির আয়তন ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার। এটির নকশা করেছেন স্থপতি রোহানি বাহারিন, যিনি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনালের নকশা করে বিশ্বে খ্যাতি কুড়িয়েছেন।
থার্ড টার্মিনালটির ভবন হবে তিনতলা। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে শুরু হয় এর নির্মাণকাজ। এভিয়েশন ঢাকা কনসোর্টিয়ামের মাধ্যমে জাপানের মিত্সুবিশি ও ফুজিটা এবং কোরিয়ার স্যামসাং এই তিনটি প্রতিষ্ঠান থার্ড টার্মিনাল ভবন নির্মাণকাজ করছে।