সিলেট প্রতিনিধি:
বিএনপি-জামায়াতের ডাকা দ্বিতীয় দফার অবরোধের প্রথম দিনে সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় একটি পণ্যবাহী পিকআপে আগুন দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় একজনকে আটক করেছে পুলিশ। এ ছাড়া সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে সকাল থেকে বিক্ষিপ্তভাবে পিকেটিংয়ের খবর পাওয়া গেছে। সিলেট থেকে গন্তব্যের উদ্দেশে ট্রেন ছেড়ে গেলেও দূরপাল্লার কোনো বাস সিলেট ছেড়ে যায়নি। অবরোধে নগর এলাকায় ব্যস্ততা বাড়তে দেখা গেছে।
আজ রবিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত নগরের বিভিন্ন এলাকা, দক্ষিণ সুরমা বাস টার্মিনাল, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বিভিন্ন এলাকার চিত্র এমনটা ছিল। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কের পারাইরচক জলকরকান্দি এলাকায় একটি খাদ্যপণ্যবাহী পিকআপ ভ্যানে আগুন দেন বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা। এ সময় পুলিশ ধাওয়া করে এক পিকেটারকে আটক করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পারাইরচক জলকরকান্দি এলাকায় একটি খাদ্যপণ্যবাহী পিকআপ ভ্যানে পিকেটাররা ইটপাটকেল ছুড়ে গতিরোধ করে। পরে নিক্ষেপ করে পেট্রলবোমা। এতে গাড়ির সামনের অংশ পুড়ে যায়।
খবর পেয়ে মোগলাবাজার থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে দ্রুত এসে ধাওয়া করে একজনকে আটক করে।
তবে তাৎক্ষণিকভাবে আটককৃতের নাম-ঠিকানা জানা যায়নি। সিলেটের মোগলাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামসুদ্দোহা বলেন, ‘গাড়িতে আগুন দেওয়ায় একজনকে আটক করা হয়েছে। তবে নাম-পরিচয় এখনই বলতে পারছি না, এখনো ডিউটিতে রয়েছি।’
এ ছাড় সকাল থেকে সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে পিকেটিং করেছেন অবরোধ সমর্থনকারীরা। সকালে দক্ষিণ সুরমার মোগলাবাজার এলাকায় মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে পিকেটিং করেন অবরোধকারীর।
এ ছাড়া লালাবাজার, নাজিরবাজার, কামালবাজার এলাকায় পিকেটিংয়ের খবর পাওয়া গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপি এবং জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল লালাবাজার ভরাউট এলাকায় হেলমেট পরে ও গামছায় মুখ বেঁধে সড়ক অবরোধ করে। সেখানে তারা আধাঘণ্টা অবস্থান করে স্থান ত্যাগ করে।
এদিকে সিলেট-জকিগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের মানিকপুর ও কাজলশাহ এলাকায় সকালে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা গাছের শুকনা ডালে আগুন ধরিয়ে পিকেটিং করেন।
সকাল ৭টা থেকে সাড়ে ৭টা পর্যন্ত নগরের নাইওরপুল থেকে কুমারপাড়া সড়কে পিকেটিংয়ের পাশাপাশি বিক্ষোভ মিছিল করেন বিএনপি ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা।
সকালে নগরের শাহপরান এলাকায় পিকেটাররা গাড়ি ভাঙচুর শুরু করেন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাদের ধাওয়া দেয়। পরে অবরোধ-সমর্থকরা পালিয়ে যায়। এ ছাড়া সকালে গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং এলাকায়ও একটি অটোরিকশা ভাঙচুর করেন পিকেটাররা।
এদিকে সিলেটের নগর এলাকা সকালের দিকে সুনসান থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যস্ততা বাড়ছে। রাস্তায় বাড়ছে রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংখ্যাও। যদিও অবরোধের কারণে সিলেট থেকে দুপুর পর্যন্ত দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। তবে ট্রেন যথারীতি গন্তব্যে ছেড়ে গেছে।
সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার মো. আজবাহার আলী শেখ জানান, ‘বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি মোকাবেলায় মহাসড়কসহ সব স্থানে পুলিশের কড়া নজরদারি আছে।’