দক্ষ শ্রমিকের অভাবে কম মজুরিতে কাজ করতে হয় : মসিউর রহমান

প্রকাশিত: ৬:৩৫ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৩, ২০২৪

মোঃ সাইফুল ইসলামঃ 

বিদেশে জনশক্তি রপ্তানিতে দক্ষ শ্রমিকের যোগান নিশ্চিত করার বিকল্প নেই উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান বলেছেন, আমরা দক্ষ শ্রমিক পাঠাতে পারছি না বলে আমাদের শ্রমিকদের কম মজুরিতে কাজ করতে হয়।মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইএসএস ) আয়োজিত ‘দক্ষিণ এশিয়ার শ্রমিক অভিবাসন’ সংক্রান্ত এক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।

মসিউর রহমান বলেন, ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে শ্রমিকের ঘাটতি রয়েছে। আর দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে উদ্ধৃত শ্রমিক আছে। আমরা এটাকে কাজে লাগাতে পারি। আমাদের দক্ষ শ্রমিকের অভাব আছে। সেজন্য আমরা ইউরোপের চাহিদামত শিল্পভিত্তিক দক্ষ শ্রমিক পাঠাতে পারি না। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যে অবকাঠামো ভিত্তিক কাজে আমরা খাপ খেয়ে নিতে পেরেছি। যারা প্রকৃতপক্ষে বিদেশে কাজ করতে যান তাদের দক্ষতার পরিচয় দিতে হয়। দক্ষ ও শিক্ষিত শ্রমিক পাঠানোর বিষয়ে কার্যকরী ভূমিকা নিতে হবে।

বিদেশ থেকে কর্মীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশে বিনিয়োগে ব্যবহার হয় না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর এ উপদেষ্টা বলেন, বিদেশে কর্মরত কর্মীরা তাদের পাঠানো অর্থ দিয়ে জমি কেনে। কারণ তারা জানে না এ টাকা তারা কোথায় বিনিয়োগ করবে। এটা ক্ষতিকারক কিছু নয় কিন্তু এ অর্থ বিনিয়োগে আমাদের আরও সম্ভাবনার কথা চিন্তা করতে হবে। গ্রামের মানুষ যখন শহরে বিনিয়োগ করতে পারে না তখন তারা জমি কেনে। কারণ জমি তাকে নিরাপত্তা, সম্মান ও প্রতিপত্তি দেয়।

বিসের আয়োজিত সেমিনারের একটি সেশনের সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও চেয়ারপারসন ড. তাসনিম সিদ্দিকী।তিনি বলেন, করোনা মহামারির পর শ্রম বাজারের চাহিদা বেড়েছে। কিন্তু সে অনুপাতে শ্রমিকদের অধিকারের সুরক্ষা হয়নি। আমাদের রেমিট্যান্স ক্রমাগত হারে কমেছে। এটার জন্য আমরাও কম বেশি দায়ী। আমাদের এই ঘাটতির জায়গায় অনেক কিছু করার আছে। পলিসিতে বড় একটা সংকট আছে।

তাসনিম সিদ্দিকী বলেন, শ্রম ইস্যুতে আমরা এখনও দ্বিপক্ষীয় উপায়ে কাজ করি। আমরা এখনও বহুপাক্ষিক ফোরামে চেষ্টা করি না। আর আমাদের দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে শ্রম ইস্যুতে একটা অসুস্থ প্রতিযোগিতা চলে। এটা কিন্তু কারও জন্য সুফল বয়ে আনে না। সেজন্য বড় স্কেলে আমাদের কাজ করতে হবে। আর দক্ষিণ এশিয়া থেকে যারা শ্রমিক পাঠায় তারা এক না থাকায় কর্মী গ্রহণ করা দেশগুলো সুবিধা নিচ্ছে। এসব বিষয়ে আমাদের ভাবতে হবে।

অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী অধিবেশনের সভাপতিত্ব করেন বিআইআইএসএস-এর চেয়ারম্যান রাষ্ট্রদূত এ এফ এম গওসোল আযম সরকার। তিনি বলেন, অভিবাসীর ঘামের টাকায় আমাদের অর্থনীতির চাকা সচল থাকে। অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকারের সুরক্ষায় সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা থাকতে হবে। জনসচেতনতা থাকতে হবে সর্ব স্তরে।অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. খায়রুল আলম, বিআইআইএসএস-এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. আবু বকর সিদ্দিক খান প্রমুখ।