‘দস্যুদের কবলে পড়ার পর বাঁচার আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম’- নাবিক ইব্রাহিম

প্রকাশিত: ১:১০ অপরাহ্ণ, মে ১৬, ২০২৪

জেলা প্রতিনিধি,ফেনীঃ  

‘জলদস্যুদের কবলে পড়ার পর বাঁচার আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। মা-বাবা, স্ত্রী ও দুই ছেলেকে আর কখনও দেখতে পাব কি না, সেই চিন্তা শুধু মাথায় আসত। শুরুর দিকে দস্যুদের হাতে জাহাজের অনেক কর্মকর্তাকে নাজেহাল হতে হয়েছে। পরে অবশ্য জলদস্যুরা খারাপ আচরণ করেনি। তবে তাদের কথা সবাইকে শুনতে হতো।’

সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্ত হয়ে পরিবারের সদস্যদের কাছে ফেরার পর এসব কথা বলেন জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর নাবিক ইব্রাহিম খলিল উল্যাহ।

ইব্রাহিম দস্যুদের হাতে প্রায় এক মাস জিম্মি থাকা জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর ২৩ নাবিকের একজন। তিনি ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার মাতুভূঞা ইউনিয়নের মোমারিজপুর গ্রামের আবুল হোসেনের বড় ছেলে। এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে ইলেকট্রিশিয়ান পদে কর্মরত তিনি।মঙ্গলবার বিকেলের দিকে ইব্রাহিম খলিলসহ জাহাজের অন্যান্য নাবিকরা চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালের (এনসিটি-১) জেটিতে পৌঁছান। জাহাজ থেকে নেমেই ফেনী শহরের নাজির রোডে অবস্থিত ভাড়া বাসায় ছুটে আসেন ইব্রাহিম।

বুধবার বিকেলে ইব্রাহিম খলিল উল্যাহর বাসায় গিয়ে দেখা যায়, তাকে দেখতে প্রতিবেশী ও স্বজনেরা ভিড় করেছেন। তার কাছে জলদস্যুদের বিষয়ে নানা বিষয় জানতে চাচ্ছেন। এ সময় জিম্মি অবস্থার স্মৃতি তাদের তুলে ধরেন ইব্রাহিম খলিল উল্যাহ।ইব্রাহিমের মা রৌশনারা বেগম জানান, গত দুই মাস কান্নাকাটি করে দিন কাটিয়েছেন। ছেলের জন্য উদ্বিগ্ন থাকায় খেয়ে না খেয়ে সময় পার হয়েছে তাদের। এখন ছেলেকে কাছে পেয়ে তার ঘরে ঈদের আনন্দ।

ইব্রাহিমের স্ত্রী উম্মে সালমা জানান, এর আগে তার স্বামী একটানা ৮ মাস পর্যন্ত জাহাজে ছিলেন। তবু এবার স্বামীর ঘরে ফেরার আনন্দ অন্য রকম। এতদিন তাদের অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কেটেছে।ইব্রাহিমের বড় ছেলে রেদোয়ান বিন ইব্রাহিম বলেন, রাতে আব্বু বাসায় ফিরেছে। আব্বুকে কাছে পেয়ে কী যে ভালো লাগছে, তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।

ছেলে ঘরে ফেরায় বেশ খুশি ইব্রাহিমের বাবা আবুল হোসেনও। তিনি বলেন, আমার ছেলে দস্যুদের হাতে জিম্মি হয়েছে শুনে সবসময় নামাজ পড়ে তার জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছি। এখন ছেলে ফিরে আসায় আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি। জিম্মিদের মুক্তি করার জন্য সরকার ও জাহাজ মালিক পক্ষকে ধন্যবাদ জানাই।