নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
রোজা শুরুর কয়েকদিন পর হুট করেই ২৯টি পণ্যের দাম বেঁধে দেয় কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। পরের দিন দেশের বিভিন্ন বাজার থেকে খবর আসতে শুরু করে নির্ধারিত দামে কোথাও বিক্রি হচ্ছে না পণ্য। দাম কার্যকরে কোনো মাথাব্যথাও লক্ষ্য করা যায়নি সংস্থাটির। এরপর একদিনও নামেনি বাজার তদারকিতে।এমন পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীরা বলছেন, যথেষ্ট যাচাই-বাছাই ও বিবেচনা ছাড়াই সরকারি সংস্থাটি দাম নির্ধারণ করেছে, যা অসার, অর্থহীন ও কল্পনাপ্রসূত। তারাই কৃষিপণ্যের বাজারে হ-য-ব-র-ল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে।
চলতি বছর রোজার শুরুতে কারণে-অকারণে কৃষিপণ্যের দাম বেড়েছে। ইফতারে প্রয়োজনীয় বেগুন, শসা, লেবু কিনতে হয়েছে কয়েকগুণ দামে। এরপরও কৃষিপণ্যের বাজার তদারকির দায়িত্বে থাকা নিয়ন্ত্রক সংস্থা যেন ‘ভাতঘুমে’ রয়েছে। কৃষিপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ ক্ষমতা দেওয়া হলেও অজুহাতের শেষ নেই সংস্থাটির কর্মকর্তাদের। সার্বিক পরিস্থিতি দেখলে এটাই মনে হবে যে, চলমান এ অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে যেন কোনো দায়ই নেই কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের।
এটা কোথায় চেয়েছে জানি না। গত সাত মাসে ভ্রাম্যমাণ আদালতের জন্য কৃষি বিপণন অধিদপ্তর থেকে কোনো চাহিদা পাইনি। গত এক মাসের তথ্য আমার কাছে সঠিকভাবে আছে। সেখানে কোনো চাহিদা (ম্যাজিস্ট্রেট চেয়ে আবেদন) নেই।- ঢাকা জেলার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম হেদায়েতুল ইসলাম
পঞ্চম রোজার দিন (গত শুক্রবার) হুট করে ২৯ পণ্যের দাম বেঁধে দেয় সংস্থাটি। সংস্থাটির ভাষায় পণ্যের ‘যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ’ করা হয়েছে। সেটি প্রকাশ করে সরকারের অন্য সংস্থাকে বাজার তদারকির অনুরোধ করেই দায় শেষ কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের। সংস্থাটির কোনো কর্মকর্তা কোনো বাজারে একদিনও সে দাম তদারকি করেননি।
যদিও কৃষি বিপণন আইনে এ সংস্থাকে কৃষিপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। ২০১৮ সালের এ আইনে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কার্যাবলিতে বলা হয়েছে, কৃষিপণ্যের মূল্য প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন এ সংস্থার অন্যতম প্রধান কাজ। বাজার নিয়ন্ত্রণে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার এখতিয়ার দেওয়া হয়েছে প্রতিষ্ঠানটিকে। গুদাম বা হিমাগারে খাদ্য মজুতের হিসাব তলব, কৃষিপণ্যের মূল্য বেঁধে দেওয়া, সিন্ডিকেটকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া সংস্থাটির কাজ। এমনকি মার্কেট চার্জ বা ভাড়া নির্ধারণও করে দিতে পারে সংস্থাটি।
এমন পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) সংবাদ সম্মেলন করে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের বেঁধে দেওয়া ২৯টি পণ্যের মূল্য অসার, অর্থহীন ও কল্পনাপ্রসূত বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি। সংগঠনটি বলেছে, যথেষ্ট যাচাই-বাছাই ও বিবেচনা ছাড়াই সরকারি সংস্থাটি দাম নির্ধারণ করেছে। সে জন্য তারা এ প্রজ্ঞাপন স্থগিতের দাবি জানিয়েছে। তা না হলে ব্যবসা বন্ধ করা ছাড়া উপায় থাকবে না বলেও মন্তব্য করেন সংগঠনটির নেতারা। তারা সাত দফা দাবিও উত্থাপন করেন।
এসব বিষয়ে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘মুক্ত বাজার অর্থনীতিতে দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার সুযোগ নেই। চাহিদা ও জোগানের ভিত্তিতে দাম নির্ধারিত হবে। তারপরেও এ সংস্থা মাঝে মধ্যে দাম বেঁধে দেয়। তবে এর সঙ্গে বাজারে সরবরাহ ও দামের কোনো যোগসূত্র থাকে না। একদম অসার, কল্পনাপ্রসূত একটি দাম বেঁধে দেয়।’তিনি অভিযোগ করেন, ‘তারা কোনো উৎপাদক বা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে না। অফিসে বসে এসব করে। কোন এক মান্ধাতা আমলের উৎপাদন খরচ দিয়ে পাইকারি ও খুচরা দাম বসিয়ে দায় সারেন।’
‘আলোচনা না করে এভাবে দাম বেঁধে দেওয়ার কারণে বাজারে পণ্যের সংকট হচ্ছে। বাজারে অভিযান হচ্ছে বিভিন্ন সংস্থার। খুচরা দোকানে জরিমানা হচ্ছে। উৎপাদক পর্যায়ে তদারকি না বাড়িয়ে খুচরা ব্যবসায়ীদের হয়রানি করে লাভ কী? এ সংস্থার ক্ষমতা আছে পাইকারি পর্যায়ে তদারকি করা, সেটা তারা কখনো করে না।’
তথ্যও বলছে, কৃষি বিপণন আইনে বাজার তদারকির পাশাপাশি এ সংস্থার অনেক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। সংস্থার সারাদেশে থাকা বিপণন কর্মকর্তাদের মাধ্যমে কৃষিপণ্যের বাজার সংযোগ সৃষ্টি ও সুষ্ঠু সরবরাহে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে বলা হয়েছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরকে। পাশাপাশি কৃষিপণ্যের চাহিদা ও জোগান নিরূপণ, মজুত ও মূল্য পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করবে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর।
অন্য সরকারি সংস্থাগুলো বলছে, এসব কাজের কিছুই করে না সংস্থাটি। এসব ক্ষমতা ও নির্দেশিত কাজের সবকিছুই রয়ে গেছে কাগজে-কলমে। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের এ সংস্থার ভূমিকা শূন্য। অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় থেকে শুরু করে উপজেলা পর্যন্ত থাকা কৃষি বিপণন কর্মকর্তাদের কেউ-ই যান না বাজারে। যেখানে বাজারে নিত্যপণ্যের ক্রমাগত দাম বাড়ায় সাধারণ মানুষের নাকানিচুবানি অবস্থা, সেখানে তদারকির দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা দিন কাটাচ্ছেন শুয়ে-বসে।
আমাদের কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আমাদের জায়গাটা অনেক বড়, কিন্তু পাওয়ার (ক্ষমতা) নেই। কারণ আমরা ম্যাজিস্ট্রেটের মতো জরিমানা করতে পারি না। সে ক্ষমতা যেদিন পাবো, তখন নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবো।- কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মুখপাত্র আব্দুল মান্নানকাজের মধ্যে শুধু একটি কাজই নিয়মিত করে সংস্থাটি। নিয়মিত ঢাকা শহরের দৈনিক পণ্যমূল্যের একটি তালিকা করে তা পাঠিয়ে দেয় বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থাকে। অবশ্য এই ‘একটিমাত্র’ কাজেও রয়েছে বড় গলদ। প্রতিদিন দামের যে তালিকা দেওয়া হয়, তার থেকে বাজারে প্রকৃত দামে থাকে বড় ফারাক।
দাম বেঁধে দিয়ে একদিনও বাজারে যাননি কর্মকর্তারা
ঢাকার বাজার তদারকি করার কথা ঢাকা জেলা কৃষি বিপণন অফিসের। তবে দাম বেঁধে দেওয়ার পরে একদিনও বাজারে যাননি কোনো কর্মকর্তা। জানতে চাইলে ঢাকা জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা মোবাইল কোর্ট করার জন্য ম্যাজিস্ট্রেট চেয়েছি। পাঁচটি মোবাইল কোর্টের জন্য ডিসি অফিসে লিখছি। এখনো কোনো ম্যাজিস্ট্রেট পাইনি। তাই বাজার তদারকি করা হয়নি। ম্যাজিস্ট্রেট পেলে বাজার তদারকি করবো।’
পরিমাণের সুনির্দিষ্ট তথ্য না থাকলেও ঢাকা জেলায় পাঁচ শতাধিক বাজার রয়েছে, যেখানে কৃষিপণ্য কেনাবেচা হয়। এর সঙ্গে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় পাড়া-মহল্লার অলিগলির অস্থায়ী বাজার হিসাবে ধরলে সংখ্যা হবে হাজারের কাছাকাছি। এত বাজারের মধ্যে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর একটি বাজারেও যায়নি।
শুধু ঢাকা নয়, সারাদেশে কৃষি বিপণনের অফিসগুলোর একই অবস্থা। দেশের আরেক মেট্রোপলিটন এলাকায় খোঁজ নিলে সেখানেও এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, ‘অনেক সময় আমরা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে চেয়ে জেলা অফিসে ম্যাজিস্ট্রেট চাই। কখনো দেয়, তবে বেশিরভাগ সময় দেয় না। আমরা তো বাজারে জরিমানা করতে পারি না, শুধু শুধু ঘুরে কী লাভ! আমাদের পাওয়ার (জরিমানা করার ক্ষমতা) নেই।’
এ বিষয়ে সঙ্গে কথা হয় ঢাকা ও চট্টগ্রামের একাধিক বাজারের ব্যবসায়ী ও তাদের প্রতিনিধিদের। তারা বলেন, বাজারে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) যেভাবে তদারকি করে, তেমনটা দেখা যায় না কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের। বাজারে সাধারণ তদারকি করতেও দেখা যায় না এ সংস্থার কর্মকর্তাদের।
ম্যাজিস্ট্রেট না পাওয়ার অজুহাত
এর আগে একটি অনুসন্ধানে উঠে এসেছিল, ম্যাজিস্ট্রেট চেয়ে না পাওয়া এ সংস্থার কর্মকর্তাদের একটি অজুহাত মাত্র। কারণ ওই সময়ও ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা প্রয়োজনে ম্যাজিস্ট্রেট না পাওয়ার অভিযোগ করেন জাগো নিউজের কাছে।
তাদের এ অভিযোগের বিষয়ে কথা হয় ঢাকা জেলায় বিভিন্ন তদারকি কাজে ম্যাজিস্ট্রেট বণ্টনের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ঢাকা জেলার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম হেদায়েতুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এটা কোথায় চেয়েছে জানি না। গত সাত মাসে ভ্রাম্যমাণ আদালতের জন্য কৃষি বিপণন অধিদপ্তর থেকে কোনো চাহিদা পাইনি। গত এক মাসের তথ্য আমার কাছে সঠিকভাবে আছে। সেখানে কোনো চাহিদা (ম্যাজিস্ট্রেট চেয়ে আবেদন) নেই।’
এবারও ঢাকা জেলার কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের কাছে ম্যাজিস্ট্রেট চেয়ে কোন সংস্থাটির কাছে কাগজ দেওয়া হয়েছে-সেটার প্রমাণ চাইলে তিনি দিতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘কাগজ পরে দিতে পারবো। এখন আমার কাছে নেই।’
গত এক বছরে কখন কোথায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে সে তথ্যও তিনি দিতে পারেননি।পণ্যের দাম কারসাজির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার দৃষ্টান্ত কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের নেই। প্রতিষ্ঠানটিতে জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠা এবং শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন।- ক্যাব সভাপতি গোলাম রহমান
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মাজিস্ট্রেট নেই বলে তারা বাজারে যেতে চায় না। থাকলে ভোক্তা অধিদপ্তরের মতো জরিমানা করে প্রভাব ফেলতে পারতো। আমরা মাঠে নামাতে চাইলেও কার্যকর কিছু করতে পারি না ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার নেই বলে।
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন না ডিজি
কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মাসুদ করিম সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন না। বেশ কয়েকবার তার সঙ্গে দেখা করতে চাইলেও তিনি এই প্রতিবেদককে অনুমতি দেননি। দুদিন অফিসে গেলেও দেখা দেননি। তিনি অন্য গণমাধ্যমের কারও সঙ্গেও কথা বলেন না। মোবাইল ফোনে চেষ্টা করলেও ফোন ধরে সাংবাদিক শুনে সঙ্গে সঙ্গে কেটে দেন। এরপর আর ফোন রিসিভ করেন না।
এ বিষয়ে নাম না প্রকাশ করার শর্তে একজন কর্মকর্তা বলেন, ডিজি কারও সঙ্গে কথা বলেন না। আমাদেরও বলতে দেন না। তার অনুমতি ছাড়া কেউ কোনো কথা বললে সমস্যা হয়।তবে অধিদপ্তর থেকে সিনিয়র বিপণন কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল মান্নানকে গণমাধ্যমের জন্য নিযুক্ত মুখপাত্র বলে জানানো হয়। সামগ্রিক বিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুল মান্নান বলেন, ‘আমাদের কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আমাদের জায়গাটা অনেক বড়, কিন্তু পাওয়ার (ক্ষমতা) নেই। কারণ আমরা ম্যাজিস্ট্রেটের মতো জরিমানা করতে পারি না। সে ক্ষমতা যেদিন পাবো, তখন নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবো।’
কৃষি বিপণন অধিদপ্তর কৃষক ও ভোক্তাদের অধিকার রক্ষায় সম্পূর্ণ অকার্যকর বলে মন্তব্য করেন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান। তিনি বলেন, ‘পণ্যের দাম কারসাজির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার দৃষ্টান্ত কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের নেই। প্রতিষ্ঠানটিতে জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠা এবং শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন।’
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ ও তা বাস্তবায়নের দায়িত্বও কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের। কৃষি বিপণন আইনেই তা স্পষ্ট। জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের আইন অনেক ব্যাপক। শুধু নির্ধারিত দাম কার্যকর করা আমাদের কাজ নয়।’