দিনে ট্রাকে ঘুরে নজরদারি করে ওরা রাতে করতো ডাকাতি

প্রকাশিত: ৭:৫৬ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৫, ২০২৩

পাবনা প্রতিনিধি:

পাবনায় আন্তঃজেলা ডাকাত চক্রের ১০ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি ট্রাকসহ লুণ্ঠিত মালামালও উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেফতাররা হলেন- সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার চন্ডিদাশ গাঁতী গ্রামের সালাউদ্দিন ওরফে সম্রাট (৩৮), একই উপজেলার শিবনাথপুর গ্রামের রুবেল শেখ (৩৪), লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ থানার নলডগী গ্রামের রিয়াজ ওরফে মফু (৩১), নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার হরেকৃষ্ণপুর গ্রামের জাফর আলী (২৯), পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ছোট বালিয়াতলী (লালুয়া) গ্রামের নুর সায়েদ খন্দকার ওরফে শাহেদ (৫৭), বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার কলসকাঠি গ্রামের সোহেল হাওলাদার (২৯), ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার পিনগ্রি গ্রামের মনির ব্যাপারী (৩২), সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার বাসুরিয়া গ্রামের হাফিজুল ইসলাম ওরফে আকাশ (২৯), নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার ইয়াসিন আরাফাত (৪২) এবং পাবনার বেড়া উপজেলার আমিনপুর গ্রামের সেলিম শেখ (৪৯)। আজ শনিবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে পাবনা গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম।

ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, গ্রেফতাররা দুটি ট্রাকে করে মহাসড়কে ঘুরে বেড়ান। দিনের বেলায় বিভিন্ন এলাকায় নজরদারি করে রাতে ডাকাতি করে থাকেন। ডাকাতির মালামাল কেনার মহাজনও আছে জেলায় জেলায়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, গত ৯ নভেম্বর রাতে পাবনার খাস আমিনপুর এলাকায় ব্যবসায়ী ফরমান সরদারকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তার মুদি দোকানে ডাকাতি করে একদল ডাকাত। এ ঘটনায় পরদিন ১০ নভেম্বর আমিনপুর থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায় পাবনা গোয়েন্দা পুলিশ। তারা গত দুই দিনব্যাপী অভিযান চালিয়ে আন্তঃজেলা ডাকাতদলের হোতা ও পরিকল্পনাকারী সেলিম হোসেনসহ চক্রের ১০ সদস্যকে গ্রেফতার করে।
এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি ট্রাক, ২৯ বস্তা চাল, ২০০ লিটার মবিল, গাড়ির টায়ার ৫টি, গ্যাস সিলিন্ডার ২৩টি, নগদ ২ লাখ ১০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতারদের বরাত দিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম জানান, তারা দুটি ট্রাকে করে মহাসড়কে ঘুরে বেড়ায়। দলে সদস্য থাকে ১২ থেকে ১৫ জন। তাদের একেকটি ট্রাকই যেন ঘরবাড়ি। একবারে ৮-১০ দিনের জন্য বাড়ি থেকে বের হয়ে যায় তারা। তারপর চলতে থাকে বিভিন্ন জেলায় রাস্তার আশপাশের বাজারে ডাকাতি। ডাকাতি করার আগে তারা দিনের বেলায় ওই এলাকায় নজরদারি করে, আর রাতের বেলায় ডাকাতি করে থাকে।

তিনি বলেন, ডাকাতি করা মালামাল কেনার মহাজনও আছে জেলায় জেলায়। তাই ডাকাতরা তাদের কুকর্ম নির্বিঘ্নে চালিয়ে যেতে পারে। ডাকাতদলের এ সকল সদস্যদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন জেলায় ডাকাতি, দস্যুতা, চুরি, ছিনতাইসহ একাধিক মামলা রয়েছে। শনিবার বিকেলে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।