
ক্রীড়া ডেস্ক:
শনিবার প্রিমিয়ার ফুটবল লিগের ফিরতি পর্বে মোহামেডান ২-১ গোলে হারিয়েছে বসুন্ধরা কিংসকে। জোড়া গোল করেছেন মালির ফুটবলার মোহামেডানের অধিনায়ক সুলায়মান দিয়াবাতে। তার গোল দুটো মোহামেডান এবং কিংসের ফুটবলার কিংবা কোচ কর্মকর্তা, সবার চোখে লেগে আছে। কিংসের কর্মকর্তারা ভুলতে পারছেন না। দিয়াবাতে যেভাবে গোল করেছেন সেটাকে তারা আগুনে ঝলসে যাওয়া মনে করছেন। ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার এভাবে ভুল করবে, আর জাতীয় দলের খেলা গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণ এভাবে লেজেগোবরে হয়ে যাবেন সেটা কল্পনা করতে পারছেন না তারা।
মোহামেডান টেন্ট থেকে বলা হচ্ছে, শ্রাবণ যেভাবে খেলে সেটা নতুন কিছু নয়। একটা ক্লাবের তিন নম্বর গোলরক্ষক হওয়ার মতো ফুটবলার জাতীয় দলে সহজেই ঠাঁই পান। জাতীয় দলের কোচ হ্যাভিয়ের কাবরেরা কীভাবে শ্রাবণদের মতো ফুটবলারকে জাতীয় দলে খেলিয়ে তরতাজা রাখছেন তা বুঝতে পারছেন না তারা। শুধু পরশু দিনের ম্যাচই নয়, প্রিমিয়ার লিগের প্রথম পর্বেও সুলায়ামান দিয়াবাতের গোলে মোহামেডান হারিয়েছিল বসুন্ধরা কিংসকে। দুই ম্যাচে ৬ পয়েন্ট পেয়েছে মোহামেডান, দিয়াবাতে গোল করলেন ৩টা। বসুন্ধরা কিংসকে শিরোপার দূরে সরিয়ে দেওয়ার নায়ক দিয়াবাতে। কিংসের ঘরে প্রায় কোটি টাকা পারিশ্রমিকের ফুটবলার রয়েছেন। কিন্তু দিয়াবাতের মতো ভালো পারফরম্যান্স করার কেউ আছে কি না, প্রশ্ন রয়েছে।
কিংসকে পুড়িয়ে দেওয়ার জন্য দিয়াবাতে যেন একাই যথেষ্ট। মাঠের লড়াইয়ে যতটা না আগুন পারফরম্যান্স করতে পারেন, মাঠের বাইরে তার উলটো। শান্ত স্বভাবের একজন মানুষ। খুব কম কথা বলেন তিনি। মোহামেডান ক্লাবে গেলে তার দেখা পাওয়া কঠিন। ক্লাবেই থাকেন, তারপরও সহজেই তার নাগাল পাওয়া যায় না, সংবাদমাধ্যম দেখলে এড়িয়ে যান। সব সময় নিজের গণ্ডির মধ্যে থাকেন।
অত্যন্ত ভদ্র এবং একরোখা একজন মানুষ। প্রচারের ধারেকাছে নেই। সংবাদমাধ্যম চাইলেই গিয়ে কথা বলতে পারবেন না। প্রচারের আশা করেন না। কথা বলতে গেলে পরে পরে বলে সরে যান। অথচ এই সব সময় খেলোয়াড়দের সঙ্গে হাসি মুখে কথা বলছেন। সবার সঙ্গে দুষ্টুমি করছেন, হাসি-ঠাট্টা করছেন। যখনই সংবাদমাধ্যম দেখছেন, তখনই বদলে যাচ্ছেন। কথার হেরফের করেন না দিয়াবাতে। আল্লাহ ভীরু এই ফুটবলার নিয়মিত নামাজ আদায় করেন। জুমার নামাজের জন্য দূরের মসজিদে যাচ্ছেন। ঢাকার বাইরে খেলতে গেলে গাড়ি থামিয়ে মসজিদে নামাজ আদায় করতে চলে যান।
পরশু কিংসের বিপক্ষে তার গোলে এগিয়ে ছিল মোহামেডান। ২৫ মিনিটে কিংসের রাকিবের গোলে সমতা আসে। কিন্তু রাকিবের হাতে বল লেগেছে বলে বার বার দাবি করেন দিয়াবাতে। তিনি রেফারি আলমগীর সরকারকে বার বার বলেছেন রাকিবের হ্যান্ডবল হয়েছে। বিরক্ত হয়ে রেফারি আলমগীর সরকার তাকে হলুদ কার্ড দেখান। যারা দিয়াবাতেকে চেনেন তারা সব সময় বলেন, দিয়াবাতে একটু অন্যরকম মানুষ। ছোট-খাটো বিষয় নিয়ে মিথ্যা বলেন না। দিয়াবাতেকে নেওয়ার জন্য একাধিক ক্লাব হাত বাড়িয়েছিল। কিন্তু মোহামেডান ক্লাবের প্রতি তার ভালোবাসাই ৫ বছর ধরে তাকে একই দলে রেখেছে।