সেলিনা আক্তার:
পরপর দুই দিনে ৮১ পয়েন্ট বৃদ্ধির পর ফের গতকাল বুধবার প্রায় ৭২ পয়েন্ট হারিয়েছে প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইএর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স। তালিকাভুক্ত ৭৬ শতাংশের বেশি শেয়ারের দর পতনে সূচকের এমন পতন হয়েছে। এর আগে টানা পাঁচ দিনে ২৬১ পয়েন্ট হারিয়েছিল সূচকটি। গত মঙ্গলবার যেখানে সিমেন্ট ছাড়া বাকি সব খাতের শেয়ারদর বেড়েছিল, সেখানে গতকাল সব খাতের অধিকাংশ শেয়ারই দর হারিয়েছে। পৃথকভাবে ছয় খাতের গড় শেয়ারের দর পতন হয়েছে ৩ থেকে সাড়ে ৪ শতাংশ পর্যন্ত।
এদিকে তালিকাভুক্ত ইফাদ অটোসের মাধ্যমে রয়্যাল এনফিল্ড নামে জনপ্রিয় মোটরসাইকেল ব্র্যান্ডের বাংলাদেশে বাজারজাত শুরুর পর এর শেয়ারদর প্রায় ১০ শতাংশ বেড়েছে। এ ছাড়া আরও দুই কোম্পানির শেয়ারদর ৫ শতাংশের ওপর বেড়েছে। বিপরীতে অন্তত ৬৩ কোম্পানির শেয়ারদর ৫ থেকে ৯ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে।
জানতে চাইলে শেয়ারবাজার বিশেষজ্ঞ এবং রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিনিয়োগ সংস্থা আইসিবির চেয়ারম্যান আবু আহমেদ সমকালকে বলেন, সুদের হার বৃদ্ধি ইস্যু ছাড়া এ মুহূর্তে শেয়ারবাজারের জন্য তিনি খারাপ কিছু দেখছেন না। অর্থনীতিতে প্রাণসঞ্চার হচ্ছে। তিনি বলেন, ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা সুদের হারকে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বড় বিবেচনায় না নিলেও বড় বিনিয়োগকারীদের জন্য এর প্রভাব বেশি। যখন তারা দেখেন ব্যাংকে টাকা রেখেই যেখানে ১২ থেকে ১৩ শতাংশ মুনাফা পাচ্ছেন, তখন কেন ঝুঁকি নেবেন। বড় বিনিয়োগই বাজারের গতিপথ ঠিক করে। তা ছাড়া যারা একসময় বিনিয়োগের নামে জুয়া খেলত, তারা অনেক আগেই শেয়ার বিক্রি করে টাকা তুলে নিয়ে গেছে। এ কারণে বাজারে চাহিদা কমেছে। তবে মনে হচ্ছে, বর্তমান অবস্থান থেকে পতন ত্বরান্বিত হওয়ার আশঙ্কা কম।
গতকালের লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বীমা খাতের ৫৮ কোম্পানির শেয়ারের দর পতন হয়েছে ৩ শতাংশের ওপর। সিমেন্ট, সিরামিক, তথ্য-প্রযুক্তি এবং ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের ২৮ কোম্পানির গড়ে সাড়ে ৩ শতাংশ হারে দরপতন হয়েছে। কাগজ ও ছাপাখানা খাতের ৬ কোম্পানির দর পতন হয়েছে গড়ে ৪ দশমিক ৬৭ শতাংশ। এর বাইরে আর্থিক প্রতিষ্ঠান, প্রকৌশল, বস্ত্র, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য এবং টেলিযোগাযোগ খাতের পৃথকভাবে গড়ে দুই থেকে আড়াই শতাংশ পর্যন্ত দর পতন হয়েছে। এ খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানির সংখ্যা ১৫৩।
গতকাল ডিএসইতে প্রায় ৩২২ কোটি টাকা মূল্যের শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। এর মধ্যে একক কোম্পানি হিসেবে তওফিকা ফুডের (লাভেলো) সাড়ে ২৩ কোটি টাকার এবং একক খাত হিসেবে ব্যাংকিং খাতে সর্বাধিক পৌনে ৭৭ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে।