নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাষ্ট্রীয় দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) চেয়ারম্যান ও কমিশনার পদে কারা আসছেন, তা নিয়ে চলছে আলোচনা। যদিও এই নিয়োগ প্রক্রিয়া এখনও শুরু হয়নি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সংস্থাটির চেয়ারম্যান ও কমিশনার পদের জন্য অন্তত ১৩ জনের নাম আলোচনা হচ্ছে।
বিধান অনুযায়ী, দুদক চেয়ারম্যান ও দুই কমিশনার পদে নিয়োগের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সার্চ কমিটি গঠন হবে। ওই কমিটি পদ তিনটির জন্য যোগ্য ব্যক্তি খুঁজে বের করবে। গত মঙ্গলবার পদত্যাগ করেন দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ, কমিশনার মো. জহুরুল হক ও মোছা. আছিয়া খাতুন।
জানা গেছে, এই তিনটি পদে নিয়োগে শিগগিরই সার্চ কমিটি গঠন করবে সরকার। কমিটি ছয়জনের নাম জমা দেবে রাষ্ট্রপতির কাছে। রাষ্ট্রপতি ওই তালিকা থেকে তিনজন নির্বাচন করবেন। তাদের মধ্য থেকে একজনকে দেবেন চেয়ারম্যানের দায়িত্ব।
পাঁচ সদস্যের সার্চ কমিটিতে থাকবেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি, হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারপতি, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সদ্য বিদায়ী সচিব ও সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান।
তবে সার্চ কমিটি নাম প্রস্তাব করার আগেই দুদক চেয়ারম্যান ও কমিশনার হিসেবে অন্তত ১৩ জনকে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে বিভিন্ন মহলে। তারা হলেন– সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. আবদুল মতিন ও বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সাবেক সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞা ও মো. আবদুল আজিজ, সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) ইকবাল করিম ভূঁইয়া, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী, মেজর জেনারেল (অব.) নিজাম উদ্দিন, সাবেক আইজিপি শহুদুল হক ও আহমেদ নাজমুল হোসেইন, সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি মেজবা উন নবী, ঢাকা মহানগর আদালতের অবসরপ্রাপ্ত বিচারক মোতাহার হোসেন, দুদকের সাবেক মহাপরিচালক ও বিজ্ঞান জাদুঘরের মহাপরিচালক মুনীর চৌধুরী এবং প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সাবেক সচিব এ এইচ এম নুরুল ইসলাম।
অভিযোগ রয়েছে, রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তির কারণে দুদক এতদিন নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারেনি। তাই রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসেবে এবার দুদকের শীর্ষ পদে দল-নিরপেক্ষ ব্যক্তিকে বসানোর দাবি উঠেছে। এ বিষয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান সমকালকে বলেন, ‘বিগত দিনে রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ দেওয়ার কারণে দুদক কমিশন দলমত নির্বিশেষে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারেনি। মুখ দেখে, পরিচয় দেখে কাজ হয়েছে। এ কারণে দুদক জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে।’
এদিকে চেয়ারম্যান ও দুই কমিশনারের পদ শূন্য হওয়ায় দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন গত বুধবার দুদকের সব মহাপরিচালক, পরিচালক, প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালকে নিয়ে বিশেষ সমন্বয় সভা করেন। প্রতিটি বিভাগ ও সব জেলা কার্যালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা ভার্চুয়ারি সভায় অংশ নেন। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, অনুসন্ধান, মামলা ও চার্জশিট অনুমোদন ছাড়া কমিশনের অন্য সব কাজ স্বাভাবিক চলবে। কেননা, কমিশনার ছাড়া কোনো অভিযোগ অনুসন্ধান, মামলা দায়ের ও চার্জশিট অনুমোদন করার সুযোগ দুদক আইনে নেই।