চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে গা ঢাকা দেন দেশের বিভিন্ন সিটি করপোরেশনের মেয়ররা। আওয়ামী লীগ সমর্থিত নগর কর্তারা পালিয়ে গেলে তাদের অপসারণের সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্র্বতীকালীন সরকার। এরপর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অপসারণ আদেশে দেশের ১২টি সিটি করপোরেশন মেয়রবিহীন হয়।
এবার ব্যতিক্রম দৃশ্য দেখলো চট্টগ্রামের মানুষ। ভোটের সাড়ে তিন বছর পর আদালতের রায়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র হিসেবে শপথ নিয়েছেন বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন। দেশে এই মুহূর্তে একমাত্র মেয়র তিনি।
এদিকে ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন হয়। ওই নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী। যদিও ওই সময় ফলাফল জালিয়াতির অভিযোগ করেছিলেন বিএনপির প্রার্থী ও চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন। এরপর ২৪ ফেব্রুয়ারি ফলাফল বাতিল চেয়ে মামলা করেছিলেন বিএনপির এ নেতা।
যদিও নির্বাচনের পর মেয়র পদে বসেন রেজাউল করিম। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের পতন হলে ৫ আগস্ট থেকে গা ঢাকা দেন তিনি। পরে ১৯ আগস্ট রেজাউলকে অপসারণ করে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়।
পরে চসিক নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে ফলাফল বাতিল চেয়ে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেনের দায়ের করা মামলায় তাকে মেয়র ঘোষণা করেছেন আদালত। একইসঙ্গে আগামী ১০ দিনের মধ্যে গেজেট প্রকাশ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গত ১ অক্টোবর নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল এবং যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ খাইরুল আমীনের আদালত এ রায় দেন।
আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে ৮ অক্টোবর নির্বাচন কমিশন থেকে সংশোধিত প্রজ্ঞাপন জারি করে মো. রেজাউল করিমের স্থলে শাহাদাত হোসেনকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত মেয়র বলে ঘোষণা দেওয়া হয়।
১৯৬৬ সালের ২ জুন চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার হরলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন শাহাদাত হোসেন। ছাত্রদলের মধ্য দিয়ে রাজনীতিতে যুক্ত হওয়া বিএনপি নেতা ডা. শাহাদাত হোসেন নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সাহসী ভূমিকা রাখেন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ছাত্রদল সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এমবিবিএস পাস করার পর ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ড্যাবের রাজনীতিতে সক্রিয় হন।
চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও পরে সভাপতি ছিলেন। বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকও করা হয়েছিল ডা. শাহাদাতকে। বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকও তিনি।