দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বীর সৈনিকদের শ্রদ্ধা জানালেন কূটনীতিকরা

প্রকাশিত: ৬:০৫ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১১, ২০২৩

কুমিল্লা প্রতিনিধি:

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নিহত বিশ্বের ১৩টি দেশের ৭৩৭ জন বীর যোদ্ধার আত্মার শান্তি কামনায় প্রার্থনা ও শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন সাত দেশের কূটনীতিকরা।

আজ শনিবার সকাল ১০ টার দিকে কূটনীতিকরা কুমিল্লার ময়নামতি ক্যান্টনমেন্টে অবস্থিত ওয়ার সিমেট্রি হলিক্রসের পাদদেশে প্রার্থনা ও ফুলেল শ্রদ্ধাঞ্জলির মধ্য দিয়ে সৈনিকদের স্মরণ করেন। পরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত সৈনিকদের স্মরণে কূটনীতিকরা স্মৃতিসৌধে দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে নীরবতা পালন করেন। এ সময় বিউগলে করুণ সুর বেজে ওঠে।

এর আগে শনিবার সকালে কমনওয়েলথভুক্ত দেশের কূটনীতিক ও তাঁদের প্রতিনিধিরা ময়নামতির যুদ্ধ সমাধিস্থলে সমবেত হন। কুমিল্লার এই ওয়ার সিমেট্রিতে শ্রদ্ধা জানান যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, কানাডা, ভারত, পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত ও তাঁদের প্রতিনিধিসহ বাংলাদেশের সামরিক প্রতিনিধিরা।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস, ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত সারাহ কুক, জাপান রাষ্ট্রদূত ইয়োমা কিমিনরি, অস্ট্রেলিয়ার ডেপুটি হাই কমিশনার নার্দিয়া সিম্পসন, বাংলাদেশের নিযুক্ত ভারতের প্রতিরক্ষা প্রতিনিধি বিগ্রেডিয়ার এম এস সাবারওয়াল, পাকিস্তানের প্রতিনিধি সাইয়েদ আহমেদ মারুফসহ ব্রিটিশ কাউন্সিল ও বিভিন্ন দেশের মোট ৬৮ জন অতিথি।

শ্রদ্ধা নিবেদন অনুষ্ঠানের পর রাষ্ট্রদূতরা সমাধিস্থল ঘুরে দেখেন।

শ্রদ্ধা নিবেদনের শুরুতে কোরআন থেকে তেলাওয়াত এবং বাইবেল পাঠের পর ফাদার ক্যাট্টিক প্রার্থনা অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন।

এ সময় যুদ্ধে নিহত সৈনিকদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করেন কূটনীতিকরা বলেন, ‘এই দিনটি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের জন্য যারা নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন আমরা তাদের স্মরণ করছি। আজকে আমরা স্মরণ করছি সেসকল নারী-পুরুষকে যারা বিশ্বযুদ্ধে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন।
আমরা সমাধিস্থলটি ঘুরে দেখেছি। এখানে কানাডিয়ানসহ ব্রিটিশ, বাঙালি, অস্ট্রেলিয়ান, ইন্ডিয়ান, আফ্রিকানসহ অনেক দেশের ব্যক্তির সমাধি রয়েছে। তারা নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন আমাদের প্রজন্মের জন্য, যাতে আমরা শান্তিতে সমৃদ্ধিশীল একটি পৃথিবীতে বাস করতে পারি। আমরা তাদের কখনো ভুলবো না।
এদিকে, বাংলাদেশের পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন কুমিল্লা সেনানিবাসের ৩৩ ইনফ্যান্টি ডিভিশনের প্রতিনিধিরা।

প্রসঙ্গত, কুমিল্লার ময়নামতি ওয়ার সিমেট্টিতে ১৯৪১ সাল থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত ৭৩৮ জন সেনাকে সমাহিত করা হয়। ১৯৬২ সালে ১ জনের দেহাবশেষসহ সমাধির মাটি তার স্বজনরা যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে গেলে এখানে বর্তমানে সমাধি রয়েছে ৭৩৭ জনের। কমনওয়েলথ গ্রেভ ইয়ার্ড কমিশন এই যুদ্ধ সমাধি ক্ষেত্র তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করে আসছে। প্রতি বছরের নভেম্বর মাসের ১১ তারিখে কমনওয়েলথভুক্ত দেশের হাইকমিশনাররা তাদের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে তাদের স্মরণ করেন।