নতুন আতঙ্কে রেলপথের যাত্রীরা

প্রকাশিত: ৬:৫৯ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৭, ২০২৩

এসএম দেলোয়ার হোসেন:
নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও সরকারের পদত্যাগের একদফা দাবিতে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো এখনো অনঢ় অবস্থানে রয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর ডাকা চলমান হরতাল-অবরোধ কর্মসূচীকে সফল করতে এবার রেলপথকে টার্গেট করে নতুন কৌশলে মাঠে নেমেছে হরতাল-অবরোধকারীরা। বড় ধরনের নাশকতার লক্ষ্যে জনমনে ভীতি ছড়াতে রাতের অন্ধকারে রেললাইন কেটে রেলযোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হচ্ছে। খুলে নেওয়া হচ্ছে ফিশপ্লেটের নাটবল্টু। এতে রেলের বগি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে হতাহতের সংখ্যাও বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে অজানা আতঙ্কে রয়েছেন রেলপথের যাত্রীরা। এদিকে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, রেলে নাশকতার ঘটনায় যাত্রীদের নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিতে নাশকতাকারীদের নতুন এ অপকর্ম ও কৌশলকে কাজে লাগিয়ে রেলের নিরাপত্তায় নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে যেকোনো ধরনের নাশকতাকারীদের শনাক্ত ও গ্রেফতারে দেশের সব থানাগুলোকে সতর্ক বার্তা দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। গতকাল রোববার (১৭ ডিসেম্বর) পুলিশ ও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও সরকারের পদত্যাগের একদফা দাবিতে ধাপে ধাপে দেশব্যাপী হরতাল-অবরোধ কর্মসূচী পালন করছে বিএনপিসহ সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো। আলোচনার টেবিলে বসতে বারবার ইসি তাগিদ দিয়ে চিঠি পাঠালেও সাড়া না দিয়ে চলমান আন্দোলন কর্মসূচীতে অনঢ় অবস্থানে রয়েছে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো। দেশব্যাপী দলগুলোর ডাকা ১১ দফায় হরতাল-অবরোধের প্রথম দিনে গত বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) ভোর ৪টার দিকে নতুন কৌশলে গাজীপুরে জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ রেলসড়কের ভাওয়াল রেলস্টেশনের বনখড়িয়া এলাকার রেললাইন কেটে ফেলে দুর্বৃত্তরা। এ সময় রাজেন্দ্রপুর স্টেশন ছেড়ে আসা ঢাকাগামী মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এতে রেলের ৫টি বগি লাইনচ্যুত হয়ে উল্টে গেলে মো. আসলাম মিয়া (৪৫) নামের একজন নিহত ও ১১ জন আহত হন। এতে জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ সড়কে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে আহত ৮ যাত্রীকে উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে যাত্রপথের নিরাপদ বাহন হিসেবে পরিচিত রেলপথে চলাচলকারী যাত্রীদের মধ্যে অজানা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার পরপরই জেলা প্রশাসকসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ ও রেলওয়ের কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ঘটনায় পৃথক ৩টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি ইতোমধ্যেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তাদের নিজ নিজ কার্যক্রম ও সুপারিশমালা তৈরি করছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।
এ ঘটনায় আহত যাত্রীরা নিজউ পোস্টকে বলেন, দেশের একস্থান থেকে অন্যস্থানে যাতায়াতের ক্ষেত্রে নিরাপদ বাহন হিসেবে সবার পরিচিত রেলভ্রমণ। দীর্ঘপথে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তা ব্যবস্থার অপ্রতুলতার কারণেই সেই রেললাইন কেটে ফেলে দুর্বৃত্তরা। এতে যাত্রাপথে রেলভ্রমণে আমরা সাধারণ যাত্রীরা এখন অজানা আতঙ্কে রয়েছি।
ফায়ার সার্ভিস ও গাজীপুর জেলা প্রশাসন জানায়, ওইদিন দুষ্কৃতিকারীরা রাতে রেললাইনের ২০ ফুট অংশ কেটে ফেলে। এতে ট্রেনটি চিলাই ব্রিজে আসা মাত্র ইঞ্জিনসহ ৭টি বগি লাইনের পাশের নিচু জমিতে পড়ে যায়। এতে একজন নিহত ও ১১ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে ৭ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে গাজীপুর জেলা প্রশাসক আবুল ফাতেহ মো. শফিকুল ইসলাম নিউজ পোস্টকে বলেন, জনমনে ভীতি ছড়াতে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে অবরোধের সমর্থনে নাশকতাকারীরা গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করে রেল লাইনের বেশ কিছু অংশ কেটে ফেলে। যার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
গাজীপুরের পুলিশ সুপার কাজী শফিকুল আলম জানান, দোষীদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে কমলাপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস আহাম্মেদ নিউজ পোস্টকে বলেন, এ ঘটনার ৩৮ ঘন্টা পর গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রেলওয়ে থানার ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পিডবিøও) বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে রেলওয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। তিনি বলেন, রেলে নাশকতার এটি একটি বড় ঘটনা। তাই মামলা দায়েরের বিষয়ে সতর্কতার সঙ্গে এজাহার করতে হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ২৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. হাসান আজমল ভূঁইয়াসহ ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ। এরপরও জড়িত অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।


এদিকে এ ঘটনার রেশ না কাটতেই গত বুধবার দিবাগত রাত ১০টার দিকে নীলফামারীর ডোমারে রেললাইনের ৭২টি ফিশপ্লেট খুলে নাশকতার চেষ্টা করেছে দুর্বৃত্তরা। উপজেলার বাগডোকরা প্রধানপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ডোমার-চিলাহাটিতে প্রায় দেড় ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল।
স্থানীয়রা জানান, ঘটনাটি টের পেয়ে সেখানে শত শত মানুষ জড়ো হন। পরে চিলাহাটি থেকে খুলনাগামী সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেনটি আসছিল। এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত মানুষ বিভিন্নভাবে সংকেত দিলে ট্রেনটি থেমে যায়। এতে বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায়।
জোড়াবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাখওয়াৎ হাবীব বাবু নিউজ পোস্টকে বলেন, ঘটনাটি আমার ইউনিয়নের সীমানায় ঘটেছে। আমি গিয়ে রেল লাইনের বিভিন্ন স্থানে ফিশপ্লেট খোলা দেখতে পেয়েছি। এলাকাবাসীর সচেতনতায় বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে ট্রেনটি।
নীলফামারী স্টেশন মাস্টার ওবায়দুর রহমান রতন বিষয়টি নিশ্চিত করে নিউজ পোস্টকে বলেন, লাইন মেরামতের পর প্রায় দেড় ঘণ্টা পর ট্রেনটি সেখান থেকে ছেড়ে আসে। অপরদিকে রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা বরেন্দ্র এক্সপ্রেসও দেড় ঘণ্টা আটকা পড়ে ডোমার স্টেশনে।
ডোমার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমুল আলম নিউজ পোস্টকে বলেন, লাইনের প্রায় ৭২টি ফিশপ্লেট খোলা হয়েছে। ডোমারের ওপরে দিয়ে রেললাইনের একটি বড় অংশ গেছে। সরকারকে অবহিত করবো যেন রেললাইনে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।


এদিকে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানায়, চলমান বিরূপ রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নিরাপদ ট্রেন পরিচালনার জন্য রেলপথে প্রতি ঘণ্টা পেট্রোলিং এবং রাতে নিবিড় পাহারার ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। গত বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের সহকারী চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট মোহাম্মদ আবু বক্কর সিদ্দিকী স্বাক্ষরিত এক পত্রে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।


ওই নির্দেশনায় বলা হয়, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় রেলওয়ে ট্রাকগুলো ওয়েম্যান, আরএনবি ও আনসার সদস্যদের মাধ্যমে দিনে এবং রাতে সার্বক্ষণিক পাহারার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যাতে প্রতি এক ঘণ্টায় সর্বনিম্ন একবার করে পেট্রোলিং করা হয়। এ বিষয়ে সার্বক্ষণিক যোগাযোগের জন্য প্রতিটি কন্ট্রোল অফিসে কর্তব্যরত ওয়েম্যান, আরএনবি ও আনসার স্টাফদের মোবাইল নম্বর সংরক্ষণ করতে হবে। এছাড়া বিশেষ করে রাত ১১টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত রেলওয়ে ট্র্যাকগুলো নিবিড়ভাবে পাহারার ব্যবস্থার বিষয়ে মনিটরিং করতে হবে। প্রয়োজনবোধে রেলওয়ে পুলিশ, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী ও এসএসএই/ওয়েগণের অধীন স্টাফদের সমন্বয়ে অ্যাডভান্স পাইলটিংয়েরে ব্যবস্থা করতে হবে। এক্ষেত্রে মোটর ট্রলি ও লোকাল ট্রেনের ইঞ্জিনের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। স্টেশন মাস্টার, পরিদর্শকরা ও এসএসএই/ওয়েগণ নিজ নিজ এলাকায় থেকে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করে নিয়মিত কন্ট্রোল অফিসকে অবহিত করবেন।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, প্রত্যেক ডিইএন, এইএন এবং এসএসএই/ওয়েগন তাদের অধীন ওয়েম্যানদের এলাকা উল্লেখ করে তাদের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর ডিভিশনাল কন্ট্রোলে সরবরাহ করবেন, সেসব স্টাফদের ডিভিশনাল কন্ট্রোলের মোবাইল নম্বরগুলো সরবরাহ করবেন এবং কন্ট্রোলের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষার বিষয়ে নির্দেশনা দেবেন।
নির্দেশনায় বলা হয়, সুষ্ঠু ও নিরাপদ ট্রেন পরিচালনার স্বার্থে উপরোক্ত নির্দেশনাগুলো যথাযথ পরিপালন করে অত্র দপ্তরকে অবহিত করার নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।


সংশ্লিষ্টরা জানায়, বর্তমান রাজনৈতিক সহিংসতার কারণ দেখিয়ে রাতে ট্রেনের গতি কমিয়ে ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে রেখে ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ফলে প্রতিটি ট্রেন যাত্রায় বিলম্ব হচ্ছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের সহকারী চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট মোহাম্মদ আবু বক্কর সিদ্দিকী স্বাক্ষরিত এক পরিপত্রে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
ওই পরিপত্রে বলা হয়, চলমান বিরূপ রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নিরাপদ ট্রেন পরিচালনার জন্য পূর্বাঞ্চলের ৯টি সেকশনে নিয়মিত ট্র্যাক পেট্রোলিং করতে হবে। একইসঙ্গে রাত্রিকালীন সময়ে অর্থাৎ রাত ১১টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত চলাচলরত ট্রেনগুলো নিয়ন্ত্রিত গতিতে অর্থাৎ ঘণ্টায় ৪০-৫০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন পরিচালনা করতে হবে।
সেকশনগুলো হচ্ছে- ঢাকা-আখাউড়া, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার, চট্টগ্রাম-আখাউড়া, শায়েস্তাগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল-সিলেট, ময়মনসিংহ-সম্ভুগঞ্জ, গৌরিপুর-ময়মনসিংহ-শ্যামগঞ্জ, আখাউড়া-ভৈরববাজার, টঙ্গী-ভৈরববাজার এবং জয়দেবপুর-গফরগাঁও। এছাড়া ঘন কুয়াশা ও ট্র্যাকে ট্রেন নিরাপত্তার জন্য গত কয়েকদিন ধরে ট্রেন চলাচলে বিলম্ব হচ্ছে বলে জানিয়েছেন লোকোমাস্টারা।


আজ রোববার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, যাত্রীরা তাদের নিজ নিজ গন্তব্যে যেতে ট্রেনের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন থেকে প্রতিটি ট্রেন অন্তত ২-৩ ঘণ্টা বিলম্বে ছেড়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন যাত্রীরা। এতে সময় ক্ষেপণের মতো ভোগান্তিতে পড়েন বলে জানান তারা। যাত্রীরা আরও বলেন, নাশকতাকারীরা রেলপথে যে ধরনের অপকর্ম করছে, তাতে আমরা আমাদের জীবন নিয়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় রয়েছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন নিউজ পোস্টকে বলেন, ট্রেনগুলো ঢাকায় দেরিতে পৌঁছেছে বলে দেরিতে ছেড়ে যাচ্ছে। এছাড়া বিশেষ কোনো কারণ নেই।
এর আগে চলতি বছরের ২ জানুয়ারি সকালে কক্সবাজারের রামু উপজেলার রশিদনগর ইউনিয়নের কাহাতিয়া পাড়ায় রেললাইনে রিটের নাটবল্টু খুলে ফেলে দুর্বৃত্তরা।


এদিকে আজ রোববার দুপুরে গাজীপুর মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (উত্তর) উপ-কমিশনার মোহাম্মদ কামাল নিউজ পোস্টকে বলেন, গাজীপুরে রেললাইন কেটে নাশকতার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ২৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. হাসান আজমল ভূঁইয়াসহ ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে গাজীপুর মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেফতার কাউন্সিলর মো. হাসান আজমল ভূঁইয়া গাজীপুর মেট্রোপলিটন সদর থানার রাজবাড়ী উত্তরপাড়া এলাকার মৃত বিল্লাল হোসেন ভূঁইয়ার ছেলে। গ্রেফতারকৃত অন্যরা হলেন- নেত্রকোণার মদন থানার বারই বাজার এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে জান্নাতুল ইসলাম (২৩), ময়মনসিংহের ভালুকা থানার বান্দীয়া এলাকার তাইজুদ্দীনের ছেলে মেহেদী হাসান (২৫), গাজীপুর মেট্রোপলিটন সদর থানার ভানোয়া এলাকার তারিকুল ইসলাম দিপুর ছেলে জুলকার নাইন আশরাফি ওরফে হৃদয় (৩৫), উত্তর ছায়াবিধি এলাকার মৃত সোলায়মান মোড়লের ছেলে শাহানুর আলম (৫৩), কানাইয়া পূর্বপাড়া এলাকার মৃত ওমেদ আলী মোল্লার ছেলে মো. সাইদুল ইসলাম (৩২) ও মধ্য ছায়াবিধি এলাকার আফতাফ উদ্দিনের ছেলে সোহেল রানা (৩৮)।

আজ রোববার সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখাপর্যন্ত পুলিশ সদর দপ্তরে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে এআইজি (মিডিয়া) ইনামুল হক সাগর নিউজ পোস্টকে বলেন, বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর ডাকা দেশব্যাপী চলমান হরতাল-অবরোধের নামে কেউ নাশকতার চেষ্টা করলে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না। শুধু রেলের নাশকতাই নয়, দেশে যেকোনো ধরণের নাশকতামুলক কর্মকাÐ ঠেকাতে তৎপর রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
তিনি বলেন, গাজীপুর ও নীলফামারীতে রেললাইনে যে নাশকতার ঘটনা ঘটেছে, তা গ্রহণযোগ্য নয়। ঘটনার পরপরই রেলপথ সংলগ্ন দেশের সকল জেলা-থানা, হাইওয়ে এবং ফাঁড়ি পুলিশসহ মাঠ পর্যায়ের সকল পুলিশ সদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত অন্যান্য সংস্থার সদস্যদের ইতোমধ্যেই বিশেষ সতর্ক বার্তা প্রেরণ করা হয়েছে। হরতাল-অবরোধ ছাড়াও অন্যান্য ইস্যুকে কেন্দ্র করে দেশে যেকোনো ধরনের নাশকতাকারীকে ধরতে প্রস্তুত থাকার কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া পুলিশ সদর দপ্তর থেকে নাশকতাকারীদের ধরিয়ে দিতে পুরষ্কার ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি বলেন, আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীকে বার্তা দিতে চাই- যারা নাশকতা ঘটাচ্ছে, তাদের চিহ্নিত করে পুলিশে সোপর্দ করুন, নতুবা তাদের বিষয়ে তথ্য দিন। তথ্যদাতাদের নাম-পরিচয় গোপন রাখা হবে। এছাড়া কেউ নাশকতা ঘটানোর চেষ্টা করলে বা এমন ঘটনায় কাউকে সন্দেহ হলে এমনকি কারো নজরে এলে তাৎক্ষণিকভাবে ৯৯৯ এ ফোন করে নতুবা সংশ্লিষ্ট এলাকার নিকটস্থ থানা-ফাঁড়ি ও হাইওয়ে থানা পুলিশকে অবহিত করার জন্য সর্বসাধারণের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) ইনামুল হক সাগর।