নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
নতুন কারিকুলামের মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে এখনো শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে ধোঁয়াশা রয়েছে। তবে নাগাদ এই মূল্যায়ন পদ্ধতি প্রকাশ হয়; অপেক্ষায় আছেন তারা। অভিভাবক ও শিক্ষকরা বলছেন, শিক্ষাবর্ষের পাঁচ মাস চলছে, কবে নতুন কারিকুলামের মূল্যায়ন প্রকাশ করা হবে, কবে অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া হবে সেটাই এখন চিন্তার বিষয়।
দেশে গত শিক্ষাবর্ষ থেকে নতুন শিক্ষাক্রম শুরু হয়। বর্তমানে প্রাথমিকে প্রথম থেকে তৃতীয় এবং ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণিতে শিক্ষার্থীরা নতুন শিক্ষাক্রমে পড়াশোনা করছে। বর্তমানে যারা নবম শ্রেণিতে পড়ছে, তারা নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী প্রথম বারের মতো এসএসসি পরীক্ষা দেবে। পর্যায়ক্রমে ২০২৭ সালে দ্বাদশ শ্রেণিতে চালু হবে নতুন শিক্ষাক্রম।
নতুন কারিকুলাম প্রণয়নের সঙ্গে যে মূল্যায়ন পদ্ধতি চালু করেছিল, তাতে লিখিত পরীক্ষা পদ্ধতি না থাকায় এ নিয়ে তীব্র আপত্তি ছিল অভিভাবকদের। এমনকি শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) অনেক কর্মকর্তা কিছু অংশ হলেও যাতে লিখিত পরীক্ষা থাকে সে বিষয়েও সরব ছিলেন।এমনই এক পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন ও মূল্যায়ন পদ্ধতি চূড়ান্ত করার বিষয়ে কমিটি গঠন করে।
রাজধানীর একটি স্কুলের শিক্ষক একরামুল হক বলেন, অভিভাবকরা সবাই তাকিয়ে আছেন মূল্যায়ন পদ্ধতির দিকে। তাদের অভিযোগ, তাদের সন্তানরা বাসায় পড়াশোনা করে না। বিভিন্ন গণমাধ্যমের সূত্রে জেনেছি নতুন মূল্যায়নে পরীক্ষা পদ্ধতি থাকবে। এ কারণে আরও আগ্রহ তৈরি হয়েছে। কিন্তু এই মূল্যায়ন নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় খুবই ধীরগতিতে চলছে। অথচ শিক্ষাবর্ষের পাঁচ মাস চলছে। কবে প্রকাশ হবে। কবে এই মূল্যায়নের আলোকে অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া হবে, এখনো বলতে পারছি না।
নতুন শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থী মূল্যায়নের বড় অংশ হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধারাবাহিকভাবে মূল্যায়ন। সারা বছর ধরে চলা বিভিন্ন ধরনের শিখন কার্যক্রমের ভিত্তিতে। অধিকাংশ অভিভাবক মূল্যায়নে লিখিত পরীক্ষা রাখার দাবি জানিয়ে আসছেন।জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সদস্য (কারিকুলাম) অধ্যাপক মশিউজ্জামান গতকাল বলেন, এ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই। কারণ শিক্ষার্থীরা যা শেখার তা শিখছে। আর মূল্যায়ন নিয়ে তারা চিন্তা করবে কেন? যখন মূল্যায়ন পদ্ধতি পাঠানো হবে, তখন শিক্ষকরা তাদের মূল্যায়ন করবেন।
অধ্যাপক মশিউজ্জামান বলেন, আমরা মূল্যায়ন পদ্ধতির খসড়া কমিটির কাছে জমা দিয়েছে। এখন এটি মন্ত্রণালয় অনুমোদন করে পাঠালে আমরা পরবর্তী করণীয় ঠিক করব। তারপর আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটির (এনসিসিসি) সভায় অনুমোদনের জন্য তা তোলা হবে। সেই কমিটির অনুমোদন পেলে নতুন মূল্যায়ন কাঠামো সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হবে। এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই।