নবজাতকের মৃত্যু: সেন্ট্রাল হাসপাতালের দুই চিকিৎসক কারাগারে

প্রকাশিত: ৭:১৫ অপরাহ্ণ, জুন ১৫, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীর গ্রিন রোডের সেন্ট্রাল হসপিটালে ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যু এবং মা মৃত্যুঝুঁকিতে পড়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার দুই চিকিৎসকের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। কারাগারে যাওয়া আসামিরা হলেন- ডা. শাহজাদী মুস্তার্শিদা সুলতানা ও ডা. মুনা সাহা।

আজ বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফারাহ্ দিবা ছন্দার আদালত এ আদেশ দেন। এর আগে এদিন তাদেরকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর আসামিরা স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ধানমন্ডি থানার পরিদর্শক (নিরস্ত্র) রাসেল। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আফনান সুমীর আদালত আসামি শাহজাদীর ও ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফারাহ দিবা ছন্দার আদালত আসামি মুনার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

এদিকে তাদের জামিন চেয়ে আবেদন করেন আইনজীবীরা। আসামি পক্ষে ঢাকা বারের সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন শুনানি করেন। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফারাহ দিবা ছন্দার আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আদালতে সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা মাহফুজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, তিন মাস ধরে সেন্ট্রাল হাসপাতালের গাইনি ও প্রসূতি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. সংযুক্তা সাহার অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন মাহবুবা রহমান আঁখি। এমনকি তার শারীরিক অবস্থা স্বাভাবিক ছিল বলেও চিকিৎসক জানিয়েছিলেন। নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমেই সন্তান প্রসব সম্ভব বলে আশ্বস্ত করেছিলেন ডা. সংযুক্তা সাহা।
প্রসব ব্যথা ওঠায় গত ৯ জুন রাত ১২টা ৫০ মিনিটে সেন্ট্রাল হাসপাতালে ডা. সংযুক্তার অধীনে মাহবুবাকে ভর্তি করা হয়। তখন ডা. সংযুক্তা হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন না। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, সংযুক্তা সাহা আছেন এবং ওটিতে (অপারেশন থিয়েটার) কাজ করছেন।

উল্লেখ্য, সেন্ট্রাল হসপিটালে ভুল চিকিৎসা ও কর্তৃপক্ষের প্রতারণায় মাহবুবা রহমান আঁখি নামে এক প্রসূতি মৃত্যুঝুঁকিতে পড়েছেন বলে অভিযোগ করেন তার স্বামী ইয়াকুব আলী সুমন। তার দাবি, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় মারা গেছে তাদের নবজাতক সন্তানও। এ ঘটনায় বুধবার (১৪ জুন) ধানমন্ডি থানায় ‘অবহেলাজনিত মৃত্যু’র একটি মামলা দায়ের করেন ইয়াকুব আলী। মামলায় ডা. শাহজাদী, ডা. মুনা, ডা. মিলি, সহকারী জমির, এহসান ও হাসপাতালের ম্যানেজার পারভেজকে আসামি করা হয়। এছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকেও আসামি করা হয়েছে। মামলা দায়েরের পর গতকাল রাতেই ডা. শাহজাদী ও ডা. মুনাকে হাসপাতাল থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।