কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে নাগেশ্বরী-ফুলবাড়ী সড়কে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে, যার ফলে নাগেশ্বরী, ফুলবাড়ী ও ভুরুঙ্গামারী উপজেলার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। স্থানীয়রা এই সড়কে পুনরায় যাত্রীবাহী বাস চালুর দাবি জানাচ্ছেন।
জানা গেছে, নাগেশ্বরী থেকে ফুলবাড়ীর দূরত্ব ১৭ কিলোমিটার, লালমনিরহাট ৩১ কিলোমিটার এবং বিভাগীয় শহর রংপুরের দূরত্ব ৬৯ কিলোমিটার। দ্বিতীয় ধরলা সেতু নির্মাণের আগে ফুলবাড়ী উপজেলার মানুষ ফুলবাড়ী-নাগেশ্বরী সড়ক দিয়ে নাগেশ্বরী হয়ে জেলা শহর কুড়িগ্রামে যেত বিভিন্ন প্রয়োজনে। তাদের সুবিধার্থে ২০০৮ সালে উত্তর ধরলা মটর মালিক সমিতি এই রুটে ৬টি বাস চালু করে।
পরবর্তীতে কুড়িগ্রাম জেলা মটর মালিক সমিতি কুড়িগ্রাম-নাগেশ্বরী-ফুলবাড়ী রুটে আরও ৬টি বাস চালু করে। তবে, আশানুরূপ ব্যবসা না হওয়ায় অধিকাংশ বাস নাগেশ্বরী পর্যন্ত এসে ফুলবাড়ী যেতে অপারগতা প্রকাশ করে। এ নিয়ে উত্তর ধরলা মটর মালিক সমিতি ও কুড়িগ্রাম জেলা মটর মালিক সমিতির মধ্যে টানাপোড়ন শুরু হলে এক সময় কুড়িগ্রাম জেলা মটর মালিক সমিতি এই সড়ক থেকে তাদের বাসগুলো তুলে নেয়। অল্প কিছুদিন পরে উত্তর ধরলা মটর মালিক সমিতিও এই রুটে তাদের বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়। সেই থেকে এ পর্যন্ত এই সড়কে বাস চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।
২০১৮ সালে দ্বিতীয় ধরলা সেতু জনগণের চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার পর এই সড়কে যাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। নাগেশ্বরী-ভুরুঙ্গামারীর অনেকেই এই পথে লালমনিরহাট বড়বাড়ী হয়ে রংপুর অথবা লালমনিরহাটে ট্রেন ধরে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাতায়াত করেন। ফুলবাড়ীর মানুষও নাগেশ্বরীতে আসে। ফলে এই সড়কে ব্যক্তিগত যানবাহন চলাচল বেড়েছে, এবং অন্যরা অটো, সিএনজি দিয়ে যাতায়াত করেন।
নাগেশ্বরীর প্রদীপ, সৌরভ, বাবু, মানিক মিয়া, মিজানুর, নুরুজ্জামান মিয়া, ভুরুঙ্গামারীর দুলাল, মিন্টু, রহমতসহ অনেকেই পুনরায় এই রুটে বাস সার্ভিস চালুর দাবি জানিয়েছেন। তাদের মতে, এতে পথের দূরত্ব ও সময় উভয়ই সাশ্রয় হবে, এবং দ্রুত এটি বাস্তবায়নের প্রয়োজন রয়েছে।
কুড়িগ্রাম জেলা বাস মিনিবাস ও মাইক্রোবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন সাহা জানান, পর্যাপ্ত যাত্রী না থাকায় বাস মালিকরা সে সময় এই সড়কে বাস চলাচল বন্ধ করে দেন। তবে, দ্বিতীয় ধরলা সেতু উদ্বোধনের পরে যাত্রী সংখ্যা বাড়ায় তারা কিছুদিনের জন্য বাস চালিয়েছিলেন। কিন্তু লালমনিরহাট ঢোকার মুখে রতœাই বেইলি ব্রিজ ভেঙে যাওয়ায় আবারও বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে, ব্রিজটি বাস চলাচল উপযোগী হলেই পুনরায় বাস সার্ভিস চালু হতে পারে।