নাটোরে যৌতুকের দাবিতে অন্তঃসত্ত্বার মুখে বিষ ঢেলে পিটিয়ে হত্যা, স্বামীর যাবজ্জীবন

প্রকাশিত: ৬:২১ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৩০, ২০২৩

নাটোর প্রতিনিধি:

নাটোরে যৌতুকের দাবিতে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী হাসনা হেনাকে পিটিয়ে হত্যার দায়ে স্বামী শরিফুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ড ও ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। এ মামলায় আরো তিনজনকে খালাস দেন আদালত।

আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এই রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত শরিফুল ইসলাম নাটোর সদর উপজেলার দিঘাপতিয়া ইউনিয়নের করোটা গ্রামের সামসুল হকের ছেলে।

আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আনিসুর রহমান জানান, ২০১৪ সালে নাটোর সদর উপজেলার দিঘাপতিয়া ই্উনিয়নের করোটা গ্রামের সামসুল হকের ছেলে শরিফুল ইসলামের সঙ্গে পাশ্ববর্তী গোয়ালডাঙ্গা গ্রামের জয়নাল আবেদীনের মেয়ে হাসনা হেনার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য হাসনা হেনাকে শারীরিক নির্যাতন শুরু করে স্বামীসহ পরিবারের সদস্যরা। নির্যাতন সইতে না পেরে ২০১৫ সালের ৫ ডিসেম্বর তাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। পরে যৌতুকের জন্য আর কোনো দিন নির্যাতন করবে না অঙ্গীকার করলে তাদের পুনরায় বিবাহ হয়।

সংসার ফেরার পর হাসনা হেনা সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা হন। কিন্তু শরিফুল ও তার পরিবারের সদস্যদের নির্যাতন বন্ধ হয় না।
তিনি আরো জানান, নির্যাতনের প্রতিবাদ করায় ২০১৭ সালের ৩১ আগস্ট রাতে হাসনা হেনাকে পিটিয়ে হত্যার পর মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে পালিয়ে যায় পরিবারের লোকজন। পরের দিন সকালে স্থানীয়দের খবরে মেয়ের বাড়িতে গিয়ে ঘরের বারান্দায় পড়ে থাকা হাসনা হেনার মরদেহ দেখেন মা মর্জিনা বেগম।

এ ঘটনায় মর্জিনা বেগম বাদী হয়ে হাসনা হেনার স্বামীসহ চারজনের নামে আদালতে মামলা করেন। দীর্ঘ ছয় বছর মামলার সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে আসামির উপস্থিতিতে আদালত আজ মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে অপরাধীকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন। অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার অপর তিন আসামিকে খালাস দেন বিচারক।
মামলার রায়ে বাদীপক্ষ সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের এই আইনজীবী।