নিজের কিডনি দিয়েও স্বামীকে বাঁচাতে পারলেন না স্ত্রী

প্রকাশিত: ৩:৩১ অপরাহ্ণ, মার্চ ১, ২০২৫

বগুড়া প্রতিনিধি:

 

দীর্ঘদিন ধরে কিডনি রোগে ভুগছিলেন বগুড়ার নন্দীগ্রামের আব্দুস সালাম। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ভারতে নেওয়া হয়। সঙ্গে যান তার স্ত্রী ফারহানা ইয়াসমিন। চিকিৎসকরা দ্রুত সময়ের মধ্যে কিডনি প্রতিস্থাপন করার পরামর্শ দেন। এই পরামর্শ শুনে, স্বামীকে বাঁচানোর জন্য নিঃসংকোচে নিজের দুটি কিডনির একটি কিডনি দান করার সিদ্ধান্ত নেন ফারহানা। কিন্তু, নিয়তি ছিল নিষ্ঠুর। সফল অস্ত্রোপচারের পরও শুক্রবার ( ২৮ ফেব্রুয়ারি) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

হাজারো সম্পর্কের বিচ্ছেদের গল্পের মাঝেও, সালাম-ফারহানা দম্পতির এই ঘটনা ভালোবাসার এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার সদর ইউনিয়নের দীঘিরপাড় গ্রামের এই দম্পতির এই ঘটনা হৃদয়স্পর্শ করেছে গ্রামবাসীর। ভারতের একটি হাসপাতালে সফল কিডনি প্রতিস্থাপনের পর কিছুদিন স্বাস্থ্যের উন্নতি হলেও, পরবর্তীতে সংক্রমণসহ নানা জটিলতা দেখা দেয়।

এই দম্পতির একমাত্র পুত্রসন্তান আব্দুল্লাহ আল রাফিউল বগুড়া জিলা স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী। বাবার মৃত্যুতে গভীর শোকে মুহ্যমান। পরিবারের সদস্যরা জানান, স্ত্রীর একমাত্র ইচ্ছা ছিল স্বামীকে সুস্থ জীবন দেওয়া, কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে তা সম্ভব হলো না। এলাকাবাসী ও আত্মীয়স্বজনরা এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন এবং স্ত্রীর আত্মত্যাগকে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শনিবার (১ মার্চ) ভারতীয় সময় বেলা ১১টার ফ্লাইটে তার লাশ নিয়ে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে রওনা দিবে সালামের স্ত্রী ফারহানা।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম কামাল, আব্দুস সালামের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে বলেন, তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার চিকিৎসার জন্য এলাকার সকল মানুষ এবং তার বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করেছে। আমরা তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি সেই সঙ্গে শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।

তিনি আরও বলেন, সালামের স্ত্রী তার স্বামীর প্রতি যে ভালোবাসা দেখিয়েছে তা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।