নির্বাচন কবে হবে সুনির্দিষ্ট ঘোষণা প্রয়োজন: আনু মুহাম্মদ
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
কবে নাগাদ নির্বাচন হবে, কী কী পদ্ধতিতে অন্তর্র্বতী সরকার অগ্রসর হবে, সেটার ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট ঘোষণা প্রয়োজন। এটি যদি দীর্ঘায়িত হয়, তাহলে অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বলে মন্তব্য করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি আয়োজিত ‘অন্তর্র্বতী সরকারের আশু করণীয় প্রস্তাব ১০০ দিনে কতটা বাস্তবায়ন হলো?’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, অনেকগুলো সংস্কার আছে, যেটা দীর্ঘমেয়াদী সংস্কার, সেটা নির্বাচিত একটি স্থায়ী সরকার ছাড়া বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। তবে অন্তর্র্বতী সরকার হিসেবে অনেকগুলো ভিত্তি তৈরি করতে পারে এই সরকার। সেটা বিভিন্ন কমিশন হয়েছে, তার মধ্য দিয়ে তৈরি হবে। সেই প্রক্রিয়াটা চলতে পারে। কিন্তু নির্বাচনের ব্যাপারে একটি প্রস্তুতি বা পথনকশা বা উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। কবে নাগাদ নির্বাচন হবে, সেটার ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট ঘোষণা প্রয়োজন। যথাযথভাবে এই ঘোষণা না এলে, এটি যদি দীর্ঘায়িত হয়, তাহলে একটি অনাস্থা বা অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সেটা থেকে বাঁচার জন্য একট সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ বা পথনকশা ঘোষণা করা উচিত বলে আম মনে করি।তিনি আরও বলেন, কতদিনের মধ্যে নির্বাচন চাই, সেই তারিখটা তো নির্দিষ্ট করে আমরা বলতে পারবো না। তবে আমরা মনে করি, সব কাজই আপনি যদি গুরুত্বের সঙ্গে নেন এবং দক্ষতার সঙ্গে করেন তাহলে যত সময় লাগবে, গুরুত্বে সঙ্গে না নিলে তার থেকে বেশি সময় লাগবেই। আমি মনে করি, সরকার গুরুত্বের সঙ্গে এটি গ্রহণ করবে এবং যথা শিগগিরই সম্ভব সেই বিষয়ে জনগণকে পরিষ্কার বক্তব্য দেবে। নইলে একটি অনিশ্চয়তা তৈরির সম্ভাবনা আছে। আমরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে কিছু অস্থিরতা দেখতে পাচ্ছি৷ সেগুল যাতে বন্ধ হয়৷ সেজন্য সরকারের এই উদ্যোগ নেওয়া দরকার।
তিনি বলেন, জনগণের প্রতি শ্রদ্ধা ও তাদের মর্যাদা দিয়ে সরকারের ভূমিকা পালন করলে আমি মনে করি, অনেক সমস্যার সমাধান এমনিতেই হবে। সমাজের মধ্যে সহিংসতা কিংবা জোর-জবরদস্তির প্রবণতা থেকে আমরা রক্ষা পাবো।সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সংবিধানে স্বৈরশাসন বা ক্ষমতা ও সম্পদের কেন্দ্রিকতার জন্য যে ধারাগুলো যোগ করা হয়েছে, সেগুলো বাতিল করা আমাদের প্রধান দাবি। আরেকটা হচ্ছে, বাংলাদেশে যে বিভিন্ন জাতি, ধর্ম, লিঙ্গ, ভাষার মানুষ আছে, তাদের প্রতি যেনো কোনো বৈষম্য না হয়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। তাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি থাকতে হবে। এবং আমাদের বহুজাতি, বহুধর্মীয় যে চরিত্র সেটাকে নিশ্চিত করতে সংবিধানে। আর শিক্ষা, চিকিৎসাকে মৌলিক জনগণের সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। সেভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে৷ কারণ বিগত কোনও সরকার সেটি নিশ্চিত করতে পারেনি।এর আগে ‘অন্তর্র্বতী সরকারের আশু করণীয়’ নিয়ে ১৩ দফা প্রস্তাব দিয়েছিল গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি। অন্তর্র্বতী সরকারের ১০০ দিনে সেই প্রস্তাবগুলো কতটুকু বাস্তবায়ন হয়েছে— সেই বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে আলোকপাত করেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।
এছাড়া আগামী শনিবার (২৩ নভেম্বর) বিকাল ৩টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘বৈচিত্রের ঐক্য’ নামের বাংলাদেশের সব শ্রেণিগত, ধর্মীয়, লিঙ্গীয়, জাতিগত, পেশাগত ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের মানুষের সমাবেশ হবে বলে জানান অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।