নির্মাণের বিভিন্ন উপকরণের শুল্কহার বাড়ানোর প্রস্তাব: ‘বাড়াবে’ বাড়ি-ফ্ল্যাটের খরচ

প্রকাশিত: ৩:১৩ পূর্বাহ্ণ, জুন ২, ২০২৩

আগামী অর্থবছরের বাজেটে এমন সব খাতে কর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে, যাতে বাড়ি ও ফ্ল্যাট তৈরির খরচ বেড়ে যাবে বলে মনে করছে আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাব।

বৃহস্পতিবার ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব করে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

এতে রাজউক (ঢাকা) ও সিডিএ (চট্টগ্রাম) আওতাধীন এলাকায় এবং এর বাইরে জমি নিবন্ধনের সময় ‘যৌক্তিকভাবে’ উৎসে কর হার বাড়ানোর কথা বলেছেন। সিমেন্টসহ গৃহ নির্মাণের বিভিন্ন উপকরণের শুল্কহার বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।

বাজেটে সিমেন্টের ক্লিংকার আমদানিতে প্রতি টনের বিপরীতে কর ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭০০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বাণিজ্যিক আমদানিকারকদের জন্য কর ৭৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯৫০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এতেও বেড়ে যেতে পারে সিমেন্টের দাম।

লিফট আমদানিতে শুল্ক বেড়ে হচ্ছে তিন গুণ। এই পণ্যটির ব্যবহার বহুলাংশে আমদানির উপর নির্ভরশীল। তবে দেশেও এখন উৎপাদন শুরু হয়েছে। তাই আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক বাড়াতে চায় সরকার। এখন বহুতল ভবনগুলোর ক্ষেত্রে লিফট অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। আর এর শুল্ক বাড়লে বাড়বে দাম।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, “বর্তমানে কিছু দেশীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান লিফট উৎপাদন শুরু করেছে। কিন্তু সম্পূর্ণ অবস্থায় আমদানিকৃত লিফট এবং উত্তোলক যন্ত্র আমদানিতে ৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক বিদ্যমান রয়েছে। দেশে ভারী শিল্পের প্রসারের স্বার্থে এসব পণ্য আমদানিতে বিদ্যমান আমদানি শুল্ক বৃদ্ধি করে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করছি।”
এর বাইরে অ্যালুমিনিয়াম ও অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি কিচেন বা অন্যান্য গৃহস্থালী তৈজসপত্র, স্যানিটারিওয়্যার এবং যন্ত্রাংশের মূল্য সংযোজন করহার ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭.৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে বাজেটে।

বহুতল বিপণি বিতানে চলন্ত সিঁড়ি স্থাপনের খরচও বেড়ে যাবে। কারণ এটি আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক ১ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব এসেছে বাজেটে।

বাংলাদেশের আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাব বলছে, জমির নিবন্ধনসহ নির্মাণ সামগ্রীর উপর নানা কর ও শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। এর ফলে বেড়ে যাবে ফ্ল্যাটের দাম।
বাজেট ঘোষণার পরপর সংগঠনটির পক্ষ থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “বাজেটে জমি রেজিস্ট্রেশনে উৎসে আয়কর বাড়ছে। সিমেন্ট, পাথর, টাইলস, লিফট, সিরামিক, গ্লাস, সুইচ-সকেট, ক্যাবল, কিচেনওয়্যারসহ কমপক্ষে ১০-১২টি পণ্যের উপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এই বাজেট পুনর্বিবেচনা না করলে আগামীতে জমি এবং ফ্ল্যাটের দাম বৃদ্ধি পাবে ও এর প্রভাব ফ্ল্যাট ক্রেতাদের ওপর পড়বে।”

রিহ্যাব সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন বলন, “যেসব পণ্যের দাম বাড়বে, তার ক্রেতা হচ্ছি আমরা যারা ফ্ল্যাট তৈরি করি। আর সব শেষ এই পণ্যের দাম গিয়ে পড়বে ফ্ল্যাট ক্রেতার উপর। এই সব পণ্যের দাম সহনশীল না রাখলে আবাসন শিল্পে সংকট তৈরি হবে।