ভারতে বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাসের বিরোধীতায় সরব দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনাকে ঘিরে ভারতজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
রোববার মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ওই হামলার পরপরই দেশটির সোশ্যাল মিডিয়ায় হামলার ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে।
এক ভিডিওতে দেখা যায়, হামলায় আহত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনের সভানেত্রী ঐশি ঘোষের রক্তাক্ত মাথার দৃশ্য।
এসব দৃশ্য ভাইরালের পর পরই মুম্বাইয়ের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার শিক্ষার্থী রাস্তায় নেমে আসে।
সম্প্রতি পাস হওয়া এনআরসি সংশোধিত আইন বাতিলের দাবিসহ এ হামলা ঘটনার নিন্দা জানায় শিক্ষার্থীরা। রাতেই দিল্লি, মুম্বাই হয়ে কলকাতা, পুনেসহ ভারতের বিভিন্ন শহরে এ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, ভিন্নমত দমন করতে বিজেপি সমর্থিত সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের কর্মীরা এই হামলা চালিয়েছে। আর সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের মদদেই এই হামলা হয়েছে।
হামলার তীব্র নিন্দা ও জড়িতদের বিচার দাবিতে রোববার মধ্যরাতে মোমবাতি মিছিল বের করে আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতি সংহতি জানায়।
এদিকে পুনের ফিল্ম ও টেলিভিশন ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীরা অবিলম্বে মুখোশধারীদের সনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনতে দাবি জানিয়ে রাস্তায় নেমেছে।
বিক্ষোভ করেছে কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও।
আনন্দবাজারের খবর, পরিবেশ শান্ত করে নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়কে খুলে দিতে দ্রুত পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছে তারা।
নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলার নিন্দা জানিয়েছে জামিয়া টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনও (জেটিএ)। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় প্রশাসন মুখোশধারীদের সহায়তা দিয়েছে বলে অভিযোগ এনেছেন তারা।
প্রসঙ্গত রোববার রাতে মুখোশ পড়ে নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলে হামলা চালায় একদল দুর্বৃত্ত। এ হামলায় শিক্ষক-ছাত্র মিলিয়ে ৪২ জন আহত হন। বিজেপি সমর্থিত ছাত্র সংগঠন অখিল ভারত বিদ্যার্থী পরিষদকে (এবিভিপি) এ হামলার জন্য দায়ী করা হচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, রোববার রাতে হঠাৎ করে লাঠি ও বড় বড় পাথর নিয়ে নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ঢুকে পড়ে অর্ধশতাধিক মুখোশধারী। একের পর এক হোস্টেলে তাণ্ডব চালাতে থাকে তারা। মুহূর্তের মধ্যে পুরো ক্যাম্পাসে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আতঙ্কিত শিক্ষার্থীদের তাড়া করে এ পাথর ছুড়ে মারে মুখোশধারীরা।
সূত্র: আনন্দবাজার, টাইমস অব ইন্ডিয়া, এনডিটিভি, এএনআই