নোয়াখালীর পরিস্থিতি ভালো না, গ্রামাঞ্চলে ত্রাণের জন্য হাহাকার

প্রকাশিত: ১১:২৮ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ২৭, ২০২৪

নোয়াখালী প্রতিনিধি:

টানা ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে পানির চাপ বেড়েই চলছে উপকূলীয় জেলা নোয়াখালীতে। বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে পানি বেড়ে পানিবন্দী মানুষের সংখ্যা বেড়ে ২৫ লাখ ছাড়িয়েছে। এখানকার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে দেখা দিয়েছে ত্রাণের সংকট। এ জেলায় মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) পর্যন্ত বন্যার পানিতে ডুবে ৩ শিশু ও বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে ৩ যুবকসহ মোট ৬ জনের জনের মৃত্যু হয়েছে।
জেলা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সোমবার (২৬ আগস্ট) সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১০২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে নোয়াখালীতে। আরো ভারী বর্ষণের সম্ভাবনাও রয়েছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুন্সী আমির ফরসাল জানিয়েছেন জেলায় ১ সেমি পানি বেড়েছে। এতে নতুন করে বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে
ওইদিন দুপর পর্যন্ত ১ হাজার ৯৮টি সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে ১ লাখ ৮২ হাজার ৩০৯ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। সন্ধ্যা পর্যন্ত তা ২ লাখ ছাড়িয়েছে। এর চেয়ে দ্বিগুণ বানভাসি মানুষ স্বজন ও পরিচিতজনদের বাসা-বাড়িতে নিরাপদ আশ্রয়ে আছেন। মান-সম্মানের কারণে এখনো হাজার হাজার পরিবার পানির মধ্যে অবর্ণনীয় দুঃখ কষ্টে থেকেও না যেতে পারে আশ্রয়কেন্দ্রে না পারে স্বজন ও পরিচিতজনদের আশ্রয়ে।

রোববার রাতে নোয়াখালীতে কর্তব্যরত সেনা সদস্যরা কবিবরহাট উপজেলার র্নুউত্তমপুর গ্রাম থেকে ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা সাজেদা আক্তার (২৪) ও সেনবাগ থেকে ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ফারজানা আক্তারকে (৩২) উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করান।

সোমবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে ও বিকালে বন্যাকবলিত বেগমগঞ্জ উপজেলার আমিন বাজার ও মীরওয়ারিশপুরে পল্লী বিদ্যুতের দুই লাইনম্যান ইব্রাহিম (২৫) ও জাকির হোসেন (৩৩) বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে মারা যান। এ দুই লাইনম্যান বিদ্যুৎ সংযোগের লাইন মেরামতের সময় ঘটনাস্থলে মারা যান বলে জানিয়েছেন বেগমগঞ্জ পল্লী বিদুতের জিএম জাকির হোসেন। এ নিয়ে জেলায় পনিতে ডুবে ৩ শিশু ও বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে ৩ যুবকসহ ৬ জনের জনের মৃত্যু হয়েছে।

এ দিকে সড়কে যানবাহনে যাতায়াত ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ায়, দোকানপাট বন্ধ থাকায়, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বেড়ে যাওযায় মানুষে দুর্ভোগ আরো বেড়েছে। কর্মহীন মানুষের কষ্টের শেষ নেই। একই চিত্র বন্যাকবলিত নোয়াখালীর সেনবাগ, বেগমগঞ্জ, সোনাইমুড়ী, চাটখিল, সদর ,কবিরহাট, কোম্পানীগঞ্জ ও সুবর্ণচর উপজেলার বাস্তব চিত্র।

অন্যদিকে জেলা শহর ও তার আশপাশের আশ্রয়কেন্দ্রে একাধিকবার সরকারি-বেসরকারি সহায়তা সংস্থা তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। তবে গ্রামাঞ্চলে যাতায়াত ব্যবস্থা খারাপ হওয়ায় ত্রাণসামগ্রী পৌঁছাতে না পারায় বানভাসি মানুষের হাহাকার বেড়েছে।