পঞ্চগড় প্রতিনিধি:
তাপমাত্রার পারদ বাড়লেও হিমেল বাতাসের ঠান্ডায় কাবু উত্তরের জেলা পঞ্চগড়; দিনভর ঠান্ডা বাতাসে বিপর্যস্ত করে উঠেছে জনজীবন। বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের লোকজন। হিমেল বাতাসের কারণে কাজে যেতে পারেননি অনেক।
বুধবার (৮ জানুয়ারি) বিকেল ৩টায় দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ২২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের দেওয়া তথ্য অনুসারে তাপমাত্রা বাড়লেও প্রকট শীত বাড়িয়েছে হিমেল বাতাস। স্থানীয়রা বলছেন বরফঝরা বাতাস বইছে এ অঞ্চলে।
সকাল থেকেই দিনভর দেখা গেছে মেঘলা আকাশের আড়ালে ঢাকা রয়েছে সূর্য। ঘন কুয়াশা না থাকলেও মেঘের আবরণে জেলার প্রকৃতি দেখা গেছে কুয়াশা ঢাকার মতো। বাতাসের কারণে দিনভর স্থানীয়দের গায়ে গরম কাপড় পড়ে থাকতে দেখা গেছে। তীব্র শীতে প্রভাব পড়েছে গ্রামাঞ্চলের গৃহপালিত প্রাণীদের উপর। শীতের তীব্রতায় রক্ষায় থেকে রক্ষা করতে গরু-ছাগল পরানো হচ্ছে পুরোনো কাপড় কিংবা চটের ব্যাগ।
বিকালে আরশেদ আলী, আলাউদ্দিন ও কামাল হোসেনসহ কয়েকজন স্থানীয় জানান, “গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে ঠান্ডা বাতাস বইছে। বাতাসে যেন বরফ ঝরছিল। সারারাতের পর সকাল থেকেই দিনভর ঠান্ডা বাতাসের কারণে বিপাকে পড়েছি আমরা।”
ভ্যান চালক মহির উদ্দিন ও দেলোয়ার জানান, “দিনটা মেঘে ঢাকা গেল। সূর্যের দেখা মেলেনি। তাপমাত্রা বাড়লেও ঠান্ডা বাতাসে কাবু করছে আমাদের। অনেকে ভ্যানে চড়ছে না ঠান্ডার ভয়ে। আমরাও ঠান্ডার কারণে ভ্যান ঠিকমত চালাতে পারছি না। হাতপা অবশ হয়ে আসছে। আয় রোজগার কমে গেছে।”
গ্রামের নারীরা বলেন, “দিনে যেমন তেমন, রাতে বরফ হয়ে উঠে বিছানা থেকে সব আসবাবপত্র। ঘরের ফ্লোর খালি পায়ে পা দেয়া যায় না। ঘরে রাখা পানি বরফ হয়ে থাকে। এসব পানি স্পর্শ করলে হাত যেন অবশ হয়ে যায়। আর আজ দিনভর সূর্য দেখা যায়নি। ঠান্ডা বাতাসে কাবুও করে তুলেছে আমাদের। সন্ধ্যার পর বাড়ির উঠোনে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণে চেষ্টা করি।”
জেলার প্রথম শ্রেণির তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ বলেন, মঙ্গলবারের তুলনায় বুধবার তাপমাত্রা বেশ খানিকটা বেড়েছে। বিকেল ৩টায় দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ২২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা বাড়লেও বাতাসের কারণে শীত অনুভূত হচ্ছে এ অঞ্চলে।”