নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
পর্তুগালের ৫০তম স্বাধীনতা দিবস আজ। ১৯৭৪ সালের ২৫ এপ্রিল পর্তুগিজ সাধারণ নাগরিকদের সমর্থনে এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ৪১ বছরের স্বৈরশাসনের অবসান ঘটিয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা লাভ করে।ঐতিহাসিক পর্তুগিজ জাতির এটি একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিন। এই দিনটিকে পর্তুগিজ ভাষায় দিয়া দো লিবারদাদ অর্থাৎ স্বাধীনতা দিবস এবং এই বিপ্লবটিকে দিয়া দো ক্রাবো বা কারনেশন বিপ্লবী হিসেবে অভিহিত করা হয়।
দীর্ঘদিনের স্বৈরশাসন জনগণের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি করে। ফলে পর্তুগালের সামরিক বাহিনীর সদস্য এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের নিয়ে গোপনে একটি সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলা হয়েছিল। দেশের জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং সম্মতির কারণে মাত্র ৭ দিনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে তৎকালীন স্বৈরশাসক সালাজারের উত্তরসূরি পুতুল প্রধানমন্ত্রী মার্সেলো কেটানোর ক্ষমতার অবসান ঘটে।
দিনটিকে ঘিরে রাজধানী লিসবনে সকাল নয়টায় ঐতিহাসিক প্রাসা দি কমার্সিওতে কুচকাওয়াজে পর্তুগিজ সশস্ত্র বাহিনীর সালাম গ্রহণ করবেন রাষ্ট্রপতি মার্সেলো রেবেলো ডি সজা। এরপর পার্লামেন্টে একটি বিশেষ অধিবেশনের আয়োজনে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং সব সংসদ সদস্যসহ ও বিশেষ অতিথিরা অংশ নেবেন। দিবসটির গুরুত্ব বিবেচনায় সংসদে আলোচনা এবং প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতি জাতির উদ্দেশ্যে দিকনির্দেশনা মূলক ভাষণ দেবেন। এরইমধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশের প্রধান পর্তুগিজ নাগরিকদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
বিকেল তিনটায় রাজধানীর এভিনিদা লিভারদাদ বা বাংলায় স্বাধীনতা সরণিতে প্রতি বছরের মতো একটি ঐতিহাসিক রেলি অনুষ্ঠিত হবে। এতে সেই বিপ্লবে অংশগ্রহণকারী সৈনিকরা নেতৃত্ব দেবেন। সাধারণ নাগরিকসহ বিভিন্ন স্তরের নেতা এবং বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা জাতীয় পতাকা এবং কারনেশন ফুল হাতে ধরে এই র্যালিতে অংশগ্রহণ করবেন। তাছাড়া সে সময়কালে ব্যবহৃত যানবাহনগুলো এই র্যালিতে যুক্ত থাকবে। লিসবন, বন্দর নগরী পর্তোসহ বিভিন্ন শহরে কনসার্ট সহকারে বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, স্বৈরশাসক আন্তোনিও দে অলিভেইরা সালাজার ১৯৩২ সালে পর্তুগিজ সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং ১৯৩৩ সালে নতুন সংবিধান রচনা করে একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী হন। ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত অসুস্থ হওয়ার আগে তিনি একাই ক্ষমতায় থাকেন। পরে তার অপারগতার কারণে উত্তরসূরি মার্সেলো কেটানোকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় বসান, যার অবসান হয় ১৯৭৪ সালের ২৫ এপ্রিল।