পশুর হাটের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে সংঘর্ষ, ইউপি চেয়ারম্যানকে কুপিয়ে জখম

প্রকাশিত: ৬:৩৬ অপরাহ্ণ, জুন ২০, ২০২৪

রাজবাড়ী প্রতিনিধি:

রাজবাড়ীতে কোরবানি উপলক্ষে অস্থায়ী পশুর হাটের টাকা ভাগাভাগিকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে দাদশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দোলোয়ার হোসেনসহ উভয়পক্ষের অন্তত ৭ জন গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।মঙ্গলবার (১৮ জুন) রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাজবাড়ী সদর উপজেলার দাদশী ইউনিয়নের সিংগা নিজাতপুর বাজার-সংলগ্ন চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এ হামলার বিচার ও হামলাকারিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে দাদশী সিংগা বাজার বন্ধ করে স্থানীয় সর্বস্তরের জনগণ ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করেছে।

রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইফতেখারুল আলম প্রধান বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ বিষয়ে চেয়ারমানের বাবা বাদি হয়ে রাজবাড়ী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দাদশী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার শেখ ও একই ইউনিয়নের ব্যবসায়ী বিএনপি নেতা আকবর খানের সহযোগীদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন- দাদশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার শেখ, তার ছেলে রুহান শেখ, ভাই হাসান শেখ ও বোন রোজিনা। তারা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ছাড়াও ব্যবসায়ী আকবর খানের বড় ভাই লুৎফর খান, ভাতিজা শাহরুখ খান ও শাওন খান গুরুতর আহত অবস্থায় গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

ঘটনা সূত্রে জানা যায়, কোরবানি উপলক্ষে অস্থায়ী পশুর হাটের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে গত মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে ইউপি চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার শেখ ও ব্যবসায়ী আকবর খানের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। পরে আকবর খান চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনে আসলে চেয়ারম্যানের ছোট ভাই হাসান শেখ ধারালো দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়।

চেয়ারম্যানের ভাই জাকির শেখ বলেন, অস্থায়ী পশুর হাট নিয়ে আকবর খান আমার ভাইকে ফোনে হত্যার হুমকি দেয়। পরে ২০-২৫ জন লোক নিয়ে বাড়িতে এসে হামলা চালায়। এ সময় দেলোয়ার শেখ, তার ছেলে রুহান শেখ, ভাই হাসান শেখ ও বোন রোজিনাকে কুপিয়ে জখম করা হয়।
দাদশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার শেখ বলেন, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করার জন্য আকবর খানের নেতৃত্বে কিছু মুখোশধারী সন্ত্রাসী আমার ও আমার পরিবারের ওপর হামলা চালিয়েছে। এতে আমি, আমার কলেজপড়ুয়া ছেলে, আমার ছোট ভাই-বোনসহ ৭-৮ জন আহত হয়। মূলত আকবর খানের ছোট ভাই চেয়ারম্যান নির্বাচন করবে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করার জন্য আমার ওপর পূর্বপরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছে। আমি এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগের প্রস্তুতি নিচ্ছি।

ব্যবসায়ী আকবর খান বলেন, অস্থায়ী পশুর হাটে রোদের মধ্যে যারা কষ্ট করেছে তাদের টাকা না দিয়ে চেয়ারম্যান একাই সব আত্মসাৎ করে। এই কথা ফোনে চেয়ারম্যানকে বলায় সে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে। পরে আমি বাজারে আসলে তার ভাইসহ ৫০-৬০ জন আমার ওপর হামলা চালায়। এ সময় সদর উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান নাহিদুল ইসলাম রাজু আমাকে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে আসে। এ সময় আমার বড় ভাই লুৎফর খান, ভাতিজা শাহরুখ খান ও শাওন খানকে কুপিয়ে জখম করে তারা।

তিনি আরও বলেন, বুধবার (১৯ জুন) সকাল ১০টার পরে আমার ভাবি ছেলে-মেয়ে নিয়ে রাজবাড়ী শহর থেকে গ্রামের বাড়ি আসার পথে চেয়ারম্যানের লোকজন তাদের গাড়িতে হামলা করেছে।

রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে দাদশীর চেয়ারম্যানসহ ৭ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রত্যেকের শরীরে জখম রয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য চেয়ারম্যানসহ ৪ জনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।