আন্তর্জাতিক ডেস্ক রিপোর্টঃ
ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং পাকিস্তানকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ভারতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানোর চেষ্টা করে কেউ সীমান্ত পেরিয়ে পালালে তাকে পাকিস্তানে ঢুকে মেরে আসবে ভারত। সিএনএন নিউজ নেটওয়ার্ক ১৮ কে শুক্রবার দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রাজনাথ এই হুঁশিয়ারি দেন। খবর রয়টার্সের।
সম্প্রতি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সাল থেকে ভারত সরকার পাকিস্তানে প্রায় ২০ জনকে হত্যা করেছে। বিদেশের মাটিতে বাস করা সন্ত্রাসীদের নির্মূল করার বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এমন অভিযান চালাচ্ছে তারা। এই প্রতিবেদনের বিষয়ে সিএনএন নিউজ ১৮ জানতে চাইলে রাজনাথ সিং বলেন, “তারা (সন্ত্রাসী) যদি পাকিস্তানে পালিয়ে যায়, আমরা পাকিস্তানে ঢুকে তাদের মারব।”
তবে দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন সম্পর্কে মন্তব্য চেয়ে রয়টার্সের পক্ষ ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কোনো সাড়া দেয়নি। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ও এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। জঙ্গিদের আশ্রয় দেওয়ার কথা অস্বীকার করে আসছে পাকিস্তান।ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন, “ভারত সবসময় প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ভাল সম্পর্ক বজায় রাখতে চায়… কিন্তু যদি কেউ ভারতকে বার বার রক্তচক্ষু দেখায়, ভারতে আসে এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে,তাহলে আমরা তাদেরকে ছেড়ে দেব না।”
২০১৯ সালে কাশ্মিরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি গাড়ির বহরে বোমা হামলার পর থেকে দুই দেশের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। ওই বছর পুলওয়ামা হামলার পর জনসভা থেকে রাজনাথের মতোই ঘরে ঢুকে মেরে আসার হুমকি দিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।পুলওয়ামা হামলার কয়েকদিনের মধ্যেই পাকিস্তানের বালাকোটে বিমান হামলা চালিয়েছিল ভারত। সেই হামলা জঙ্গি ঘাঁটিতে চালানো হয়েছিল বলে দাবি দিল্লির।
চলতি বছরের শুরুতে পাকিস্তান বলেছিল, তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য প্রমাণ রয়েছে যে, পাকিস্তানি ভূখণ্ডে ভারত দুই নাগরিককে হত্যা করেছে। তবে ভারত এ অভিযোগকে মিথ্যা ও বিদ্বেষপূর্ণ প্রচারণা আখ্যা দিয়েছে।কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে ভারত হত্যা বা হত্যার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ ওঠার কয়েক মাস পর দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনটি প্রকাশ হয়।
গত বছর সেপ্টেম্বরে কানাডা বলেছিল, ওই বছর জুনে এক শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাকে গুলি করে হত্যায় ভারতের যোগসূত্র থাকার বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে। ভারত এমন অভিযোগ অযৌক্তিক এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আখ্যা দেয়। এ নিয়ে দুই দেশের সম্পর্কের অবনতি হয়েছিল।তবে জানুয়ারিতে কানাডার এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, বিষয়টি নিয়ে ভারত সহযোগিতা করছে এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নতি হচ্ছে।
আবার গতবছর নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রও বলেছিল, তাদের মাটিতে একজন শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাকে হত্যার চেষ্টা নস্যাৎ করেছে তারা। এ ঘটনায় জড়িত যে ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, সেই ব্যক্তি এই হত্যা পরিকল্পনা সমন্বয় করতে ভারতের সঙ্গে কাজ করেছিল।ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এ ঘটনার বিষয়ে কোনো তথ্য পেলে ভারত তা তদন্ত করে দেখবে বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন।