সাবেক এপিএস মোয়াজ্জেমের বিষয়ে দুদককে তদন্তের অনুরোধ করলেন উপদেষ্টা আসিফ

নিজেস্ব প্রতিবেদক:
নিজের সাবেক সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে ওঠা নানা অভিযোগের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) তদন্ত করার অনুরোধ জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। তিনি বলেছেন, যেহেতু এখন তিনি (মোয়াজ্জেম) মন্ত্রণালয়ে কর্মরত নন, সুতরাং মন্ত্রণালয় পর্যায়ে এটা তদন্ত করার সুযোগ নেই। তিনি একজন স্বাধীন ব্যক্তিসত্তা। সেই জায়গা থেকে আমরা দুদককে অনুরোধ করেছি যে আপনারা এটা তদন্ত করুন।
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর হেয়ার রোডে নিজের সরকারি বাসভবনে একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদের। অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ৮ আগস্ট অন্তর্র্বতী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন তিনি। ১৪ আগস্ট একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোয়াজ্জেম হোসেনকে নিজের এপিএস হিসেবে নিয়োগ দেন আসিফ মাহমুদ। ২১ এপ্রিল মোয়াজ্জেমকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা জানানো হয়। অবশ্য পরদিন সংশোধিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পদত্যাগের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এর আগে ও পরে মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলেছেন কেউ কেউ।
আসিফ মাহমুদকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, মোয়াজ্জেম হোসেনকে নিয়ে আলোচনা চলছে। প্রথম প্রজ্ঞাপনে লেখা হয়েছিল যে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। পরে শোনা গেল, তিনি পদত্যাগ করেছেন। আসলে বিষয়টি কী? এই প্রশ্নের জবাবে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘সংশোধিত প্রজ্ঞাপন এসেছে। পদত্যাগপত্রের কপিটাও হয়তো আপনারা পেয়েছেন। ২৫ মার্চ সম্ভবত পদত্যাগপত্রটা আমাদের মন্ত্রণালয়ে জমা হয়। ঈদের ছুটির পরে পদত্যাগের আবেদনটা গ্রহণ করি। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে অব্যাহতির কথাটা লেখা ছিল। সংশোধিত প্রজ্ঞাপন ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে। সেখানে লেখা আছে যে পদত্যাগের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অব্যাহতি। এখানে একটা “মিসকমিউনিকেশন” হয়েছিল। মোয়াজ্জেমের যখন নিয়োগ হয়, তখনই তিনি আমাকে বলেছিলেন স্থায়ী চাকরির সুযোগ এলে তিনি এই চাকরি (এপিএস) ছেড়ে দেবেন। তার ব্যাংকে চাকরির ভাইভা (মৌখিক পরীক্ষা) এগিয়ে আসছে। বিসিএসেরও লিখিত পরীক্ষা সামনে। সেই জায়গা থেকে মোয়াজ্জেম পদত্যাগের আবেদন করেন এবং আমি তা গ্রহণ করি।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে তদবির, বদলি–বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ আসছে। আপনি কি মনে করেন, এর একটা স্বাধীন তদন্ত হওয়া উচিত? এই প্রশ্নের জবাবে আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বলেন, ‘তদন্ত হওয়া উচিত এবং তদন্তের জন্য ইতিমধ্যেই আমরা দুদককে (দুর্নীতি দমন কমিশন) বলেছি। যেহেতু এখন তিনি মন্ত্রণালয়ে কর্মরত নন, সুতরাং মন্ত্রণালয় পর্যায়ে এটা তদন্ত করার সুযোগ নেই। তিনি একজন স্বাধীন ব্যক্তিসত্তা। সেই জায়গা থেকে আমরা দুদককে অনুরোধ করেছি যে আপনারা এটা তদন্ত করুন।’
তার মন্ত্রণালয় থেকেও মোয়াজ্জেমের বিষয়ে সাধারণ মানুষের কাছে অভিযোগ চাওয়া হয়েছিল বলে জানান আসিফ মাহমুদ। তিনি বলেন, তবে বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ আসলে আমরা পাইনি।…দুদক স্বাধীন সংস্থা। আমরা অনুরোধ করেছি, তারা এটা তদন্ত করুক। শুধু এটা নয়, স্বাস্থ্য উপদেষ্টার একান্ত সচিবের ব্যাপারেও আমরা তদন্ত করতে বলেছি। ২১ এপ্রিল মোয়াজ্জেম হোসেনের সঙ্গে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মুহাম্মদ তুহিন ফারাবীকেও দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।