সিলেট প্রতিনিধি:
পাথর উত্তোলন বন্ধ, জাফলং ইসিএ বাস্তবায়ন ও পাথর ভাঙার কল নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)। বুধবার সিলেটের জেলা প্রশাসক বরাবর এক স্মারকলিপিতে এ দাবি জানানো হয়।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, ২০০৫ সাল থেকে যান্ত্রিকভাবে পাথর উত্তোলনের ফলে সিলেটের পিয়াইন, ডাউকী, ধলাই, রাংপানি নদী ও লোভাছড়া তাদের সৌন্দর্য হারিয়েছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পর্যটনশিল্প। বেপরোয়া পাথর উত্তোলনে ২০০৫ থেকে ১৩ ডিসেম্বর ২০২১ সাল পর্যন্ত ১০৬ জন শ্রমিক নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ৩৮ জন। এ ছাড়া অনিয়মতান্ত্রিক পাথর উত্তোলনের ফলে ভূমিধস, নদীতীরে ভাঙন, নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হওয়া, কৃষিজমি বিলুপ্ত হওয়াসহ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ব্যাপকভাবে বিঘ্নিত হয়েছে। পাথর উত্তোলন ও পাথরবাহী গাড়ি চলাচলের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা, ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উচ্চ আদালতের রায় এবং সরকারের সময়োপযোগী সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে খনিজসম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো ২০২০ সালের ৮ জুন সরকারিভাবে তালিকাভুক্ত ৮ পাথর কোয়ারির ইজারা স্থগিত এবং পাথর উত্তোলন বন্ধের নির্দেশনার পর থেকে নদী, ছড়া ও প্রকৃতিতে প্রাণ ফিরতে শুরু করে।
অথচ গত ৫ আগস্ট থেকে পাথর উত্তোলনকারীরা উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা তোয়াক্কা না করে পাথর তুলছে। তারা নতুন করে পাথর উত্তোলনের অনুমতি প্রদানে সরকারের ওপর চাপও সৃষ্টি করছে। অপাথর কোয়ারিগুলোকে বিলুপ্ত ঘোষণা করে প্রাকৃতিক সম্পদ এবং সৌন্দর্য রক্ষা করতে পরিবেশ বিধ্বংসী পাথর উত্তোলন থেকে এলাকাগুলোকে রক্ষার দাবি জানানো হয়।
স্মারকলিপিতে কোনো অবৈধ চাপের মুখে নতিস্বীকার না করে আগামী প্রজন্মের জন্য যাতে পিয়াইন, ডাউকী, ধলাই, রাংপানি নদী, বিছনাকান্দি, উৎমাছড়া, লোভাছড়া ও ভোলাগঞ্জ সুরক্ষিত থাকে– সেই দাবি জানানো হয়।