পাবনা প্রতিনিধি:
পাবনায় কবরস্থান থেকে কঙ্কাল চুরির হিড়িক পড়েছে। একের পর এক কঙ্কাল চুরির ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। রোববার (৯ জুন) দিবাগত রাতে সাঁথিয়া উপজেলার রাজাপুর কবরস্থান থেকে পাঁচটি কঙ্কাল চুরি করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। এর দুই দিন আগে পার্শ্ববর্তী দুই কিলোমিটার দূরের সুজানগর উপজেলার দুলাই ইউনিয়নের চিনাখড়া কবরস্থান থেকে পাঁচটি কঙ্কাল চুরি হয়। এর মাস খানেক আগে আমিনপুর কবরস্থান থেকে ১৬টি কঙ্কাল চুরির ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, সাঁথিয়া উপজেলার ক্ষেতুপাড়া ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের মাঠের মধ্যে একটি গ্রামীণ কবরস্থান রয়েছে। সোমবার (১০ জুন) সকালে ওই কবরস্থানের পুরাতন কয়েকটি কবর এলোমেলো গর্ত করা দেখতে পান এলাকাবাসী। পরে তারা কবরস্থানের ভেতরে দেখতে পান কঙ্কাল নেই। দুর্বৃত্তরা দুই নারী, এক পুরুষ ও দুই শিশুর কঙ্কল চুরি করে নিয়ে গেছে। এ ঘটনা জানাজানি হলে এলাকাবাসী নিজেদের স্বজনদের কবর ঠিক আছে কিনা তা দেখার জন্য কবরস্থানে ভিড় করেন।
রাজাপুর গ্রামের শহীদ আলী বলেন, আমার ছেলে গত বছর মারা গেছে। কিছুক্ষণ আগে খবর পেয়ে এসে দেখি লাশটা নাই। কবরে শুধু কাফনের কাপড় রয়েছে। প্রশাসনের কাছে আমার দাবি আপনারা আমার ছেলের মরদেহটা উদ্ধার করে দেন।
কবরস্থানে আগত সালমান হোসেন বলেন, গতকাল ঢাকা থেকে ছুটিতে বাড়ি আসছি। সকালে ঘুম থেকে উঠে শুনি আমাদের কবরস্থানের কয়েকটি কঙ্কাল চুরি হয়ে গেছে। এখন এমন সময় চলে আসছে বাঁচলেও নিরাপত্তা নেই, মরলেও নিরাপত্তা নেই। এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা কারা ঘটাচ্ছে বিষয়টি প্রশাসনকে বের করতে হবে।
রাজাপুর গ্রামের জালাল উদ্দিন জানান, সোমবার সকালে কবরস্থানের পাশে তিনি তিল শুকাচ্ছিলেন। এ সময় হঠাৎ তার নজরে আসে একটি কবরের বাঁশের চাতাল উঁচু হয়ে আছে। তিনি অন্যদের সঙ্গে নিয়ে কবরস্থানে গিয়ে দেখেন কবরটির মাটি সরিয়ে গর্ত করা। পরে তারা মাটি সরিয়ে দেখেন কবরের ভেতরে কোনো কঙ্কাল নেই। এভাবে একে একে তিনটি কবর থেকে পাঁচটির মতো কঙ্কাল চুরি করে নিয়ে গেছে। রাতের যে কোনো সময় এ কঙ্কালগুলো চুরি করা হয়েছে।
কঙ্কাল চুরির বিষয়ে ক্ষেতুপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনসুর আলম পিন্চু বলেন, কবরস্থান থেকে মরদেহের কঙ্কাল চুরির খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অবহিত করেছি। আমি নিজেও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি।
সাঁথিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, কবর থেকে কঙ্কাল চুরি এটা খুবই অপ্রত্যাশিত ঘটনা। কবরস্থানে পাহারাদার রাখাও সম্ভব নয়। তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পাবনার জেলা প্রশাসক মুহা. আসাদুজ্জামান বলেন, এ ঘটনা খুবই দুঃখজনক। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।