পিএসসি’র সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিকও সুনামগঞ্জ-৪ থেকে আ. লীগের মনোনয়ন পেলেন

প্রকাশিত: ৬:৫১ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৬, ২০২৩

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নতুন প্রার্থীদের ওপর আস্থা রাখছে আওয়ামী লীগ। এবারের মনোনয়নে বেশকিছু চমক রয়েছে। রাজনীতির মাঠে সক্রিয় না হলেও আওয়ামী মতাদর্শে দৃঢ় বিশ্বাসী, এমন অনেককেই বেছে নিয়েছে দলটি। এবার সুনামগঞ্জ-৪ (২২৭, সদর ও বিশ্বম্ভরপুর) আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হওয়ার মনোনয়ন পেয়েছেন ড. মোহাম্মদ সাদিক। তিনি সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) সাবেক চেয়ারম্যান ও সরকারের সাবেক সচিব।
রবিবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে চূড়ান্ত হওয়া প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এসময় জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকা ২২৭ (সুনামগঞ্জ-৪) এর সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী হিসেবে মোহাম্মদ সাদিকের নাম ঘোষণা করেন তিনি।
আওয়ামী লীগের একটি সূত্র বলছে, দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনকে উৎসবমুখর করতে অনেক পুরনো মুখের পরিবর্তে নতুন মুখ বেছে নিয়েছেন। এক্ষেত্রে তাদের সততা, আনুগত্য ও গ্রহণযোগ্যতা বিবেচনা করা হয়েছে। বয়স্ক অনেককে বাদ দেওয়া হয়েছে।

এর আগে রবিবার (২৬ নভেম্বর) সকালে মনোনয়নপ্রত্যাশী প্রার্থীদের গণভবনে ডেকে কথা বলেন শেখ হাসিনা। সেখানে তিনি নির্বাচন-সংক্রান্ত নানা নির্দেশনা দেন।

সুনামগঞ্জ জেলার ৫টি আসনের ৩টিতেই নতুন প্রার্থীদের মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। পুরনোদের মধ্যে সুনামগঞ্জ-৫ আসন থেকে চারবারের এমপি মুহিবুর রহমান মানিক এবং সুনামগঞ্জ-৩ আসন থেকে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানকে রাখা হয়েছে। এছাড়া নতুনদের মধ্যে রয়েছেন সুনামগঞ্জ-১ আসনে রনজিৎ সরকার, সুনামগঞ্জ-২ আসনে আবদুল্লাহ আল মাহমুদ চৌধুরী এবং সুনামগঞ্জ-৪ আসনে মোহাম্মদ সাদিক।

নৌকার নতুন প্রার্থী হিসেবে স্থান পাওয়া ড. মোহাম্মদ সাদিক ১৯৫৫ সালে সুনামগঞ্জ শহরতলির ধারারগাঁও গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের ১৯৮২ ব্যাচের কর্মকর্তা হিসেবে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে বিএ ও এমএ ডিগ্রি ছাড়াও সিলেটের নাগরী লিপির ওপর গবেষণার জন্য ভারতের আসাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন তিনি। সিভিল সার্ভিসের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে মোহাম্মদ সাদিক বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি শিক্ষা সচিব ও নির্বাচন কমিশন সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব, বিয়াম ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক, সিভিল সার্ভিস প্রশাসন একাডেমির ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নজরুল ইন্সটিটিউটের সচিব, সুইডেনে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার কিছুদিন পর সরকার তাঁকে কর্মকমিশনের সদস্য হিসেবে নিয়োগ দেয়। পরে ২০১৬ সালে মে থেকে ২০১৮ সালের মে পর্যন্ত সাংবিধানিক সংস্থাটির চেয়ারম্যান হিসেবেও সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। এসময় তিনি পরিক্ষাপদ্ধতির নানা সংস্কারের জন্য ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হন ও চাকরিপ্রার্থী তরুণদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।

আমলা পরিচয় ছাড়াও মোহাম্মদ সাদিক একজন কবি ও গবেষক হিসেবে সমাদৃত। ২০১৭ সালে কবিতায় পেয়েছেন বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার। এছাড়া জাতীয় কবিতা পরিষদ, এশিয়াটিক সোসাইটি, বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব সহ বিভিন্ন সংগঠনে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও আজীবন সদস্য হিসেবে সম্পৃক্ততা রয়েছে তাঁর। ড. সাদিকের সহধর্মীণি জেসমিন আরা বেগম একজন অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ। বর্তমানে তিনি মানবাধিকার কমিশনের সদস্য হিসেবে কাজ করছেন।